নিত্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধি ও মূল্যস্ফীতিতে উদ্বেগ জানিয়ে ২৪ নাগরিকের বিবৃতি

স্টার ফাইল ফটো

দেশের বাজারে মাংস, ডাল, পেঁয়াজ, ডিম, আলুসহ নিত্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধি ও সার্বিক মূল্যস্ফীতি নিয়ে উদ্বেগ জানিয়েছেন দেশের ২৪ নাগরিক।

এমন দুর্বিষহ পরিস্থিতি উত্তরণে এবং জনদুর্ভোগ নিরসনে সরকারকে শিগগির কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন তারা।

আজ সোমবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে তারা এ আহ্বান জানিয়েছেন।

বিবৃতিতে বলা হয়, 'আমরা গভীর উদ্বেগের সঙ্গে লক্ষ্য করছি যে গত প্রায় ১ বছর ধরে খাদ্য-পণ্যসহ সার্বিক মূল্যস্ফীতি অসহনীয় পর্যায়ে উপনীত হয়েছে। সরকারি প্রতিষ্ঠান বিএসএসের তথ্য অনুযায়ী, আগস্ট মাসে খাদ্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধি ১২ দশমিক ৫৪ শতাংশ ও সার্বিক মূল্যস্ফীতি ৯ দশমিক ৯ শতাংশ।'

'এ পরিস্থিতিতে নিম্নবিত্ত ও মধ্যবিত্তদের পক্ষে জীবনধারণ কষ্টসাধ্য হয়ে পড়েছে' উল্লেখ করে বিবৃতিদাতারা বলেন, 'ডিম ও মাংসের মূল্যবৃদ্ধির ফলে আমিষ জাতীয় খাদ্যাভাব পুষ্টির ক্ষেত্রে দীর্ঘমেয়াদী সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে। সরকারি ভাষ্য অনুযায়ী রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ এ পরিস্থিতির জন্য দায়ী এবং ব্যবসায়ীদের মতে ডলার সংকটের ফলে সমস্যা ঘনীভূত হয়েছে।'

তারা বলেন, 'বহুদেশে যুদ্ধের কারণে সমস্যা সৃষ্টি হয়েছিল এবং অধিকাংশ দেশে তা স্বত্বেও মুদ্রানীতি, ব্যয় সংকোচন ও বাজার ব্যবস্থায় কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করে মুদ্রাস্ফীতি সহনীয় পর্যায়ে নামিয়ে আনতে সক্ষম হয়েছে।'

বিবৃতিতে বলা হয়, 'আমরা লক্ষ্য করছি যে বাংলাদেশ অদ্যাবধি মূল্যস্ফীতি কমাতে সক্ষম হয়নি। বস্তুতপক্ষে উৎপাদন ও বাজার ব্যবস্থাপনায় সরকার কার্যকর ব্যবস্থাপনায় সমর্থ হচ্ছে না। অভিযোগ রয়েছে যে, উৎপাদন, পাইকারি ও খুচরা বাজারে সিন্ডিকেট গড়ে উঠেছে এবং তারাই বাজার মূল্য নিয়ন্ত্রণ করছে। সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ, এমনকি গৃহীত পদক্ষেপও বাস্তবায়নে সমর্থ হচ্ছে না।'

'এ পরিস্থিতি কোনো অবস্থায় কাম্য নয়' উল্লেখ করে বিবৃতিদাতারা বলেন, 'আমরা একান্তভাবে প্রত্যাশা করি, সরকার প্রয়োজনে সামাজিক শক্তির সহায়তায় এই দুর্বিষহ পরিস্থিতি উত্তরণে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করে বিশেষ করে মাংস, ডাল, পেঁয়াজ, ডিম, আলুসহ পণ্যমূল্য সহনীয় পর্যায়ে নামিয়ে আনবেন। জনদুর্ভোগ নিরসনে কার্যকর ব্যবস্থা নেবেন।'

বিবৃতিতে সই করেছেন-তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা অ্যাডভোকেট সুলতানা কামাল, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা রাশেদা কে. চৌধুরী, সম্মিলিত সামাজিক আন্দোলনের প্রেসিডিয়াম সদস্য রামেন্দু মজুমদার, মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের ট্রাস্টি ডা. সারওয়ার আলী, সম্মিলিত সামাজিক আন্দোলনের সভাপতি অধ্যাপক সৈয়দ আনোয়ার হোসেন, কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি ড. নুর মোহাম্মদ তালুকদার, মানবাধিকার কর্মী খুশী কবির, বাংলাদেশ হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট রানা দাশ গুপ্ত, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক এম এম আকাশ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক রোবায়েত ফেরদৌস, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. জোবায়দা নাসরিন, গবেষক ও সংস্কৃতি কর্মী ড. সেলু বাসিত, অর্থনীতিবিদ ড. আর. এম. দেবনাথ, রাজনীতিবিদ অসিত বরন রায়, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক আব্দুল্লাহ আল মামুন চৌধুরী, সম্মিলিত সামাজিক আন্দোলনের সাধারণ সম্পাদক সালেহ আহমেদ, সংস্কৃতি কর্মী এ কে আজাদ, বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী পারভেজ হাসেম, খেলাঘরের সাবেক সাধারণ সম্পাদক জহিরুল ইসলাম জহির, সমাজকর্মী জাহাঙ্গীর আলম সবুজ, সংস্কৃতিকর্মী অলক দাস গুপ্ত, জাতীয় শ্রমিক জোটের কার্যকরী সভাপতি আবদুল ওয়াহেদ, ইমারত নির্মাণ শ্রমিক ইউনিয়ন বাংলাদেশের (ইনসাব) সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রাজ্জাক ও বাংলাদেশ ছাত্রলীগের (বিসিএল) সাধারণ সম্পাদক গৌতম শীল।

 

Comments

The Daily Star  | English
FY2026 Budget,

How the FY2026 budget can make a difference amid challenges

The FY2026 budget must be more than a mere fiscal statement.

18h ago