‘পৃথিবীর প্রতিটি ভাষার মতো রেংমিটচ্যও বেঁচে থাকুক’

পাহাড় থেকে ফুল সংগ্রহ করে মায়ের ভাষাকে শ্রদ্ধা জানাতে সকালে লাইন ধরে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করে শিশুরা। ছবি: সংগৃহীত

একুশে ফেব্রুয়ারির ভোরে দুর্গম পাহাড়ি এলাকায় নিজেদের তৈরি অস্থায়ী শহীদ মিনারে ফুল দিয়ে ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়েছে রেংমিটচ্য শিশুরা।  

বান্দরবানের দুর্গম আলীকদম উপজেলার তৈন খালের শাখা ঝিড়ির গহীনে বিপন্নপ্রায় রেংমিটচ্যভাষীরা বাস করেন। এই পাড়ার মতো একই ঝিড়িতে আরও সাতটি পাড়া আছে। পাড়াগুলোতে কোনো শিক্ষা প্রতিষ্ঠান নেই, নেই শহীদ মিনার। তবুও ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে বিরত থাকেননি শিশু, কিশোরেরা।

জানা যায়, মহান শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালনে বাঁশ দিয়ে নিজেরাই তৈরি করে নিয়েছেন একটি অস্থায়ী শহীদ মিনার। আর ভোরে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানিয়েছেন তারা।

শহীদ মিনারটি তৈরি হয়েছে বান্দরবান আলীকদম উপজেলার তৈনফা মৌজার দুর্গম পাহাড়ের রেংমিটচ্য ভাষীদের ক্রাংচি পাড়ায়।

গতকাল মঙ্গলবার অস্থায়ী শহীদ মিনারটি তৈরি করে এই পাড়ার কয়েকজন কিশোর ও তরুণ। রাত ১১টার দিকে শহীদ মিনার তৈরির কাজ শেষ হয়।

রেংমিটচ্য ভাষার শিক্ষক চিংরা ম্রো মোবাইল ফোনে দ্য ডেইলি স্টারকে  বলেন, গতকাল সন্ধ্যা থেকে কুন ওয়াই ম্রো, সাম্পু ম্রো, মেলিং ম্রোসহ চার জন মিলে বাঁশের শহীদ মিনার তৈরি করা হয়েছে।

আজ সকালে পাড়াবাসীসহ রেংমিটচ্য ভাষীর ২০ জন শিশু ও কিশোর শহীদ মিনারে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেছে। বিভিন্ন পাহাড় থেকে ফুল সংগ্রহ করে মায়ের ভাষাকে শ্রদ্ধা জানাতে সকালে লাইন ধরে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেছে তারা।

চিংরা রেংমিট আরও বলেন, 'আমাদের নতুন প্রজন্মের শিশু-কিশোরদের মাতৃভাষার জন্য যারা জীবন দিয়েছেন তাদের কথা স্মরণ করাতে এবং তাদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে এই উদ্যোগ নিয়েছি আমরা। এবং পৃথিবীর প্রতিটি ভাষার মতো আমাদের মাতৃভাষা 'রেংমিটচ্য' ভাষাও বেঁচে থাকুক এটাই চাই আমরা।'

রেংমিটচ্য ভাষায় বর্তমানে মাত্র সাত জন কথা বলতে পারেন। বিপন্নপ্রায় এই ভাষা রক্ষায় বান্দরবানে কাজ করে যাচ্ছেন এই ভাষা পরিবারের চিংরা রেংমিট ও তার বাবা মাংপুঙ রেংমিট।

 

Comments

The Daily Star  | English
chief adviser yunus on july charter 2025

Yunus rules out referendum over July Charter

Chief adviser insists party agreement key to polls; vows justice, reform ahead of election

19m ago