আহমদিয়া সম্প্রদায়ের ওপর হামলা

পঞ্চগড়ে ২০ মামলায় গ্রেপ্তার আরও ৬

আহমদিয়া
গত ৩ মার্চ (শুক্রবার) দুপুরে পঞ্চগড় শহরে বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ। ছবি: সংগৃহীত

পঞ্চগড়ের আহমদিয়া সম্প্রদায়ের (কাদিয়ানি) সালানা জলসাকে কেন্দ্র করে সংঘাত, অগ্নিসংযোগ ও লুটপাটের ঘটনায় নতুন করে ৬ জনকে গ্রেপ্তার করেছে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।

গত রাত থেকে আজ রোববার সকাল পর্যন্ত অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এই নিয়ে মোট ১৮৭ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

সংঘাতের পরে পঞ্চগড় থানায় ১৩টি ও বোদা থানায় ৩টি মামলা দায়ের হয়েছিল। জেলা পুলিশ সুপার এসএম সিরাজুল ইসলাম হুদা জানিয়েছেন, ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের পক্ষ থেকে নতুন করে সদর থানায় দুটি এবং বোদা থানায় দুটি মামলা দায়ের হয়েছে।

তিনি বলেন, 'রাজনৈতিক পরিচয় দেখে না, আমরা সুনির্দিষ্ট তথ্য ও সিসিটিভি ফুটেজ দেখে আমরা গ্রেপ্তার করছি।'

'এই পুরো ঘটনাটি ছিল পূর্ব পরিকল্পিত। প্রশিক্ষিত একটি দল আহমদিয়া সম্প্রদায়ের ওপর হামলা চালায়। তাদের হাতে যেসব অস্ত্র ছিল তার আঘাতে মানুষের মৃত্যু হতে পারে,' বলেন সিরাজুল ইসলাম।

উল্লখ্য, পঞ্চগড় শহরের উপকণ্ঠে আহম্মদনগর এলাকায় আহমদিয়া জামাতের ৩ দিনব্যাপী সালানা জলসা বন্ধের দাবিতে গত ৩ মার্চ শুক্রবার জুমার নামাজের পরে পঞ্চগড় শহরের বিভিন্ন মসজিদ থেকে মিছিল নিয়ে বিক্ষোভকারীরা শহরের চৌরঙ্গী মোড়ে জড়ো হন এবং মিছিল নিয়ে করতোয়া সেতু দিয়ে জলসা অভিমুখে যাত্রা শুরু করেন। এতে বাধা দিলে পুলিশের সঙ্গে তাদের সংঘর্ষ শুরু হয়। এক পর্যায়ে বিক্ষোভকারীরা ছত্রভঙ্গ হয়ে শহরের বিভিন্ন অলিগলিতে ঢুকে পড়েন।

একদল বিক্ষোভকারী আহম্মদনগর এলাকায় গিয়ে আহমদিয়া সম্প্রদায়ের শতাধিক বাড়িতে অগ্নিসংযোগ করে ও ভাঙচুর চালায়। সন্ধ্যা পর্যন্ত এই অবস্থা চলে। এ ঘটনায় ২ তরুণ নিহত ও শতাধিক মানুষ আহত হন। সংঘর্ষের এক পর্যায়ে পুলিশ, বিজিবি ও র‍্যাব সদস্যরা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে টিয়ার শেল ও রাবার বুলেট ছোড়েন। পরে প্রশাসনের হস্তক্ষেপে আহমদিয়াদের জলসা বন্ধ ঘোষণা করা হয়।

শনিবার সারা দিন পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে থাকলেও রাত সাড়ে ৮টার দিকে মানুষ আবারো রাস্তায় নেমে আসে এবং দু'ভাগ হয়ে আহম্মদনগর ও তুলারডাঙ্গা এলাকার দিকে যেতে থাকে। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর তৎপরতায় গভীর রাতে পরিস্থিতি শান্ত হয়।

এর আগে গত ২ মার্চ জলসা বন্ধের দাবিতে জেলা প্রশাসক বরাবর ইসলামী আন্দোলনসহ সমমনা কয়েকটি সংগঠন স্মারকলিপি দেয়। ওই দিন সকাল থেকে প্রায় ৫ ঘণ্টা শহরের চৌরঙ্গী মোড়ে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন সংগঠনের নেতাকর্মীরা।

Comments

The Daily Star  | English

Hasina can’t evade responsibility for Khaleda Zia’s death: Nazrul

In 2018, Khaleda walked into jail, but came out seriously ill, he says

6h ago