বিএসএফের গুলিতে একজন নয়, ২ বাংলাদেশি নিহত

ফেনীর পরশুরাম সীমান্তে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) গুলিতে নিহত এক বাংলাদেশি যুবককে ভারতে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
মরদেহ ফিরিয়ে আনতে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) প্রতিবাদ জানিয়ে আজ শুক্রবার বিকেলে বিএসএফের সঙ্গে পতাকা বৈঠকে করেছে।
নিহত মোহাম্মদ ইয়াছিন ওরফে লিটনের (৩২) মরদেহ বর্তমানে ভারতের একটি হাসপাতালে আছে।
ফেনীর ৪ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মোহাম্মদ মোশাররফ হোসেন আজ বিকেলে দ্য ডেইলি স্টারকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
এর আগে, সকালে বিএসএফের গুলিতে একজন নিহত ও একজন আহত হয়েছে বলে জানিয়েছিল বিজিবি।
নিহত মো. মিল্লাত হোসেন (২০) পরশুরাম পৌর এলাকার বাসপদুয়া গ্রামের বাসিন্দা ছিলেন।
গুলিবিদ্ধ হয়ে গুরুতর আহত অবস্থায় একই গ্রামের মো. আফছার (৩০) বর্তমানে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন।
স্থানীয়দের বরাতে পরশুরাম মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোস্তফা হাকিম ডেইলি স্টারকে জানান, বৃহস্পতিবার রাতে সীমান্তে মাছ ধরতে যান লিটন, মিল্লাত ও আফছার। এসময় সীমান্তের ২১৬৪ নম্বর পিলারের কাছ থেকে ভারতীয় বিএসএফের ৪৩ ব্যাটালিয়নের আমজাদনগর ক্যাম্পের সদস্যরা তাদের লক্ষ্য করে গুলি করে।
এতে তারা তিনজনই গুলিবিদ্ধ হন। স্থানীয়রা গুলির শব্দ শুনতে পেয়ে সেখানে গিয়ে দুজনকে দেখতে পেয়ে তাদের উদ্ধার করে পরশুরাম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। রাত ১টার দিকে তাদের ফেনী জেনারেল হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়।
ফেনী জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান মিল্লাত। গুরুতর আহত আফছারকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়েছে।
স্থানীয়দের ধারণা, গুলিবিদ্ধ ইয়াছিন ওরফে লিটন ঝোপের আড়ালে পড়েছিলেন বলে তাকে হয়ত দেখা যায়নি। পরে বিএসএফ সদস্যরা সেখানে গিয়ে তাকে ভারতের ভেতরে বিলোনিয়া হাসপাতালে নিয়ে যায়।
পরশুরাম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. ইফতেখার হাসান ভূঁইয়া বলেন, 'মিল্লাতের শরীরে ২টি ও আফছারের শরীরে ১টি গুলির চিহ্ন পাওয়া গেছে।'
বিকেলে ফেনীর ৪ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মোহাম্মদ মোশাররফ হোসেন দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'আমরা সকালে জানতে পারি বিএসএফের গুলিতে একজন নিহত ও একজন আহতের খবর। দুপুর ১২টার দিকে আমাদের সোর্সের মাধ্যমে জানতে পারি বিএসএফের গুলিতে আরও একজন নিহত হয়েছেন। তাকে বিএসএফ তুলে নিয়ে গেছে। এ খবর পেয়ে আমরা বিএসএফের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তারা বিষয়টি স্বীকার করে এবং জানায় নিহত ব্যক্তির মরদেহ ওপারের হাসপাতালে আছে।'
তিনি আরও বলেন, 'আমরা বিষয়টি নিয়ে কড়া প্রতিবাদ করি এবং পতাকা বৈঠকের আহ্বান জানাই। বিকেলে ইতোমধ্যে তাদের সঙ্গে পতাকা বৈঠক করেছি। নিহতের মরদেহ ফেরত চেয়েছি। বিএসএফ জানিয়েছে, তাদের কিছু প্রক্রিয়া শেষ করে মরদেহ হস্তান্তর করা হবে। তাই আগামীকাল আবার পতাকা বৈঠকের কথা বলা হয়েছে তাদের।'
Comments