চলমান পরিস্থিতি নিয়ে মার্কিন ও রুশ শীর্ষ কর্মকর্তাদের বিরল ফোনালাপ

লয়েড অস্টিন (বাঁয়ে) ও সের্গেই শোইগু। ছবি: এএফপি
লয়েড অস্টিন (বাঁয়ে) ও সের্গেই শোইগু। ছবি: এএফপি

কৃষ্ণ সাগরে মার্কিন ড্রোন ভূপাতিত হওয়ার পর ওয়াশিংটন ও মস্কোর শীর্ষ কর্মকর্তারা এক বিরল ফোনালাপে অংশ নিয়েছেন। ফোন কলে ওয়াশিংটন মস্কোর বিরুদ্ধে আগ্রাসী আচরণের অভিযোগ তোলে আর মস্কো ক্রিমিয়ার কাছে মার্কিন ড্রোনের উপস্থিতিকে উসকানিমূলক হিসেবে অভিহিত করে।

আজ বৃহস্পতিবার বার্তাসংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে এ বিষয়টি জানা গেছে।

বুধবার ২ দেশের প্রতিরক্ষা মন্ত্রী ও সামরিক প্রধানরা টেলিফোনের মাধ্যমে আলোচনা করেন। বিশ্লেষকদের মতে, ইউক্রেনে আগ্রাসন চালানোর পর এ মুহূর্তে রুশ-মার্কিন সম্পর্ক গত কয়েক দশকের মাঝে সবচেয়ে তলানিতে পৌঁছিয়েছে 

মস্কোর প্রতিরক্ষামন্ত্রী সের্গেই শৌইগু মার্কিন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী লয়েড অস্টিনকে জানান, ক্রিমিয়ার উপকূলে মার্কিন ড্রোনের উপস্থিতি 'উসকানিমূলক' এবং এতে 'কৃষ্ণ সাগরের অঞ্চলে অস্থিরতা বাড়তে পারে'। রুশ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে এ কথা জানানো হয়। এক সময় ইউক্রেনের অংশ হলেও ২০১৪ থেকে ক্রিমিয়াকে নিজ ভূখণ্ড হিসেবে বিবেচনা করে আসছে রাশিয়া।

বিবৃতিতে আরও জানানো হয়, 'এরকম কিছু ঘটানোর (ড্রোন ভূপাতিত করা) ব্যাপারে আমাদের কোনো আগ্রহ নেই, তবে ভবিষ্যতে এরকম কিছু হলে আমরা উপযুক্ত প্রতিক্রিয়া দেখাবো। ২ দেশের উচিৎ সর্বোচ্চ পরিমাণ দায়িত্বজ্ঞান বজায় রেখে কার্যক্রম পরিচালনা করা এবং কোনো সংকট দেখা দিলে সামরিক বাহিনীর মাঝে যোগাযোগ অব্যাহত রাখা।'

লয়েড অস্টিন কলের বিষয়ে বিস্তারিত জানাতে অস্বীকার করেন।

তবে পরবর্তীতে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি জোর দিয়ে জানান, আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী যেসব জায়গায় আকাশযান ওড়ানো সম্ভব, সেখানে যুক্তরাষ্ট্র তাদের কার্যক্রম অব্যাহত রাখতে বদ্ধপরিকর। তিনি রুশ বিমানবাহিনীকে নিরাপদে ও পেশাদারিত্বের সঙ্গে তাদের কার্যক্রম পরিচালনা করার দাবি জানান।

ভ্যালেরি গেরাসিমভ (বাঁয়ে) ও মার্ক মাইলি। ছবি: সংগৃহীত
ভ্যালেরি গেরাসিমভ (বাঁয়ে) ও মার্ক মাইলি। ছবি: সংগৃহীত

যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক বাহিনীর প্রধান ও জয়েন্ট চিফ অব স্টাফস এর সভাপতি জেনারেল মার্ক মাইলি ও অস্টিন পেন্টাগনে আয়োজিত এই সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাব দেন। মার্ক মাইলিও আলাদা করে রাশিয়ার সশস্ত্র বাহিনীর প্রধান ভ্যালেরি গেরাসিমভের সঙ্গে ফোন কলে কথা বলেন।

মার্ক মাইলি সাংবাদিকদের বলেন, 'সম্প্রতি রুশরা সাধারণত যেভাবে তাদের কার্যক্রম পরিচালনা করে, তার চেয়ে বেশি আগ্রাসী ব্যবহারের প্রদর্শনী করছে'। তবে তিনি এখনো নিশ্চিত নন, রুশ যুদ্ধবিমান মার্কিন ড্রোনকে সরাসরি আঘাত করতে চেয়েছিল কী না।

এর আগে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র নেড প্রাইস জানান, রাশিয়ার এ ধরনের আচরণ খুব সম্ভবত উদ্দেশ্যপ্রণোদিত নয়।

রাশিয়া দাবি করেছে, ড্রোনের ঘটনাটি যুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের সরাসরি অংশগ্রহণের প্রমাণ।

ক্রেমলিনের নিরাপত্তা কাউন্সিলের সচিব নিকোলাই পাতরুশেভ বলেন, 'মার্কিনরা বলে যাচ্ছে যে তারা কোন সামরিক কার্যক্রমে অংশ নিচ্ছে না। কিন্তু সাম্প্রতিক এই ঘটনা নিশ্চিত করেছে যে তারা এসব কার্যক্রমে, তথা যুদ্ধে সরাসরি অংশ নিচ্ছে'।

যুক্তরাষ্ট্র এখন পর্যন্ত ইউক্রেনকে বিলিয়ন বিলিয়ন ডলারের সামরিক সহায়তা দিলেও তাদের দাবি, কোনো মার্কিন সেনা সরাসরি যুদ্ধে সম্পৃক্ত নয়। মস্কোর দাবি, তারা পশ্চিমের সমন্বিত শক্তির বিরুদ্ধে মোকাবিলা করতে বাধ্য হচ্ছে। 

কিয়েভ দাবি করেছে, ড্রোন ভূপাতিত করে মস্কো সংঘর্ষের মাত্রাকে আরও সম্প্রসারণের ইঙ্গিত দিয়েছে।

অপরদিকে পূর্বাঞ্চলের শহর বাখমুতে এখনও তীব্র যুদ্ধ অব্যাহত রয়েছে।

Comments

The Daily Star  | English

Victory day today: A nation born out of blood and grit

The tide of war had turned by mid-December in 1971. The promise of freedom was no longer a dream. It had hardened into tangible certainty.

8h ago