‘সনদ স্বাক্ষরের দিনে জুলাই যোদ্ধাদের রাস্তায় নামতে হয়েছে, এটি জাতির জন্য লজ্জার’

জুলাই অভ্যুত্থানে আহতদের রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি, আইনি সুরক্ষা ও পুনর্বাসনের দাবিতে জুলাই সনদ স্বাক্ষর অনুষ্ঠানের মঞ্চের সামনে অবস্থান নেওয়া 'জুলাই যোদ্ধাদের' পিটিয়ে ও টিয়ারশেল ছুড়ে সরিয়ে দেওয়ার ঘটনাকে 'জাতির জন্য লজ্জাকর' বলে মন্তব্য করেছেন জামায়াতে ইসলামীর আমির শফিকুর রহমান।
তিনি আরও বলেছেন, 'যারা (জুলাই যোদ্ধারা) জালিমের হাতে মার খেয়েছে, আজকে ইন্টেরিম সরকারের পুলিশের হাতে যদি তারা মার খায়, এই লজ্জা আমরা কোথায় রাখব?'
আজ শুক্রবার ঢাকার মিরপুর-১০ নম্বর এলাকায় এক শ্রমিক সমাবেশে এ কথা বলেন জামায়াত আমির।
গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে বিক্ষোভের পর সকালে 'জুলাই শহীদ পরিবার ও আহত যোদ্ধা' ব্যানারে শতাধিক মানুষ সনদ স্বাক্ষর অনুষ্ঠানের মঞ্চের সামনে অবস্থান নেন।
বেলা সোয়া ১টার দিকে মঞ্চের সামনে থেকে তাদের সরিয়ে দেয় পুলিশ। এসময় কয়েকজনকে লাঠিপেটা করতে দেখা যায়। এতে কয়েকজন আহত হন। পরে তাদের হাসপাতালে নেওয়া হয়।
এরপর 'জুলাই যোদ্ধারা' বাইরে গিয়ে বিক্ষোভ করেন এবং কয়েকটি যানবাহন ভাঙচুর করেন। একপর্যায়ে একদল ব্যক্তি আবার মঞ্চের দিকে ঢুকে যান। এসময় পুলিশ আবার তাদের সরিয়ে দেয়।
বিষয়টি নিয়ে শ্রমিক সমাবেশে জামায়াত আমির বলেন, 'আমরা বার বার দাবি করেছি তাদেরকে (জুলাই যোদ্ধা) স্বীকৃতি দিন। সংবিধানে স্বীকৃতি দিন।…কিন্তু না। আমাদের ইন্টেরিম সরকার তাতে ব্যর্থ হয়েছে। আজকে তারা (জুলাই যোদ্ধারা) সংসদের দক্ষিণ প্লাজায় অবস্থান নিয়েছিল।'
'আমরা শুনেছি যে এখন সরকার এই বিষয়টিকে গুরুত্ব সহকারে নিয়েছেন। কিন্তু এর মাঝে কিছু অসুন্দর কাজ হয়েছে কিনা আমি নিশ্চিত নই। যদি হয়ে থাকে আমি ব্যথিত, দুঃখিত, লজ্জিত।'
'জুলাই যোদ্ধাদের দাবি-দাওয়াকে অবশ্যই ভিন্ন মর্যাদার চোখে দেখতে হবে' মন্তব্য করে জামায়াত আমির অন্তর্বর্তী সরকারের উদ্দেশ্যে বলেন, 'আমরা সরকারকে বলব দয়া করে নিজেদের দায়িত্বের প্রতি সুবিচার করুন। আমরা আপনাদের রাস্তায় দেখতে চাই না। আরও অনেকে দাবি-দাওয়া নিয়ে নেমেছেন। অনেকের দাবি-দাওয়া আর জুলাই যোদ্ধাদের দাবি-দাওয়া এক না।'
শফিকুর রহমানের ভাষ্য, দুর্নীতিতে এই সমাজ 'পুরোপুরি ছেয়ে আছে'। তিনি বলেন, 'আগেও ফ্যাসিজমের সময় দুর্নীতি হয়েছে, এখন আরও বিপুল শক্তিতে দুর্নীতি হচ্ছে। কোথাও মানুষের কোনো শান্তি নেই, নিরাপত্তা নেই, ইজ্জত নেই।'
সমাবেশে জুলাই অভ্যুত্থানে শ্রমিকদের অবদান নিয়েও আলোচনা করেন জামায়াত আমির। বলেন, 'আমাদের কাছে হাজারখানেক (নিহত) মানুষের নিশ্চিত ঠিকানা সংরক্ষিত আছে। তাদের মধ্যে ৬০ ভাগ মানুষ শ্রমিক। আর সবাই মিলে ৪০ ভাগ। এই শ্রমিকদের বেশিরভাগ আবার অত্যন্ত সীমিত আয়ের। নুন আনতে পান্তা ফুরায়। কিন্তু নিজের পরিবারের দিকে তারা তাকায়নি। তারা তাদের মূল্যবান জীবন জাতিকে উপহার দিয়ে দুনিয়া থেকে চলে গেছে।'
Comments