রুশ অধিগ্রহণকৃত দনেৎস্কে তীব্র যুদ্ধ

খারকিভে একটি রুশ ট্যাংকের দখল নিয়ে পাল্টা আক্রমণে যাচ্ছে ইউক্রেনীয় বাহিনী। ছবি: রয়টার্স
খারকিভে একটি রুশ ট্যাংকের দখল নিয়ে পাল্টা আক্রমণে যাচ্ছে ইউক্রেনীয় বাহিনী। ছবি: রয়টার্স

পূর্ব ইউক্রেনের দনেৎস্ক অঞ্চলের শহর বাখমাত ও সোলেদার শহর ঘিরে রুশ ও ইউক্রেনীয় বাহিনীর মধ্যে তীব্র যুদ্ধ চলছে। গতকাল রোববার ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি এ দাবি করেন।

আজ সোমবার বার্তা সংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানা গেছে।

এই সপ্তাহের শুরু থেকেই ডনবাসের ২ প্রদেশ দনেৎস্ক ও লুহানস্ক এবং কৌশলগত দিক দিয়ে গুরুত্বপূর্ণ দক্ষিণের খেরসনে যুদ্ধের তীব্রতা বেড়েছে।

গত মাসে রাশিয়া গণভোটের মাধ্যমে ইউক্রেনের ৪ প্রদেশকে নিজেদের দেশের অংশ হিসেবে ঘোষণা করলেও এর ৩টিতেই এখনো যুদ্ধ চলছে। শুধুমাত্র ঝাপোরিঝঝিয়া থেকে যুদ্ধের কোনো সংবাদ পাওয়া যায়নি।

গণভোটের মাধ্যমে ৪টি অঞ্চল দখলের ঘটনাকে কিয়েভ ও তার পশ্চিমা মিত্ররা নাকচ করেছে এবং এই উদ্যোগের প্রতি নিন্দা জানিয়েছে।

জুন ও জুলাই মাসে শিল্প নগরী লিসিচানস্ক ও সেভেরোদনেৎস্কের দখল নেওয়ার পর রুশ সশস্ত্র বাহিনীর অন্যতম লক্ষ্যবস্তু বাখমাত ও সোলেদার শহর।

ইউক্রেনের সশস্ত্র বাহিনীর জেনেরাল স্টাফ জানান, রুশ বাহিনী রোববার ইউক্রেনীয় বাহিনীর বিভিন্ন অবস্থানে গোলাবর্ষণ করেছে। লক্ষ্যবস্তুর মধ্যে ছিল খারকিভ, দনেৎস্ক ও খেরসন।

ইউক্রেনের সামরিক বিশ্লেষক ওলেহ ঝিদানভ জানান, বাখমাতের উত্তরে সবচেয়ে তীব্র আকারের যুদ্ধ চলছে। তিনি নিশ্চিত করেন, গত ২৪ ঘণ্টায় ইউক্রেনের বাহিনী টরস্কে ও স্প্রাইন শহরে রুশদের অগ্রযাত্রা প্রতিহত করেছে।

ঝিদানভ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে জানান, '(রুশরা) টরস্কে ও স্প্রাইনের মধ্য দিয়ে আগাচ্ছে। এসব অঞ্চলের দখল বারবার হাতবদল হচ্ছে। আমাদের নেতৃবৃন্দ সেখানে রুশ আধিপত্যের জবাব দিতে নতুন করে সেনা, কামান ও সামরিক উপকরণ পাঠাচ্ছে।'

রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানায়, রোববার রুশ বাহিনী দনেৎস্ক, খেরসন ও মিকোলাইভ অঞ্চলে ইউক্রেনীয় বাহিনীর এগিয়ে আসার প্রচেষ্টাকে প্রতিহত করেছে। রুশ বাহিনীর দাবি, এই হামলায় ইউক্রেনের উল্লেখযোগ্য ক্ষতি হয়েছে।

রাশিয়া আরও জানিয়েছে, তারা ইউক্রেনের সামরিক ও জ্বালানি লক্ষ্যবস্তুতে নিয়মিত 'দূর-পাল্লার ও নিখুঁতভাবে লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানতে পারে' এরকম অস্ত্র দিয়ে হামলা চালাচ্ছে।

রিবার নামের একটি রুশপন্থী টেলিগ্রাম চ্যানেল জানিয়েছে, ইউক্রেনের সশস্ত্র বাহিনী আবারও বেলগরদে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে।

উড়োজাহাজ হামলা প্রতিরোধকারী বাহিনী এই হামলা ঠেকিয়ে দিতে সমর্থ হলেও বিমানবন্দরের কাছে ২টি বিস্ফোরণ হয়। এতে ৩ জন আহত হন।

এছাড়াও, ইউক্রেনীয় বাহিনীর ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় দনেৎস্কের প্রশাসনিক ভবন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে এ অঞ্চলের রুশ-সমর্থিত প্রশাসন জানিয়েছে।

ক্ষতিগ্রস্ত প্রশাসনিক ভবন। ছবি: রয়টার্স
ক্ষতিগ্রস্ত প্রশাসনিক ভবন। ছবি: রয়টার্স

যুদ্ধক্ষেত্রের সংবাদগুলো রয়টার্স নিরপেক্ষভাবে যাচাই করতে পারেনি।

গতকাল রোববার বেলগরদের একটি সামরিক প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে বন্দুকধারীদের গুলিতে অন্তত ১১ জন নিহত ও ১৫ জন আহত হন। এ বিষয়ে রাশিয়া একটি ফৌজদারি তদন্ত প্রক্রিয়া চালু করেছে।

রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের বরাত দিয়ে রুশ সংবাদ সংস্থা রিয়া জানায়, ইউক্রেন যুদ্ধে অংশ নিতে এক দল স্বেচ্ছাসেবক যখন অস্ত্র প্রশিক্ষণ নিচ্ছিল সে সময় ২ ব্যক্তি এসে ছোট আগ্নেয়াস্ত্র দিয়ে গুলি চালায়।

রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় আক্রমণকারীদের 'সন্ত্রাসী' বলে অভিহিত করে এবং জানায়, তারা সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নের একটি দেশের নাগরিক। ইউক্রেনের কর্মকর্তা ওলেকসি আরেস্তোভিচ জানান, এই ২ ব্যক্তি তাজিকিস্তানের নাগরিক। তিনি দাবি করেন, ধর্ম নিয়ে বাদানুবাদ থেকে গোলাগুলির ঘটনা ঘটে।

Comments

The Daily Star  | English

Challenges in Policing: Police stations buckling under budget strain

The government also supplies police stations with some of the items they request each month, but only a portion of the demand is met.

12h ago