বগুড়ায় ওসির বিরুদ্ধে মামলা আপসে চাপ ও ঘুষ চাওয়ার অভিযোগ

স্টার অনলাইন গ্রাফিক্স
স্টার অনলাইন গ্রাফিক্স

বগুড়ার ধুনট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার (ওসি) বিরুদ্ধে এক নারীকে মামলা আপসের জন্য চাপ দেওয়া ও ঘুষ চাওয়ার অভিযোগ এসেছে। 

এসব অভিযোগ আমলে নিয়ে স্বপ্রণোদিত হয়ে বিষয়টি আরও তদন্তের জন্য ধুনট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে আদেশ দিয়েছে ধুনট আমলী আদালত।

আজ দুপুরে এই আদেশ দেন বগুড়া ধুনট আমলী আদালতের বিচারক জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. লোকমান হাকিম।

ধুনট আমলী আদালতের বেঞ্চ সহকারী মো. কামরুজ্জামান দ্য ডেইলি স্টারকে বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

তিনি জানান, সরেজমিনে ঘটনা তদন্ত করে আগামী ৩০ দিনের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন বিচারকের কাছে জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।  

আদালতের পর্যবেক্ষণে উল্লেখ করা হয়, একজন সাংবাদিকের ফেসবুক প্রোফাইলে ভুক্তভোগীর একটি ভিডিও দেখে ফৌজদারি কার্যবিধি, ১৮৯৮ এর ধারা ১৯০(১)(সি) অনুযায়ী বিচারক এই বিষয়ে স্বপ্রনোদিত হয়ে তদন্তের নির্দেশ দেন।

ভিডিওতে ধুনট উপজেলার বেলকুচি গ্রামের মোছা. তাসলিমা খাতুন নামের এক নারী ধুনট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. সাইদুল আলমের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনেন। তিনি জানান, ওসি সাইদুল আদালতে করা মামলাটি আপসের মাধ্যমে নিষ্পত্তির জন্য চাপ দেন।

পাশাপাশি পুলিশের ওই কর্মকর্তা মামলা আপসের খরচ বাবদ তার কাছে ঘুষ চেয়েছেন বলেও দাবি করেন তাসলিমা।

পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে তাসলিমার অপর অভিযোগ, তিনি ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধারকৃত সিএনজি চালিত অটো-রিক্সাটি টাকার বিনিময়ে অভিযুক্তের কাছে হস্তান্তর করেছেন

এসব তথ্য আদালতের পর্যবেক্ষণে উল্লেখ করা হয়েছে।

এ বিষয়ে তাসলিমা খাতুনের (৩২) সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'আমার স্বামী একজন নেশাগ্রস্থ ব্যক্তি। প্রায় এক বছর আগে আমি আমার দুই ছেলে সন্তানকে নিয়ে বাবার বাড়ি চলে আসি। এর পর বগুড়া নারী ও শিশু নির্যাতন ট্রাইব্যুনাল ২ এ সন্তানের ভরণপোষণ দাবিতে মামলা করি। এর পর থেকে আমার স্বামী আমাকে এক লাখ টাকা নিয়ে তালাক দিতে বলে। তবে আমি এতে রাজি হইনি, কারণ বিয়েতে দেনমোহর ছিল আড়াই লাখ টাকা।'

'তিন মাস আগে একদিন আমার বাবার বাড়িতে সিএনজি নিয়ে এসে সন্তানদের নিয়ে যেতে চাইলে আমি বাধা দেই। এরপর সে আমাকে মারধর করার চেষ্টা করে। এ সময় গ্রামের মানুষ ছুটে আসলে সে পালিয়ে যায়।'

তাসলিমা জানান, পরবর্তীতে মারধরের অভিযোগ নিয়ে ধুনট থানায় গেলে ওসি মামলা নিয়ে আপোষের দিন ধার্য করে এবং আমার স্বামীর সিএনজিটি ঘটনাস্থল থেকে থানায় নিয়ে আসে।

তবে নির্ধারিত দিনে থানায় গিয়ে তিনি জানতে পারেন, টাকার বিনিময়ে সিএনজিটি তার স্বামীকে ফিরিয়ে দিয়েছেন ওই ওসি। 

'তারপর থেকে থানায় গেলে ওসি এক লাখ টাকার বিনিময়ে কোর্ট থেকে অভিযোগ তুলে নিতে বলে এবং আপোষ-নিষ্পত্তি করে দেওয়ার বিনিময়ে কিছু খরচ চায়', যোগ করেন তাসলিমা খাতুন।

এ বিষয়টি সম্পর্কে জানতে চাইলে বগুড়া ধুনট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা খৃষ্টফার হিমেল রিছিল দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'আমি এখনও আনুষ্ঠানিকভাবে এ ধরণের কোনো নোটিশ বা আদেশ পাইনি। পেলে সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেব।'

ধুনট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. সাইদুল আলম তার বিরুদ্ধে আনা এসব অভিযোগ অস্বীকার করেন।

তিনি দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'তাসলিমা খাতুন ও তার স্বামীর মধ্যে গণ্ডগোল চলছিল। দীর্ঘদিন ধরে তাসলিমা তার দুই সন্তান নিয়ে ধুনটে বাবা-মা'র কাছে থাকেন। প্রায় তিন মাস আগে তার সিএনজি চালক স্বামী সন্তানদের সঙ্গে দেখা করতে আসে। তখন মারামারির ঘটনা ঘটলে সিএনজি চালিত অটো রিক্সা রেখে পালিয়ে যায় স্বামী মঞ্জুর।'

'এর পরে সিএনজি থানায় আনা হয়। পরবর্তীতে মঞ্জুর তার কাগজ পত্র দেখিয়ে সিএনজি নিয়ে যায়। পরে তাসলিমা ভরণপোষণের জন্য আমার কাছে মামলা করতে আসলে আমি বলি ভরণপোষণের মামলা তো সরাসরি আদালতে করতে হবে',  বলেন ওসি।

'মামলা আপোষ করার জন্য চাপ দেওয়া আপোষ করে দেওয়ার জন্য আমি কোনো টাকা-পয়সা চাইনি', দাবি করেন ওসি সাইদুল ইসলাম।

Comments

The Daily Star  | English

ACC to get power to probe corruption by Bangladeshis anywhere, foreigners in Bangladesh

The Anti-Corruption Commission (ACC) is set to receive sweeping new powers under a proposed ordinance that will allow it to investigate corruption by Bangladeshi citizens, both at home and abroad, as well as by foreign nationals residing in the country. .The draft Anti-Corruption Commissio

23m ago