গাজীপুর

২৩ কোটির টাকার সেতুতে নেই সংযোগ সড়ক

গাজীপুর শহরের কালা শিকদার ঘাটে সেতু নির্মিত হলেও সংযোগ সড়ক না থাকায় দুর্ভোগে পড়েন সেতু ব্যবহারকারীরা। ছবি: স্টার

গাজীপুর সিটি করপোরেশনের ব্যস্ততম শহরের কালা শিকদার ঘাটে ২৩ কোটি টাকা ব্যয়ে সেতু নির্মিত হলেও সেতুর দুই পাশে সংযোগ সড়ক না থাকায় গত দুই বছর ধরে জনদুর্ভোগ বেড়েছে।

সরেজমিনে দেখা যায়, সেতুর দক্ষিণ পাশে ২৮ নম্বর ওয়ার্ড গাজীপুর শহরের জেলা প্রশাসক কার্যালয়, আদালত, স্কুল, কলেজ ও সিটি করপোরেশন অফিস। উত্তর দিকে আছে ২৫ নম্বর ওয়ার্ড ভুরুলিয়াসহ একাধিক গ্রাম। পশ্চিমে ত্রিশ ফুট গভীর খাল, কৃষি জমি। পূর্ব পাশেও খাল, কৃষি জমি। সেতুটির দুই পাশে সংযোগ সড়ক না থাকায় সাঁকো দিয়ে সেতুতে উঠে চলাচল করতে হয় এলাকাবাসীর।

শাহীন স্কুল অ্যান্ড কলেজের দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী শাওন বলেন, 'আমি ভুরুলিয়া গ্রাম থেকে প্রতিদিন স্কুলে আসি। প্রতিদিন এই সেতু পার হয়ে আসতে খুব কষ্ট হয়। এলাকার প্রত্যেকটা শিক্ষার্থীর একই অবস্থা। এই সড়কে কেন সংযোগ সড়ক হচ্ছে না আমরা কেও জানি না। সেতু তৈরি করে যদি বাঁশ কাঠ দিয়ে পারাপার হতে হয়, তাহলে সেতুর কি দরকার ছিল? আমরা অনেক কষ্টে এই সেতু হয়ে চলাচল করছি। বাইসাইকেল, রিকসা, ভ্যান ও মোটরসাইকেল তো পারাপার করা যায় না।'

রিকশাচালক সোহাগ মিয়া ও জসিম মিয়া জানান, এখান থেকে কোর্টে, ডিসি অফিসের সামনে যেতে মাত্র ২/৩ মিনিট লাগে। দূর থেকে মানুষ হেঁটে আসে। এখান থেকে রিকশায় ওঠে। শুনেছি, সেতু পারাপারে কয়েকজন কাঠের মাচা থেকে পিছলে পড়ে হাত পা ভেঙেছে।

গাজীপুর জজ কোর্টের সেরেস্তাদার আ. রহিম মিয়া নিজের বাসা ভুরুলিয়া থেকে হেঁটে এসে কাঠের সাঁকো দিয়ে কষ্ট করে সেতু পার হয়ে রিকশার খোঁজ নিচ্ছিলেন। তার সাথে কথা হয়। তিনি বলেন, দুই বছর ধরে কষ্ট করছি। এই সেতু দিয়ে অনেক মানুষ যাতায়াত করে। দেখারও কেউ নেই। কিছু দিন আগে একবার উদ্যোগ নিয়েছিল তবে সংযোগ সড়ক আর হয়নি।

স্থানীয়রা জানায়, ছোট ছোট শিশুরা ঝুঁকি নিয়ে সেতু পার হচ্ছে। কেও পড়ে গেলে সেতুর ৩০ ফুট নিচে পচা পানিতে ভেসে যাবে। এখানে কিছুদিন পর পর দুর্ঘটনা ঘটে।

গাজীপুর সিটি করপোরেশন ২৫ নম্বর পশ্চিম ভুরুলিয়া ওয়ার্ড কাউন্সিলর মজিবুর রহমান দ্য ডেইলি স্টারকে জানান, এই সেতুটির দুই পাশে সংযোগ দিচ্ছে না। সিটি করপোরেশনের লোকজন এটা নিয়ে গড়িমসি করছে। এলাকাবাসী ও শিক্ষার্থীদের যাতায়াতে সমস্য হচ্ছে।

এ বিষয়ে গাজীপুর সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী প্রকৌশলী এস এম শামসুর রহমান মাহমুদ দ্য ডেইলি স্টারকে জানান, '২০২০-২১ অর্থবছরে সিটি করপোরেশন বিশেষ বরাদ্দে সেতু/কালভার্ট নির্মাণ' শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় ২৩ কোটি টাকা ব্যয়ে এই সেতুটি নির্মাণ করে।

তিনি বলেন, 'এখনো সেতুর দুই পাশে সংযোগ দেওয়া হয়নি। আমি এ বিষয়ে সিটি করপোরেশনের ঊর্ধ্বতন ব্যক্তিদের সাথে কথা বলে ঠিকাদারকে নোটিশ দিয়েছি।'

Comments

The Daily Star  | English
migrant workers medical scam in Bangladesh

Migrants trapped in medical scam

Syndicate exploits Gulf-bound workers, issues fake fitness papers

16h ago