‘যারা স্বনামে ছাত্র সংসদ নির্বাচনে অংশ নিতে চায়নি, তাদের একটা উদ্দেশ্য অবশ্যই আছে’

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ বলেছেন, 'যারা স্বনামে ছাত্র সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে চায়নি, তার একটা উদ্দেশ্য তো অবশ্যই আছে!'
তিনি বলেন, 'দুএকটি পত্রিকায় দেখলাম যে ছাত্র শিবিরের প্যানেল জয়ী হয়েছে। সাংবাদিক বন্ধুদের উদ্দেশে বলতে চাই, আমার জানামতে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির ডাকসু নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেনি। এই নামে কোনো প্যানেল প্রদান করা হয়েছে কি? না। পত্রিকায়, বিভিন্ন মিডিয়াতে এভাবে আসছে কেন, প্রশ্ন সেখানে।'
'আমরা বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল ব্যানারে দলীয় নামে ঘোষণা দিয়ে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেছি—আমাদের ছাত্র অংশগ্রহণ করেছে। অন্যান্য কয়েকটি দল, এমনকি ইসলামী ছাত্র আন্দোলন নামে করেছে। কেউ কেউ স্বতন্ত্র শিক্ষার্থী ঐক্য নামে করেছে, কেউ সমন্বিত শিক্ষার্থী সংসদ নামে করেছে, বৈষম্যবিরোধী শিক্ষার্থী সংসদ নামে করেছে, অপরাজেয় ৭১, অদম্য ২৪ নামে করেছে। কিন্তু যারা স্বনামে ছাত্র সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে চায়নি, তার একটা উদ্দেশ্য তো অবশ্যই আছে! যারা আজকে জয়ী হয়েছে, তাদের দেখলাম প্যানেলটা ছিল ঐক্যবদ্ধ শিক্ষার্থী জোট,' বলেন তিনি।
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী মহিলা দলের ৪৭তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আজ বুধবার আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
ডাকসু নির্বাচনে জয়ীদের অভিনন্দন জানিয়ে সালাহউদ্দিন বলেন, 'আমি আজকে ব্যক্তিগতভাবে অভিনন্দন জানাই যারা ডাকসু নির্বাচনে জয়ী হয়েছে তাদের। এটাই গণতন্ত্রের রীতি।'
কিছু ত্রুটিবিচ্যুতি নির্বাচনে হয়েছিল উল্লেখ করে সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, 'যেহেতু যাত্রা অনেক বছর পরে হয়েছে, কিছু ত্রুটিবিচ্যুতি ছিল।'
চব্বিশের ছাত্র গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী সময়ে বিএনপি বাংলাদেশের নতুন যাত্রায় রাজনৈতিক সংস্কৃতি পরিবর্তনের সংগ্রাম করছে জানিয়ে তিনি বলেন, 'আমাদের এই রাজনৈতিক সংস্কৃতি পরিবর্তনের সংগ্রাম চালু রাখতে হবে। নতুন রাজনৈতিক সংস্কৃতির ধারা প্রচলন করতে হবে। সেই সংস্কৃতি কী? গণতান্ত্রিক সংস্কৃতি, সহনশীলতার সংস্কৃতি, সহমর্মিতার সংস্কৃতি। সহনশীলতা-সহমর্মিতার মধ্য দিয়ে আমরা পরস্পর রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে প্রতিযোগিতা করব, রাজনীতির চর্চা করব।'
তিনি বলেন, 'যদি আমরা ফ্যাসিবাদের উত্থান-পুনরুত্থান না চাই, ব্যক্তি স্বৈরতান্ত্রিক পদ্ধতি অথবা দলীয় স্বৈরতান্ত্রিক পদ্ধতির উত্থান না চাই, সংসদীয় একনায়কতন্ত্র না চাই এবং একদলীয় রাষ্ট্র ব্যবস্থা কামনা না করি, তাহলে আমাদেরকে নতুন গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক সংস্কৃতির ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে হবে, চর্চা করতে হবে, লালন করতে হবে। এভাবেই আমরা গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক সংস্কৃতির চর্চার মধ্য দিয়ে বিগত দিনের ফ্যাসিবাদী অগণতান্ত্রিক রাজনৈতিক অপসংস্কৃতিকে বিলুপ্ত করতে পারব।'
ডাকসু নির্বাচন জাতীয় রাজনীতিতে কোনো প্রভাব রাখবে কি না জানতে চাইলে আশির দশকের স্মৃতিচারণ করে তিনি বলেন, 'যারা ডাকসুতে নির্বাচিত হয়েছে, বৃহৎ কোনো রাজনীতির মূল দলের ছাত্র সংগঠন না হলে তারা জাতীয় রাজনীতিতে আসতেই পারে না।'
'কারও নাম নেব না। ডাকসুতে ভিপি-জিএস পেয়েছে অনেক নেতা এখনো জাতীয় রাজনীতিতে আছেন, কেউবা হারিয়ে গেছেন। তাদের মধ্যে যারা বৃহৎ রাজনৈতিক সংগঠনের অন্তর্ভুক্ত ছিল, তাদের কেউ কেউ জাতীয় সংসদে এসেছে, বাকিরা এখনো পর্যন্ত লড়াই করছে সংগ্রাম করছে আসার জন্য,' যোগ করেন তিনি।
Comments