ময়মনসিংহে দিপু দাস হত্যা: ১২ আসামি ৩ দিনের রিমান্ডে
ময়মনসিংহের ভালুকায় দিপু চন্দ্র দাসকে (২৭) পিটিয়ে হত্যার পর মরদেহে আগুন দেওয়ার ঘটনায় গ্রেপ্তার ১২ আসামির তিন দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।
আজ সোমবার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট শাহাদাত হোসেন শুনানি শেষে এই আদেশ দেন।
গ্রেপ্তাররা হলেন—মো. লিমন সরকার, মো. তারেক হোসেন, মো. মানিক মিয়া, এরশাদ আলী, নিজুম উদ্দিন, আলমগীর হোসেন, মো. মিরাজ হোসেন আকন, আজমল হাসান সাগির, মো. শাহীন মিয়া, মো. নাজমুল, কাইয়ুম ও আশিক।
এর আগে শনি ও রোববার জেলার বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করে র্যাব ও পুলিশ।
নিহত দিপু ময়মনসিংহের তারাকান্দা উপজেলার মোকামিয়াকান্দা গ্রামের বাসিন্দা। তিনি ভালুকার পাইওনিয়ার নিটওয়্যারস নামে একটি পোশাক কারখানার কর্মী ছিলেন। তার তিন বছর বয়সী এক কন্যাসন্তান রয়েছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্র জানায়, গত বৃহস্পতিবার রাত ৮টার দিকে ধর্ম নিয়ে কটূক্তি করার অভিযোগে কারখানার ভেতরে একদল শ্রমিক দিপুকে মারধর শুরু করেন।
ময়মনসিংহের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) আব্দুল্লাহ আল মামুন দ্য ডেইলি স্টারকে জানান, মারধরের একপর্যায়ে হামলাকারীরা দিপুকে কারখানার বাইরে নিয়ে যায়। সেখানে স্থানীয় লোকজনও তাদের সঙ্গে যোগ দেয় এবং পিটুনিতে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়। পরে হামলাকারীরা তার মরদেহে আগুন ধরিয়ে দেয়। এতে মরদেহ আংশিক পুড়ে যায়। পুলিশ পরে মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ মর্গে পাঠায়।
তিনি আরও বলেন, বিভিন্ন মহল থেকে ধর্ম অবমাননার অভিযোগের কথা বলা হলেও এর সত্যতা এখনো যাচাই করা যায়নি। এ সংক্রান্ত কোনো অডিও বা ভিডিও প্রমাণ পাওয়া যায়নি।'
এদিকে গতকাল শনিবার সংবাদ সম্মেলনে ময়মনসিংহ র্যাব-১৪ কোম্পানি কমান্ডার মো. সামসুজ্জামান বলেন, নিহত ব্যক্তি ধর্ম অবমাননা করে ফেসবুকে কিছু লিখেছেন, এমন তথ্য পাওয়া যায়নি। স্থানীয় লোকজন ও শ্রমিকদের সঙ্গে কথা বলেও এমন কিছু পাওয়া যায়নি।
সামসুজ্জামান বলেন, 'সবাই এখন বলছেন, তারা তাকে (নিহত শ্রমিক) এমন কিছু বলতে নিজেরা শোনেননি। কেউ নিজে শুনেছেন বা দেখেছেন (ধর্ম অবমাননার বিষয়ে) এমন কাউকে পাওয়া যায়নি।'
এ ঘটনায় শুক্রবার নিহতের ভাই অপু চন্দ্র দাস বাদী হয়ে ১৪০-১৫০ জন অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তিকে আসামি করে ভালুকা থানায় একটি মামলা করেন। মামলার পরই আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী অভিযানে নামে।

Comments