ময়মনসিংহে দিপু দাস হত্যা: আরও ২ জন গ্রেপ্তার

ময়মনসিংহের ভালুকায় দিপু চন্দ্র দাসকে পিটিয়ে হত্যার পর মরদেহে আগুন দেওয়ার ঘটনায় আরও ২ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এ নিয়ে দিপু হত্যা মামলায় মোট গ্রেপ্তারের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল ২০ জনে।

গ্রেপ্তার দুজন হলেন নিবির ইসলাম অনিক (২০) ও মো. এরশাদ (২৭)।

ময়মনসিংহের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) আব্দুল্লাহ আল মামুন দ্য ডেইলি স্টারকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

পুলিশ জানায়, গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে গাজীপুরের টঙ্গীর চেরাগ আলী এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয় নিবিরকে। দিপুর মরদেহ গাছে ঝুলিয়ে আগুন দেওয়ার ঘটনায় তিনি নেতৃত্ব দেন বলে ভিডিও ফুটেজের মাধ্যমে শনাক্ত হন। ময়মনসিংহের ত্রিশাল উপজেলার ধানিখোলা গ্রামের নিবির পাইওনিয়ার নিটওয়্যারস (বিডি) লিমিটেডের একজন নিটিং অপারেটর ছিলেন।

নেত্রকোণার মোহনগঞ্জ উপজেলার এরশাদ পেশায় রাজমিস্ত্রি। আজ বুধবার ভোরে ভালুকার দুবাইলাপাড়া এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় তার কাছ থেকে নিহত দিপুর ব্যবহৃত একটি মোবাইল ফোনও উদ্ধার করেছে পুলিশ।

আজ বুধবার বিকেলে ৭ দিনের রিমান্ড আবেদনসহ অনিককে আদালতে হাজির করা হয়। তবে শুনানি না হওয়ায় তাকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে বলে জানান এএসপি মামুন।

ডেইলি স্টারকে তিনি বলেন, 'ঘটনার পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিও ও ছবিতে দেখা যায়, সাদা শার্ট পরা এক ব্যক্তি দড়ি দিয়ে দিপুর মরদেহ একটি গাছে টেনে তুলছেন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া এবং মোবাইল ফোনে ধারণ করা ভিডিও ফুটেজ বিশ্লেষণ করে তদন্ত দল নিবিরকে শনাক্ত করে।'  

এএসপি মামুন আরও বলেন, 'ঘটনার পর থেকেই তিনি কর্মস্থলে অনুপস্থিত ছিলেন। গত কয়েক দিনে নেত্রকোনা, ঢাকা ও গাজীপুরে অভিযান চালিয়ে অবশেষে টঙ্গী থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।'

এছাড়া প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে এরশাদ স্বীকার করেছেন যে তিনি ঘটনার সময় ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন, হত্যাকাণ্ডে সক্রিয়ভাবে অংশ নেন এবং পরে নিহতের মোবাইল ফোনটি নিজের কাছে রাখেন বলে জানান ওই কর্মকর্তা।

এর আগে গ্রেপ্তার হওয়া ১৮ আসামির মধ্যে ১২ জনের তিন দিনের এবং বাকি ৬ জনের দুই দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত। রিমান্ডে নেওয়া ১২ আসামির জিজ্ঞাসাবাদ এরই মধ্যে শেষ হয়েছে। তাদের মধ্যে ৫ জন আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন, যোগ করেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার।

তিনি বলেন, 'তাদের ৫ জন ফৌজদারি কার্যবিধির ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। তারা নিজেদের সম্পৃক্ততার কথা স্বীকার করেছেন এবং গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দিয়েছেন। ঘটনাটি অত্যন্ত সংবেদনশীল হওয়ায় আমরা এসব জবানবন্দি গভীরভাবে পর্যালোচনা করছি।"

গত ১৮ ডিসেম্বর রাত ৮টার দিকে ধর্ম নিয়ে কটূক্তি করার অভিযোগে কারখানার ভেতরে একদল শ্রমিক দিপুকে মারধর শুরু করেন। মারধরের একপর্যায়ে হামলাকারীরা দিপুকে কারখানার বাইরে নিয়ে যায়। সেখানে স্থানীয় লোকজনও তাদের সঙ্গে যোগ দেয় এবং পিটুনিতে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়। পরে হামলাকারীরা তার মরদেহে আগুন ধরিয়ে দেয়। এতে মরদেহ আংশিক পুড়ে যায়।

পরদিন নিহতের ভাই ভালুকা থানায় ১৪০–১৫০ জন অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিকে আসামি করে একটি মামলা দায়ের করেন।

তদন্তে নেমে এ ঘটনায় 'ধর্ম অবমাননা'র কোনো প্রত্যক্ষ প্রমাণ পাওয়া যায়নি বলে জানিয়েছিল র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব)।

Comments

The Daily Star  | English

Hasina can’t evade responsibility for Khaleda Zia’s death: Nazrul

In 2018, Khaleda walked into jail, but came out seriously ill, he says

5h ago