দারিদ্র্য বিমোচনে বড় ভূমিকা রাখবে স্থানীয় বীজ সংরক্ষণ

'স্থানীয়ভাবে বীজ সংরক্ষণ আজ সময়ের দাবি। হাইব্রিড ও আমদানি করা বীজের কারণে আমাদের দেশীয় ধান, ডাল, তিলসহ নানা সবজির দেশীয় জাতের বীজ ক্রমশ হারিয়ে যাচ্ছে। স্থানীয় জাতের বীজ শুধু আমাদের মাটি ও জলবায়ুর সঙ্গেই সম্পর্কিতই নয়, এর ফলনের পুষ্টিগুণ বেশি এবং চাষাবাদের খরচ তুলনামূলকভাবে কম। স্থানীয় জাতের বীজ সংরক্ষণ ও চাষাবাদ বাড়ালে কৃষকেরা যেমন আমদানি করা বীজের ওপর নির্ভরশীলতা কমাতে পারবেন, তেমনি এটি দারিদ্র্য বিমোচন ও কৃষকদের আর্থিকভাবে স্বনির্ভর হতে সাহায্য করবে। পাশাপাশি খাদ্য নিরাপত্তা ও সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য রক্ষার ক্ষেত্রেও এটি ব্যাপক ভূমিকা রাখবে।'
আজ শনিবার খুলনার কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরে আয়োজিত 'স্থানীয় কৃষি জ্ঞান শনাক্তকরণ, সংরক্ষণ এবং কৃষির সর্বোত্তম অনুশীলন' শীর্ষক এক সেমিনারে বক্তারা এসব কথা বলেন। সেমিনারটির আয়োজন করে বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা লোকজ।
সেমিনারে বাগেরহাট জেলার কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো. মোতাহার হোসেন বলেন, 'স্থানীয় কৃষি জ্ঞান সংরক্ষণের মাধ্যমে দেশের কৃষি ব্যবস্থাকে অধিকতর শক্তিশালী করা সম্ভব। কৃষির আধুনিক প্রযুক্তির পাশাপাশি দীর্ঘদিনের পরীক্ষিত দেশীয় পদ্ধতির সমন্বয়ের মাধ্যমে কৃষকদের অর্থনৈতিক ও প্রযুক্তিগতভাবে সমৃদ্ধ করা প্রয়োজন।'
লোকজের নির্বাহী পরিচালক দেবপ্রসাদ সরকার বলেন, 'উপকূলীয় এলাকায় কৃষির সর্বোত্তম ব্যবহার নিশ্চিত করতে স্থানীয় পরিবেশ, মাটির গুণগত মান, পানির লবণাক্ততা, জলবায়ু পরিবর্তন ও চাষযোগ্য জমির প্রাপ্যতা বিবেচনায় রাখতে হয়। বিশেষত লবণাক্ততা সহনশীল ফসলের জাত নির্বাচন, সমন্বিত ফসল ও চিংড়ি চাষ, খাল ও উন্মুক্ত জমিতে পানি সংরক্ষণ, উঠান ও বাড়ির আঙিনায় সবজি উৎপাদন, কৃষির সঙ্গে পশুপালন ও হাঁস-মুরগি পালন, কৃষক প্রশিক্ষণ ও আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার, মোবাইলভিত্তিক কৃষি পরামর্শ, কৃষিপণ্য প্রক্রিয়াকরণ ও বাজারজাতকরণ এবং মাটি ও পানি পরীক্ষা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।'
খুলনার কৃষি প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটের সাবেক অধ্যক্ষ ড. এস এম ফেরদৌসের সভাপতিত্বে সেমিনারে অতিথি হিসেবে আরও উপস্থিত ছিলেন খুলনার কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো. নজরুল ইসলাম, নিরাপদ কৃষি আন্দোলন মঞ্চের সভাপতি বাহলুল আলম, পরিবেশ আইনবিদ সমিতি (বেলা) বিভাগীয় সমন্বয়কারী মাহফুজুর রহমান প্রমুখ।
Comments