ময়মনসিংহে দিপু দাস হত্যা: গ্রেপ্তার আরও ৬
ময়মনসিংহের ভালুকায় দিপু চন্দ্র দাসকে পিটিয়ে হত্যার পর মরদেহে আগুন দেওয়ার ঘটনায় আরও ৬ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
এ নিয়ে এখন পর্যন্ত মোট ১৮ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ ও র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)।
আজ বৃহস্পতিবার ভোরে গ্রেপ্তার হওয়া ব্যক্তিরা হলেন- তাকবির (২২), রুহুল আমিন (৪২), নূর আলম (৩৩), মো. শামীম মিয়া (২৮), সেলিম মিয়া (২২) ও মাসুম খালাসী (২২)।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ শেষে পাঁচ দিনের রিমান্ড চেয়ে তাদের ময়মনসিংহের একটি আদালতে হাজির করা হয়েছে বলে জানান সেখানকার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) আব্দুল্লাহ আল মামুন।
তিনি বলেন, 'গ্রেপ্তারকৃতরা কারখানার কর্মচারীদের উসকে দেওয়া, স্লোগান দিয়ে ঘটনাটি বাইরে ছড়িয়ে দেওয়া এবং দিপুকে পদত্যাগের জন্য চাপ সৃষ্টি করেছিল বলে অভিযোগ রয়েছে।'
দিপু হত্যাকাণ্ডের মামলাটি বর্তমানে গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) তদন্ত করছে এবং পুলিশ সুপারসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা তত্ত্বাবধান করছেন। এ হত্যাকাণ্ডে জড়িত অন্যদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত আছে।
এর আগে, গত শনিবার ও রোববার পৃথক অভিযানে মোট ১২ জনকে গ্রেপ্তার করেছিল পুলিশ ও র্যাব।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্র জানায়, গত বৃহস্পতিবার রাত ৮টার দিকে ধর্ম নিয়ে কটূক্তি করার অভিযোগে কারখানার ভেতরে একদল শ্রমিক দিপুকে মারধর শুরু করেন।
ময়মনসিংহের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জানান, মারধরের একপর্যায়ে হামলাকারীরা দিপুকে কারখানার বাইরে নিয়ে যায়। সেখানে স্থানীয় লোকজনও তাদের সঙ্গে যোগ দেয় এবং পিটুনিতে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়। পরে হামলাকারীরা তার মরদেহে আগুন ধরিয়ে দেয়। এতে মরদেহ আংশিক পুড়ে যায়। পুলিশ পরে মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ মর্গে পাঠায়।
গত শুক্রবার নিহতের ভাই অপু চন্দ্র দাস বাদী হয়ে ১৪০-১৫০ জন অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তিকে আসামি করে ভালুকা থানায় একটি মামলা করেন। মামলার পরই আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী অভিযানে নামে।
এ ঘটনায় 'ধর্ম অবমাননা'র কোনো প্রত্যক্ষ প্রমাণ পাওয়া যায়নি বলে জানিয়েছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)।
ময়মনসিংহ র্যাব-১৪ কোম্পানি কমান্ডার মো. সামসুজ্জামান জানান, নিহত ব্যক্তি ধর্ম অবমাননা করে ফেসবুকে কিছু লিখেছেন, এমন তথ্য পাওয়া যায়নি। স্থানীয় লোকজন ও শ্রমিকদের সঙ্গে কথা বলেও এমন কিছু পাওয়া যায়নি।
তিনি বলেন, 'সবাই এখন বলছেন, তারা তাকে (নিহত শ্রমিক) এমন কিছু বলতে নিজেরা শোনেননি। কেউ নিজে শুনেছেন বা দেখেছেন (ধর্ম অবমাননার বিষয়ে) এমন কাউকে পাওয়া যায়নি।'


Comments