নাটোরে কলেজ শিক্ষকের মরদেহ উদ্ধার, স্বামী পুলিশ হেফাজতে

খায়রুন নাহার ও তার স্বামী মামুন হোসেন। ছবি: সংগৃহীত

নাটোরের গুরুদাসপুর উপজেলার খুবজিপুর মোজাম্মেল হক ডিগ্রি কলেজের দর্শন বিভাগের সহকারী অধ্যাপক খায়রুন নাহারের মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ।

আজ রোববার সকালে নাটোর শহরের বলারিপাড়া মহল্লার ভাড়া বাসা থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়।

নাটোরের পুলিশ সুপার (এসপি) লিটন কুমার সাহা দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'প্রাথমিকভাবে তিনি আত্মহত্যা করেছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। তবে অধিকতর তদন্তের জন্য রাজশাহী থেকে সিআইডি ক্রাইমসিন ইউনিট সদস্যদের ডাকা হয়। দুপুরে ক্রাইমসিন ইউনিট এসে বিভিন্ন নমুনা সংগ্রহের পর মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য নাটোর সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।'

এ ছাড়া, খায়রুন নাহারের স্বামী মামুন হোসেনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পুলিশ হেফাজতে নেওয়া হয়েছে বলে জানান তিনি।

খায়রুন নাহারের পরিবার ও স্বামী মামুন হোসেনের বরাত দিয়ে লিটন কুমার সাহা বলেন, '২২ বছরের যুবকের সঙ্গে ৪০ বছরের শিক্ষকের বিয়ে হয়েছে, এমন খবর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমসহ বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত হলে সামাজিকভাবে লজ্জায় পড়েন ওই শিক্ষক এবং তার স্বামী। আত্মীয়স্বজন এমনকী কলেজের কিছু শিক্ষকও বিষয়টি নিয়ে বাজে মন্তব্য করেন। এসব বিষয় ওই শিক্ষকের ওপর মানসিক চাপ তৈরি করে। প্রথমদিকে সংবাদমাধ্যমে খবরটি প্রকাশের বিষয়ে দ্বিমত থাকলেও পরে এই দম্পতি চাননি যে কোনো খবরে তাদের বিয়ের বিষয়টি আসুক। কিন্তু গণমাধ্যম তাদের কথা না শুনে প্রথম দিকে ধারণ করা সেই ভিডিও এবং বক্তব্য প্রকাশ করেছে।'

'এসব বিষয়ে মানসিক চাপ এবং লোকলজ্জা থেকে খায়রুন নাহার আত্মহত্যা করেছেন বলে দাবি করেছেন তার স্বামী মামুন', যোগ করেন পুলিশ সুপার।

এগুলো ছাড়াও আরও বিভিন্ন বিষয় মাথায় রেখেই পুলিশ গুরুত্ব সহকারে ঘটনার তদন্ত করছে বলেও জানান তিনি।

ভাড়া বাসার নৈশপ্রহরী নিজাম উদ্দিন ডেইলি স্টারকে বলেন, 'রাত ২টার দিকে অসুস্থতার কারণে হাসপাতালে যাওয়ার কথা বলে মামুন বাসা থেকে বের হন। পরে আবার ভোর ৬টার দিকে ফিরে আসেন। ফিরে এসে মামুন আমাকে ডাক দেন এবং খায়রুনকে ঝুলন্ত অবস্থা থেকে নিচে নামিয়ে আনেন। পরে খবর দিলে পুলিশ এসে মরদেহ উদ্ধার করে।'

খায়রুন নাহারের চাচাতো ভাই সাবের উদ্দিন ডেইলি স্টারকে বলেন, 'খায়রুনের বাবা-মা তাদের বিয়ে মেনে নেননি। সে বিষয়ে এক ধরনের মানসিক চাপ ছিল। তাছাড়া, তাদেরকে নিয়ে অন্যান্য লোকজনও নানারকম বাজে কথা বলছিল। বিষয়গুলো হয়তো সহ্য করতে পারেনি খায়রুন।'

খায়রুনের মৃত্যু হত্যা নাকি আত্মহত্যা সেটি খতিয়ে দেখার দাবি জানান তিনি।

পরিবারের সদস্যরা জানান, খায়রুন নাহারের প্রথমে বিয়ে হয়েছিল রাজশাহীর বাঘা উপজেলায়। প্রথম সংসারে তাদের ২ ছেলে আছে। পারিবারিক কলহে সেই সংসার বেশিদিন টেকেনি। তারপর কেটে যায় অনেকদিন। পরে একাকীত্ব আর হতাশাগ্রস্ত খায়রুন নাহারের সঙ্গে ফেসবুকে মামুন হোসেনের পরিচয় হয়। পরে ২০২১ সালের ১২ ডিসেম্বরে তারা বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন।

খুবজিপুর মোজাম্মেল হক ডিগ্রি কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মো. আবু সাঈদ ডেইলি স্টারকে বলেন, 'বিয়ের পর সামাজিকভাবে লজ্জায় পড়েন খায়রুন নাহার। তিনি কলেজে নিয়মিত আসলেও ক্লাস নিয়েই আবার চলে যেতেন। তবে স্বামী মামুনের সঙ্গে তার ভালো বোঝাপড়া ছিল বলেই জানতেন সহকর্মীরা।'

Comments

The Daily Star  | English
honor smartphone inside

How to build a smartphone

Smartphones feel inevitable in the hand, yet each one begins as a set of drawings, components and hypotheses. The journey from concept to finished device is a carefully sequenced collaboration between design labs, supplier networks and high-throughput assembly lines. In leading electronics hubs across Asia, that journey can take as little as days once a design is frozen and parts are on site.

2h ago