গাড়িতে ঢিল দেওয়ায় ‘মানসিক ভারসাম্যহীন’ যুবককে পিটিয়ে হত্যা

নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জে গাড়িতে ঢিল মারায় এক যুবককে আটকে পিটিয়ে হত্যার ঘটনা ঘটেছে। আজ রোববার ভোরে আদমজী এলাকায় ক্রাউন সিমেন্টের রেডিমিক্স কংক্রিট কারখানার ভেতরেই তার মৃত্যু হয় বলে জানিয়েছে পুলিশ।
মৃত সাজ্জাদ হোসেন (৩০) আদমজীর নয়াপাড়া এলাকার বাসিন্দা ছিলেন।
নারায়ণগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. হাসিনুজ্জামান সাংবাদিকদের জানান, রাত আনুমানিক সাড়ে ৩টার দিকে ক্রাউন সিমেন্টের একটি গাড়িতে ঢিল মারেন সাজ্জাদ। এতে গাড়ির গ্লাস ভেঙে গেলে ড্রাইভার, হেলপার, রাতের শিফটের কারখানায় কর্মরত লোকজন তাকে ধরে কারখানার ভেতর নিয়ে যায় এবং তাকে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করে। নির্যাতনের এক পর্যায়ে ভোর সাড়ে ৬টার দিকে সাজ্জাদ মারা যান।
সাজ্জাদকে 'মানসিক ভারসাম্যহীন' দাবি করে তার মামা আল আমিন হোসেন দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'সাজ্জাদের মানসিক সমস্যা ছিল। সে প্রায় সময় রাতের বেলা রাস্তায় ঘুরে বেড়াত। এলাকার সবাই এটা জানে। রাতে ঈদগাহের সামনের রাস্তায় ক্রাউন সিমেন্টের গাড়িতে ঢিল দেয় সাজ্জাদ। এ কারণে তাকে ধরে নিয়ে কারখানার ভেতরে পিটিয়েছে।'
'সাজ্জাদকে তারা নাকি ছিনতাইকারী বলে কারখানার ভেতরে নিয়ে পিটিয়েছে। কিন্তু এলাকার সবাই জানে যে সে পাগল, নিজের মনে ঘুইরা বেড়ায়,' বলেন তিনি।
মরদেহ উদ্ধারের আগ পর্যন্ত সাজ্জাদকে মারধরের কথা জানতেন না পরিবার।
মরদেহ উদ্ধারের পর দুপুর কারখানার অন্তত ১০ কর্মীকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করে পুলিশ।
ঘটনা সম্পর্কে কারখানার কর্মকর্তাদের মন্তব্য জানতে সেখানে গেলেও নিরাপত্তা প্রহরীরা প্রবেশ করতে দেননি।
বিকেল ৫টার দিকে ক্রাউন সিমেন্টের ওয়েবসাইটে যোগাযোগের জন্য দেওয়া নম্বরে ফোন করা হলে টেকনিক্যাল অপারেটর মিথুন বলেন, 'আমি হেড অফিসে টেকনিক্যাল সাপোর্টের জন্য আছি। আমি এ বিষয়ে জানি না। ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের আপনার কলের বিষয়টি জানানো হবে, তারা যোগাযোগ করবেন আপনার সঙ্গে।'
যদিও পরে কেউ আর যোগাযোগ করেননি। সাড়ে ৫টার দিকে ক্রাউন সিমেন্টের একজন সহকারী মহাব্যবস্থাপকের নম্বরে ফোন করা হলে তিনি কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।
জানতে চাইলে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার হাসিনুজ্জামান বলেন, 'ছিনতাইয়ের কোনো বিষয় আমরা পাইনি। এটি একটি হত্যাকাণ্ড, আমরা সেভাবেই তদন্ত করছি। গাড়ি চালক, সহযোগী, নিরাপত্তাকর্মীসহ ১০ জনকে আটক করেছি। তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। মামলা হলে পরবর্তী আইনগত প্রক্রিয়া নেওয়া হবে।'
Comments