খাগড়াছড়িতে আজও অবরোধ চলছে, স্থবির জনজীবন
খাগড়াছড়িতে 'জুম্ম ছাত্র-জনতা'র ব্যানারে ডাকা সড়ক অবরোধ অব্যাহত রয়েছে।
আজ মঙ্গলবার জেলার চট্টগ্রাম-খাগড়াছড়ি ও ঢাকা-খাগড়াছড়ি সড়কে অবরোধ শিথিল করা হলেও দূরপাল্লার বাস চলাচল শুরু হয়নি। অভ্যন্তরীণ সড়কগুলোতেও অল্পসংখ্যক ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা চলাচল করছে।
১৪৪ ধারা বহাল রয়েছে জেলার সদর ও গুইমারা উপজেলায়।
আজ সকালে খাগড়াছড়ি পৌরশহরের শাপলা চত্বর এলাকায় দেখা যায়, মোড়ে মোড়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা রয়েছেন। অধিকাংশ দোকানপাট বন্ধ, সড়কে মানুষের চলাচলও তেমন নেই। একাধিক ব্যক্তি এক সঙ্গেই দেখলেই তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।
খাগড়াছড়ির পুলিশ সুপার আরেফিন জুয়েল বলেন, 'পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে সেনাবাহিনী, বিজিবি, পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর টহল রয়েছে। সোমবার থেকে এখন পর্যন্ত কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি।'
এর আগে শনিবার অবরোধ কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে খাগড়াছড়িতে পাহাড়ি ও বাঙালিদের মধ্যে পাল্টাপাল্টি ধাওয়া ও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে। এরপর সদর উপজেলা, পৌরসভা ও গুইমারা উপজেলায় পরবর্তী নির্দেশনা না দেওয়া পর্যন্ত ১৪৪ ধারা জারি করে প্রশাসন।
জেলা প্রশাসক এ বি এম ইফতেখার উদ্দিন খন্দকার বলেন, 'অবরোধ তুলে না নেওয়া পর্যন্ত ১৪৪ ধারা বহাল থাকবে। তবে অবরোধ তুলে নেওয়ার জন্য তাদের সঙ্গে আলোচনা চলছে।'
গত ২৩ সেপ্টেম্বর রাত ৯টায় প্রাইভেট পড়ে ফেরার পথে এক কিশোরীকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগ ওঠে। ওই দিন রাত ১১টার দিকে অচেতন অবস্থায় একটি খেত থেকে তাকে উদ্ধার করেন স্বজনেরা। এ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে শয়ন শীল নামে একজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তাকে ছয় দিনের রিমান্ড দিয়েছেন আদালত।
এই ধর্ষণের ঘটনার প্রতিবাদে 'জুম্ম ছাত্র-জনতা' এই অবরোধের ডাক দেয়। অবরোধ কর্মসূচি চলাকালে রোববার বিক্ষোভ ও সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে খাগড়াছড়ির গুইমারার রামেসু বাজার। সেখানে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে অবরোধকারীদের পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এ সময় গুলিতে তিনজন নিহত হন এবং সেনাবাহিনীর মেজরসহ আহত হন অন্তত ২০ জন।
নিহত তিনজনের মরদেহ ময়নাতদন্ত শেষে গতকাল রাতে স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়। নিহতরা হলেন—গুইমারা উপজেলার সিন্দুকছড়ি ইউনিয়নের দেবলছড়ি চেয়ারম্যান পাড়ার আথুই মারমা (২১), হাফছড়ি ইউনিয়ন সাং চেং গুলি পাড়ার আথ্রাউ মারমা (২২) ও রামেসু বাজার বটতলা এলাকার তৈইচিং মারমা (২০)।
খাগড়াছড়ি সিভিল সার্জন ছাবের আহম্মেদ বলেন, এ ঘটনায় আহত ১৪ জনকে সদর হাসপাতালে নেওয়া হয়। এর মধ্যে ১৩ জন হাসপাতালটিতে চিকিৎসাধীন এবং একজনকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়েছে।


Comments