বিনা টিকিটে ২০ বছর আগের ট্রেন ভ্রমণের টাকা পরিশোধ করলেন প্রবাসী

রোববার নরসিংদী স্টেশনে গিয়ে ২০ বছর আগের ট্রেন ভ্রমণ বাবদ এক হাজার পাঁচ টাকা বুঝিয়ে দেন কাইয়ুম। ছবি: সংগৃহীত

নরসিংদীর কুমড়াদি এলাকার প্রবাসফেরত আব্দুল কাইয়ুম মিয়া বিনা টিকেটে রেল ভ্রমণ করেছেন ২০ বছর আগে। 

নরসিংদী সরকারি কলেজের শিক্ষার্থী থাকা অবস্থায় ট্রেনে করে বিভিন্ন জায়গায় ঘুরে বেড়িয়েছেন। কিন্তু খামখেয়ালিপনা ও টাকার অভাবে টিকেট কাটতেন না তখন।

কিন্তু এখন সেই সব স্মৃতি ও টিকেট না কাটার অপরাধবোধ থেকে আজ রোববার দুপুরে নরসিংদী রেলওয়ে স্টেশনে হাজির হন কাইয়ুম।

হিসাব করে আগের ট্রেন ভ্রমণ বাবদ এক হাজার পাঁচ টাকা বুঝিয়ে দেন রেলওয়ে কর্তৃপক্ষকে।

কাইয়ুম দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'ওই সময় পকেটে টাকা না থাকায় ও সচেতনতার অভাবে এমন করেছি।'

নরসিংদী রেল কর্তৃপক্ষ জানায়, দীর্ঘদিন প্রবাসে কাটিয়ে দেশে ফেরার পর তার বোধোদয় হয়। এ ঘটনায় স্থানীয়দের মধ্যে টিকিট কেটে ট্রেনে ভ্রমণের বিষয়ে সচেতনতা বাড়বে।

মো. আবদুল কাইয়ুম মিয়া (৪৪) নরসিংদীর শিবপুরের পুটিয়া ইউনিয়নের কুমড়াদি এলাকার বাসিন্দা।

নরসিংদী রেলওয়ে পুলিশ ফাড়ির ইনচার্জ কার্তিক চন্দ্র রায় ডেইলি স্টারকে বলেন, '২০ বছর আগে তিনি কতবার ভ্রমণ করেছেন সেটা বলা কঠিন। তাই আনুমানিকভাবে এক হাজার পাঁচ টাকা গ্রহণ করে ১৫ টাকার সমমূল্যের ৬৭টি টিকেট দেয়া হয়েছে। তারা পরিশোধ করা টাকা সরকারি কোষাগারে জমা হয়েছে।'

মো. আবদুল কাইয়ুম মিয়া বলেন, ২০ বছর আগে আমি নরসিংদী সরকারি কলেজের শিক্ষার্থী ছিলাম। সে সময় বহুবার ট্রেনে চড়েছি। বন্ধুদের সঙ্গে ট্রেনে চড়ে বসতাম। ঢাকায় চলে যেতাম, ঘুরেফিরে ফিরতি ট্রেনে আবার চলে আসতাম। ছাত্র হওয়ায় ওই সময়ে আমরা কেউই ট্রেনের টিকিট কাটার কথা ভাবতাম না।' 

তিনি আরও বলেন, 'গত ২৭ সেপ্টেম্বর জর্ডান থেকে দেশে ফিরে স্ত্রীকে বলি যে রেলের টিকিটের টাকা দিয়ে দেব। স্ত্রী উৎসাহ দেন। পরে আজ দুপুরে আমার ৪ বছর বয়সী ছেলেকে নিয়ে শিবপুর থেকে নরসিংদী রেলস্টেশনে আসি। পুরো বিষয়টি জানিয়ে কর্তব্যরত জিআরপি পুলিশের সহায়তা নিয়ে টাকা পরিশোধ করি। এখন অনুশোচনা থেকে মুক্তি পেয়েছি, শান্তি লাগছে।'

জানতে চাইলে নরসিংদী রেলের স্টেশনমাস্টার সাইদুল ইসলাম ডেইলি স্টারকে বলেন, 'কাইয়ুম মিয়া সচেতনতা ও ন্যায়বোধের পরিচয় দিলেন। তার এই উদ্যোগ বিনা টিকিটে ট্রেন ভ্রমণে অন্যদের নিরুৎসাহিত করবে বলে আমরা বিশ্বাস করি।'

Comments

The Daily Star  | English
Women in July uprising

The unfinished revolution for women's political rights

Post-uprising women were expected to play central role in policymaking, which did not happen.

8h ago