ময়মনসিংহে যুবককে পিটিয়ে হত্যা ও মরদেহ আগুন দেওয়ার ঘটনায় গ্রেপ্তার ১০
ময়মনসিংহের ভালুকায় ধর্ম নিয়ে কটূক্তির অভিযোগে দিপু চন্দ্র দাস (২৭) নামের এক সনাতন ধর্মাবলম্বী যুবককে পিটিয়ে হত্যার পর মরদেহে আগুন দেওয়ার ঘটনায় এ পর্যন্ত মোট ১০ জনকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব ও পুলিশ।
আজ শনিবার প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং এক বিবৃতিতে জানায়, বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে সাতজনকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব-১৪। গ্রেপ্তাররা হলেন—মো. লিমন সরকার, মো. তারেক হোসেন, মো. মানিক মিয়া, এরশাদ আলী, নিজুম উদ্দিন, আলমগীর হোসেন ও মো. মিরাজ হোসেন আকন।
এদিকে আজ ভোরে পৃথক অভিযানে এ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে আরও তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তারা হলেন—আজমল হাসান সাগির (২৬), মো. শাহীন মিয়া (১৯) ও মো. নাজমুল (২১)।
ময়মনসিংহের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) আব্দুল্লাহ আল মামুন দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, গ্রেপ্তার ১০ জনকে ভালুকা থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে। সেখানে তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।
নিহত দিপু ময়মনসিংহের তারাকান্দা উপজেলার মোকামিয়াকান্দা গ্রামের বাসিন্দা। তিনি ভালুকার পাইওনিয়ার নিটওয়্যারস নামে একটি পোশাক কারখানার কর্মী ছিলেন। তার তিন বছর বয়সী এক কন্যাসন্তান রয়েছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্র জানায়, গত বৃহস্পতিবার রাত ৮টার দিকে ধর্ম নিয়ে কটূক্তি করার অভিযোগে কারখানার ভেতরে একদল শ্রমিক দিপুকে মারধর শুরু করেন।
ময়মনসিংহের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জানান, মারধরের একপর্যায়ে হামলাকারীরা দিপুকে কারখানার বাইরে নিয়ে যায়। সেখানে স্থানীয় লোকজনও তাদের সঙ্গে যোগ দেয় এবং পিটুনিতে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়। পরে হামলাকারীরা তার মরদেহে আগুন ধরিয়ে দেয়। এতে মরদেহ আংশিক পুড়ে যায়। পুলিশ পরে মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ মর্গে পাঠায়।
গতকাল শুক্রবার বিকেলে মরদেহ তার গ্রামের বাড়িতে পৌঁছায় বলে জানিয়েছেন তারাকান্দা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তানবীর আহমেদ।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আবদুল্লাহ আল মামুন বলেন, 'বিভিন্ন মহল থেকে ধর্ম অবমাননার অভিযোগের কথা বলা হলেও এর সত্যতা এখনো যাচাই করা যায়নি। এ সংক্রান্ত কোনো অডিও বা ভিডিও প্রমাণ পাওয়া যায়নি।'
এ ঘটনায় গতকাল শুক্রবার নিহতের ভাই অপু চন্দ্র দাস বাদী হয়ে ১৪০-১৫০ জন অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তিকে আসামি করে ভালুকা থানায় একটি মামলা করেন। মামলার পরই আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী অভিযানে নামে।


Comments