দাশুরিয়ায় পাবনা-রাজশাহী মহাসড়কের বেহাল দশায় দুর্ভোগে নাকাল যাত্রী

ছবি: স্টার

পাবনা-রাজশাহী মহাসড়কের দাশুরিয়া মোড় উত্তরবঙ্গ থেকে দক্ষিণবঙ্গের যোগাযোগের প্রবেশদ্বার হিসেবে ব্যবহৃত হয়। প্রতিদিন উত্তরবঙ্গ ও দক্ষিণবঙ্গের কয়েক হাজার যানবাহন এ মহাসড়ক দিয়ে চলাচল করে।

তবে দিনের পর দিন সংস্কার কাজ চলমান থাকায় এবং মহাসড়কের বিভিন্ন অংশে খানাখন্দে ভরে থাকায় দেশের গুরুত্বপূর্ণ এ মহাসড়ক দিয়ে যানবাহন চলাচল দুর্বিষহ হয়ে পরেছে।

সবচেয়ে বেশি দুর্ভোগ হচ্ছে পাবনা-রাজশাহী অংশের মহাসড়কের ১ কিলোমিটার এলাকায়। দীর্ঘদিন ধরে নির্মাণকাজ চলমান থাকায় মহাসড়কের একটি লেন বন্ধ করে সিঙ্গেল লেন দিয়ে যানবাহন চলাচল করছে। এতে করে দিনের বেশিরভাগ সময় যানজট লেগে থাকছে।

স্থানীয় বাসিন্দা ও স্কুল শিক্ষক মুসলিমা খাতুন দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'পাবনা থেকে আমার কর্মস্থল কুষ্টিয়ার ভেড়ামারায় যাওয়ার জন্য প্রতিদিন এই মহাসড়ক পাড়ি দিতে হয়। দাশুরিয়া বাজার এলাকায় পৌঁছালেই শুরু হয় যানজট। দাশুরিয়া মোড় পার হয়ে কুষ্টিয়াগামী মহাসড়কে উঠতে মাত্র আধা কিলোমিটার রাস্তা পার হতে আধাঘণ্টার বেশি সময় লাগে।'

'সকালের দিকে যানবাহনের চাপ কিছুটা কম থাকলেও ফেরার পথে বিকেলে প্রায়ই ঘণ্টাখানেক যানজটে আটকে থাকতে হয়' বলে জানান তিনি।

ব্যাংক কর্মকর্তা সুলতান হাফিজ বলেন, 'প্রতিদিন পাবনা থেকে ঈশ্বরদী কর্মস্থলে যাতায়াত করতে দীর্ঘসময় দাশুরিয়ায় যানজটে আটকে থাকাতে হয়। অনেকদিন তো সময় মতো অফিসেও পৌঁছাতে পারি না।'

যানজট বিবেচনায় প্রতিদিনই বাড়ি থেকে হাতে অতিরিক্ত সময় হাতে নিয়ে বের হতে হয় বলে জানান তিনি। বলেন, 'গুরুত্বপূর্ণ মহাসড়কের দাশুরিয়া অংশে প্রায় এক বছরের বেশি সময় ধরে কাজ চলছে। কাজ কবে শেষ হবে কে জানে। কিন্তু আমাদের দুর্ভোগ মনে হয় আর শেষ হবে না।'

পাবনা সড়ক বিভাগের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী সাদেকুর রহমান দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'সড়ক বিভাগের উদ্যোগে পাঁচ কোটি টাকা ব্যয়ে দাশুরিয়া মোড়ের প্রায় আধা কিলোমিটার এলাকায় ঢালাই রাস্তা নির্মাণ করা হচ্ছে।'

তিনি বলেন, 'ঢালাই রাস্তা করার কারণে খণ্ড খণ্ড অংশে ভাগ করে কাজ করা হচ্ছে। লোহার কাজ, কংক্রিটের ঢালাই আর ঢালাই রাস্তার মজবুতকরণ করতে দীর্ঘ সময় প্রয়োজন হয়।'

'ইতোমধ্যে ৫০ শতাংশের বেশি কাজ হয়ে গেছে। এ বছরের মধ্যেই পুরো কাজ শেষ হবে,' বলে জানান তিনি।

ছবি: স্টার

রাজশাহীগামী মহাসড়কের দাশুরিয়া থেকে মুলাডুলি পর্যন্ত যেতে প্রায় পাঁচ কিলোমিটার এলাকা খানাখন্দে ভরপুর।

ব্যস্ততম এ মহাসড়কের বেশিরভাগ অংশের কার্পেটিং উঠে খানাখন্দের সৃষ্টি হয়েছে। ইতোমধ্যে সড়ক বিভাগ খানাখন্দে ইট ফেলে চলাচলের উপযোগী করার চেষ্টা করেছে।

ব্যস্ততম মহাসড়কটি ইট দিয়ে চলাচলের উপযোগী করার চেষ্টা করা হলেও সতর্কতার সঙ্গেই যানবাহন চলাচল করতে হচ্ছে। অনেক সময় যানবাহনের চাপে যানজটেরও সৃষ্টি হচ্ছে।

পাবনা থেকে চাঁপাইনবাবগঞ্জ চলাচলকারী বিআরটিসি বাসের ড্রাইভার মো. ফেরদৌস হোসেন দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'প্রতিদিন দীর্ঘ দূরত্ব পাড়ি দিতে হয়। শুরুতেই পাবনার দাশুরিয়া থেকে মুলাডুলি পর্যন্ত সাত কিলোমিটার রাস্তা পার হতেই প্রায় ঘণ্টাখানেক সময় লেগে যাচ্ছে। যার কারণে নির্ধারিত সময়ে আর গন্তব্যে পৌঁছাতে পারি না।'

পাবনা সড়ক বিভাগের প্রকৌশলী সাদেকুর রহমান বলেন, 'পাঁচ কিলোমিটার ক্ষতিগ্রস্ত মহাসড়ক সংস্কারের জন্য ১২ কোটি টাকার প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে। তবে ঠিকাদার নিযুক্ত করতে না পারায় কাজ শুরু করা যাচ্ছে না।'

ইতোমধ্যে তিন দফায় টেন্ডার হলেও ঠিকাদার নিযুক্ত করার বিষয়টি চূড়ান্ত হয়নি বলে জানান তিনি।

Comments

The Daily Star  | English
Yunus, Charter, and Our Future

Yunus, Charter, and Our Future

Can the vision for 'New Bangladesh' ignore the poor, farmers, workers, youth, women, or employment and climate crises?

17h ago