ডেইলি স্টার-প্রথম আলোতে হামলা ও হাদিকে নিয়ে সম্পাদকীয়তে যা লিখল ডন

শরিফ ওসমান হাদির মৃত্যুর খবরে সংঘবদ্ধ উত্তেজিত জনতা দ্য ডেইলি স্টারের ভবনে ঢুকে ভাঙচুর চালায়, এরপর আগুন ধরিয়ে দেয়। তারা ভেতরে আটকে পড়া কর্মীদের উদ্ধারে বাধা দেয় এবং ভবন থেকে মূল্যবান জিনিসপত্র লুট করে নিয়ে যায়। ছবি: স্টার

বাংলাদেশের তরুণ ছাত্রনেতা শরিফ ওসমান হাদি হত্যাকাণ্ড এবং শীর্ষ দুই পত্রিকা—প্রথম আলো ও দ্য ডেইলি স্টারে হামলার ঘটনা নিয়ে সম্পাদকীয় লিখেছে পাকিস্তানের প্রভাবশালী ইংরেজি সংবাদমাধ্যম দ্য ডন।

আজ রোববার প্রকাশিত সম্পাদকীয়তে তারা বলেছে, রাজনৈতিক সহিংসতা ও মবতন্ত্রের কোনো ঠাঁই নেই। হাদির হত্যাকারীদের খুঁজে বের করে শাস্তি দিতে হবে। যারা সহিংসতা উসকে দিচ্ছে, তাদেরও শাস্তির আওতায় আনতে হবে।

দ্য ডেইলি স্টারের পাঠকদের জন্য দ্য ডনের সম্পাদকীয়ের পুরোটা তুলে ধরা হলো:

বাংলাদেশে অস্থিরতা

বাংলাদেশ আবারও সহিংসতার ঝাঁকুনিতে কাঁপছে। সম্প্রতি ঢাকায় গুলিবিদ্ধ এক ছাত্রনেতা সিঙ্গাপুরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যাওয়ার পর দেশজুড়ে পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়ে যায়।

শরিফ ওসমান হাদি গত বছরের গণঅভ্যুত্থানের একজন গুরুত্বপূর্ণ নেতা। ওই আন্দোলনের মাধ্যমেই শেখ হাসিনা ওয়াজেদের সরকার ক্ষমতাচ্যুত হয়। তিনি 'ইনকিলাব মঞ্চ' নামের একটি রাজনৈতিক প্ল্যাটফর্মের মুখপাত্র ও আগামী বছরের ফেব্রুয়ারিতে অনুষ্ঠেয় নির্বাচনের প্রার্থী ছিলেন।

বৃহস্পতিবার তার মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়ার পর বাংলাদেশের বিভিন্ন জায়গায় বিক্ষোভ শুরু হয়, যা দ্রুত নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়। উত্তেজিত জনতা ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগে জড়িয়ে পড়ে। হামলার শিকার হয় দেশের শীর্ষ দুই পত্রিকা—প্রথম আলো ও দ্য ডেইলি স্টার। দ্য ডেইলি স্টারের ভবনে আগুন দেওয়া হলে সেখানে কর্মরত সাংবাদিক ও কর্মচারীরা ভয়াবহ পরিস্থিতিতে পড়েন। পরে নিরাপত্তা বাহিনী তাদের উদ্ধার করে।

স্থানীয় গণমাধ্যমের খবর অনুযায়ী, শনিবার হাদির জানাজায় কয়েক লাখ মানুষ অংশ নেয়। এতে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী নেতা মুহাম্মদ ইউনূসও উপস্থিত ছিলেন। ইনকিলাব মঞ্চ হাদিকে 'ভারতীয় আধিপত্যের বিরুদ্ধে শহীদ' বলে আখ্যায়িত করেছে। অপরদিকে সন্দেহভাজন হত্যাকারী নাকি ভারতে পালিয়ে গেছে।

নির্বাচনের আর মাত্র কয়েক মাস। এই সময়ে অন্তর্বর্তী সরকারের জন্য সবচেয়ে জরুরি হলো দেশকে অরাজকতার দিকে যেতে না দেওয়া। রাজনৈতিক সহিংসতা ও মবতন্ত্রের কোনো ঠাঁই নেই। 

হাদির হত্যাকারীদের খুঁজে বের করে শাস্তি দিতে হবে। একইসঙ্গে সব রাজনৈতিক দলকে গণতান্ত্রিক নিয়ম মেনে শান্তিপূর্ণভাবে প্রতিবাদ করতে হবে। বিশেষ করে গণমাধ্যম ও নাগরিক সমাজকে সন্ত্রাসী হামলা থেকে রক্ষা করা জরুরি। যারা সহিংসতা উসকে দিচ্ছে, তাদেরও শাস্তির আওতায় আনতে হবে।

শেখ হাসিনার শাসনামল ছিল বাংলাদেশের ইতিহাসের একটি অন্ধকার অধ্যায়। একজন নির্বাচিত নেতা থেকে ধীরে ধীরে তিনি কঠোর স্বৈরশাসকে পরিণত হন। সেই দমনমূলক শাসনেরই প্রতিক্রিয়ায় গত বছর গণঅভ্যুত্থান হয়।

বাংলাদেশের এখন নতুন পথে এগোনোর সময়। এজন্য শান্তিপূর্ণভাবে পুরোপুরি গণতন্ত্রে ফেরা খুবই জরুরি। তা না হলে মানুষের সব ত্যাগ ব্যর্থ হয়ে যেতে পারে।

Comments

The Daily Star  | English

Hasina can’t evade responsibility for Khaleda Zia’s death: Nazrul

In 2018, Khaleda walked into jail, but came out seriously ill, he says

4h ago