রূপনগরের আগুন কাঠামোগত ও অবহেলাজনিত হত্যাকাণ্ড: আইপিডি

মঙ্গলবার রাজধানীর রূপনগরের শিয়ালবাড়িতে গার্মেন্টস ও কেমিক্যাল গোডাউনে আগুন লাগে। ফাইল ছবি: স্টার

রাজধানীর রূপনগরে শিয়ালবাড়িতে আগুনে শ্রমিকদের প্রাণহানির ঘটনাকে কাঠামোগত ও অবহেলাজনিত হত্যাকাণ্ড বলে বিবেচনায় নিয়ে দোষীদের চিহ্নিত করে সর্বোচ্চ শাস্তির দাবি জানিয়েছে ইনস্টিটিউট ফর প্ল্যানিং অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (আইপিডি)। 

আজ বুধবার আইপিডি পরিচালক অধ্যাপক আদিল মুহাম্মদ খান এবং নির্বাহী পরিচালক মোহাম্মদ ড. মোহাম্মদ আরিফুল ইসলামের সই করা বিবৃতিতে এ দাবি জানানো হয়। একইসঙ্গে আহতদের সুচিকিৎসা ও ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের যথাযথ ক্ষতিপূরণের দাবি জানানো হয়েছে।

বিবৃতিতে বলা হয়েছে, বিপজ্জনক কারখানা ও গুদামের অবৈধ স্থাপন, ফায়ার সেফটি সনদ না থাকা, ভবনে অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা না থাকা, অনুমোদনবিহীন শিল্প কার্যক্রম এবং নগর পরিকল্পনা যথাযথভাবে অনুসরণ না করার কারণেই দারিদ্র্যপীড়িত এসব শ্রমিকদের আগুনে পুড়ে অসহায়ভাবে মারা যেতে হলো।

এতে বলা হয়েছে, কারখানা মালিকরা নগর পরিকল্পনা এবং ভবন ও শিল্প নিরাপত্তা সম্পর্কিত সব আইন প্রকাশ্যে অমান্য করেছেন। তারা শ্রমিকদের দারিদ্র্যকে কাজে লাগিয়ে নিরাপদ না থাকা পরিবেশে কাজ করিয়েছেন এবং মৌলিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিশ্চিত করেননি। এজন্য মানুষ হত্যার দায়ে শিল্প মালিকদের যথাযথ শাস্তি নিশ্চিত করার দাবি জানিয়ে আইপিডি।

বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, শ্রমিকদের নিরাপদ কর্মপরিবেশ ও জীবনের নিরাপত্তা নিশ্চিতে দায়িত্বপ্রাপ্ত ছিল জেলা প্রশাসন, রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ, ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তর, কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তর, শ্রম অধিদপ্তর, বিস্ফোরক পরিদপ্তর, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা। এদের প্রত্যেকেই তাদের ওপর রাষ্ট্রীয়ভাবে অর্পিত দায়িত্ব পালন করলে এই অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় এভাবে মানুষ মারা যেত না। ফলে এই ঘটনাকে কাঠামোগত ও অবহেলাজনিত হত্যাকাণ্ড বিবেচনা করে সংশ্লিষ্ট সব সংস্থাগুলোর দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের আইনের আওতায় আনা একান্ত জরুরি। 

'ঢাকা শহরসহ দেশের বিভিন্ন নগর এলাকায় যত্রতত্র এসব শিল্পকারখানা অবাধে গড়ে ওঠবার পেছনে সরকারি পর্যায়ে দুর্নীতির একটি চক্র গড়ে উঠেছে, যা চিহ্নিত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া অতি জরুরি।' 

আইপিডি বলছে, বর্তমান শ্রম আইন অনুযায়ী শিল্প দুর্ঘটনায় একজন শ্রমিকের মৃত্যুর ক্ষতিপূরণ মাত্র দুই লাখ টাকা। যদি এই আইন সংস্কার না করা হয় এবং অবহেলাজনিত মৃত্যুকে হত্যাকাণ্ড হিসেবে স্বীকৃতি না দেওয়া হয়, তবে শ্রমিকদের প্রাণহানির ঘটনা চলতেই থাকবে।

এতে আরও বলা হয়েছে, শিল্প কারখানায় অগ্নিনিরাপত্তা নিশ্চিতে জাতীয় ভবনসংক্রান্ত বিল্ডিং কোড এবং নির্মাণসংশ্লিষ্ট আইন ও বিধি কার্যকর করা জরুরি। ঢাকাসহ সব জেলা ও উপজেলার অবৈধ কেমিক্যাল গুদাম চিহ্নিত করে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নিতে হবে। এছাড়া সিটি করপোরেশন ও পৌরসভাগুলোকে দুর্ঘটনা রোধে আরও দৃঢ় পদক্ষেপ নিতে হবে।

Comments

The Daily Star  | English

Water lily tug-of-war continues

The Election Commission and National Citizen Party remain locked in a heated debate over the party’s choice of electoral symbol, the water lily -- a dispute that began in June..Despite several exchanges of letters and multiple meetings between NCP and the chief election commissioner, other

1h ago