সংস্কার শেখাতে হবে না, সংস্কারের ধারক-বাহক-জন্মদাতা বিএনপি: ফখরুল

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, 'সংস্কারের ধারক-বাহক-জন্মদাতা হচ্ছে বিএনপি। বিএনপিকে সংস্কার শেখাতে হবে না। বিএনপি সংস্কারের জন্ম দেয়।'
দলে র স্থায়ী কমিটির প্রয়াত সদস্য আ স ম হান্নান শাহের নবম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে আজ শনিবার বিকেলে গাজীপুরের কাপাসিয়া সরকারি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে আয়োজিত স্মরণ সভায় তিনি এ কথা বলেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, 'আজকে একটা দল একমাত্র ইসলাম ধর্মের দাবিদার বলে দাবি করে, তাই না? সংবিধানে প্রথম বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম সংযোজন করেছিলেন শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান। আল্লাহর ওপর আস্থা-বিশ্বাস স্থাপন করে রাষ্ট্র পরিচালিত হবে এ কথা সন্নিবেশিত করেছিলেন শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান। এখন তারা বলে যে, বিএনপিকে তারা অন্যভাবে চিহ্নিত করতে চায়।'
'আমি এ কথা সে জন্য বললাম, সংস্কারের ধারক-বাহক-জন্মদাতা হচ্ছে বিএনপি। বিএনপিকে সংস্কার শেখাতে হবে না। বিএনপি সংস্কারের জন্ম দেয়। একইভাবে দেখেন, এই ৩১ দফার মধ্য দিয়ে আজকে আমরা নতুন করে মানুষের মধ্যে নতুন আশা জাগিয়ে তুলছি। তারেক রহমান সাহেব তরুণদের জন্য, যুবকদের জন্য, মহিলাদের জন্য ওই ৩১ দফার মধ্যে এমন কতগুলো বিষয় নিয়ে এসেছেন, যা বাংলাদেশের ভাগ্য পরিবর্তন করে দেবে,' যোগ করেন তিনি।
উপস্থিত জনতাকে দেখিয়ে ফখরুল বলেন, 'আজকে আমরা কেউ কি জানি, আমাদের এই যে তরুণ ছেলেরা, বেশিরভাগ বেকার, তাই না? চাকরি নাই, ব্যবসা-বাণিজ্যের সুযোগ নাই। এটাকেও কিন্তু অ্যাড্রেস করে আমাদের তারেক রহমান সাহেব ৩১ দফার মধ্যে নিয়ে এসেছেন। সেখানে তিনি বলেছেন, কীভাবে তিনি তরুণদের জন্য এক কোটি চাকরির ব্যবস্থা করবেন। ঘোষণা দিয়েছেন তিনি। কীভাবে করবেন তার সমস্ত ব্যবস্থা তৈরি করা হচ্ছে, কী পদ্ধতিতে করা হবে সেগুলো করা হচ্ছে। কৃষিতে, শিল্পে, বিনিয়োগে বিভিন্নভাবে প্রতিটি জায়গায় আমরা কী করে নতুন করে আমাদের সন্তানদের জন্য নতুন সংস্থান তৈরি করব সেই ব্যবস্থা করা হচ্ছে।'
কিছু কিছু মানুষ নির্বাচনকে ব্যাহত করার চেষ্টা করছে অভিযোগ তুলে তিনি বলেন, 'আপনারা জানেন যে, অনেক চেষ্টা হয়েছে আগে। এরপরে লন্ডনে একটা বৈঠক হয়েছে, সেই বৈঠকে আমাদের নেতা তারেক রহমান সাহেবের সঙ্গে উপদেষ্টা মণ্ডলীর প্রধান অধ্যাপক ইউনূসের সঙ্গে একটা বৈঠক হয়েছে। সেই বৈঠকে নির্ধারণ হয়েছে যে আগামী বছর, অর্থাৎ আর চার মাস পর একটা নির্বাচন হবে। এই নির্বাচন হবে শুনে দেশের মানুষ আশ্বস্ত হয়েছে যে, নির্বাচনের মধ্য দিয়ে তারা একটা গণতান্ত্রিক পার্লামেন্ট পাবে, গণতান্ত্রিক সরকার পাবে, জনপ্রতিনিধি পাবে। এখন তো কথা বলার কেউ নাই তাদের পক্ষে!'
বিএনপি মহাসচিব বলেন, 'আমাদের দাবি তো একটাই, আমরা ১৫ বছর লড়াই করেছি শুধু এই গণতন্ত্রে ফিরে যাওয়ার জন্য। দেশের মালিক জনগণ, সেই জনগণের ক্ষমতা জনগণকে ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য। তার জন্য আমরা ত্যাগ স্বীকার কম করিনি! আমাদের দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া ছয় বছর কারাগারের অন্তরালে থেকেছেন। আমাদের নেতা এখন পর্যন্ত তিনি বিদেশে অবস্থান করছেন ১৮ বছর ধরে। আমাদের ৬০ লাখ মানুষের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দেওয়া হয়েছে। প্রায় ২০ হাজার মানুষকে হত্যা করা হয়েছে। আমাদের ইলিয়াস আলী এমপিসহ এক হাজার ৭০০ মানুষকে গুম করে হত্যা করা হয়েছে।'
'আমাদের একমাত্র লক্ষ্য আমরা গণতন্ত্র ফেরত চাই, আমরা নির্বাচিত পার্লামেন্ট চাই এবং আমরা নিরপেক্ষ নির্বাচনের মধ্য দিয়ে সেটা চাই। খুব পরিষ্কার করে বলে দিতে চাই এই অন্তর্বর্তী সরকারকে যে, আপনি শতভাগ নিরপেক্ষ থাকবেন। আপনার উপদেষ্টা মণ্ডলীর সদস্যদের মধ্যে কেউ কেউ কোনো কোনো দলের জন্য পক্ষপাতিত্ব করছেন বলে বিভিন্ন জায়গায় অভিযোগ আসছে। আমরা এটা শুনতে চাই না। বাংলাদেশের মানুষ এটা শুনতে চায় না। বাংলাদেশের মানুষ সম্পূর্ণ নিরপেক্ষতা চায় এবং নিরপেক্ষ নির্বাচন চায়,' যোগ করেন তিনি।
Comments