মিরাজের মন্থর ইনিংসই কাল হলো বাংলাদেশের? 

Mehidy Hasan Miraz
ব্যাট করার জন্য দারুণ উইকেটে ১০১ বলে ৭৪ করেন মেহেদী হাসান মিরাজ।

স্কোরকার্ড দেখে কারো মনে হতে বাংলাদেশ ভালো পুঁজিই গড়েছিলো। তবে ব্যাটিং নিয়ে প্রশ্ন তোলা কেন? কিন্তু খেলা দেখে থাকলে বোঝা যাবে যাবে উইকেটের কন্ডিশন অনুযায়ী আসলে অন্তত ৩০ রানের ঘাটতি থেকে গিয়েছিলো। শেরফাইন রাদারফোর্ড আর শেই হোপ মিলে সেটা বুঝিয়ে দিয়েছেন। মেহেদী হাসান মিরাজ অবশ্য স্বেটা স্বীকার করতে নারাজ। 

ওয়েস্ট ইন্ডিজের কাছে ওয়ানডেতে গত ৬ বছর ধরে অপরাজেয় হয়ে উঠেছিল, জিতেছিল টানা ১১ ম্যাচ। সেই দুর্বার ছুটে চলার হলো অবসান। বাংলাদেশের ২৯৪ রান ১৪ বল আগে উড়িয়ে ৫ উইকেটে জিতে সিরিজে লিড নিয়েছে ক্যারিবিয়ানরা। 

বাংলাদেশ যে উইকেটের ধরণ ঠিক বুঝতে পারেনি সেটা টসের সময় বলা ভারপ্রাপ্ত অধিনায়ক মিরাজের কথা থেকে স্পষ্ট। টস জিতে ব্যাটিং বেছে নিতে বলেছিলেন ২৮০ রান করলে ম্যাচ জিততে পারবেন তারা। তার প্রত্যাশার চেয়েও আরও ১৪ রান বেশি করে ১৪ বল আগে হারতে হয়েছে।

দলের হয়ে সর্বোচ্চ ৭৪ রান করলেও হারের দায় আসলে মিরাজকেই দিতে হবে। ব্যাট করার জন্য দারুণ উইকেটে ৭৪ রান তুলতে মিরাজ লাগিয়েছেন ১০১ বল। এমন না যে বাংলাদেশ চরম বিপর্যয়ে পড়ে গিয়েছিলো বলেই খোলসবন্দি হয়ে যেতে হয়েছিলো মিরাজকে। 

শুরুটা ভালোই হয়। দুই ওপেনার তানজিদ হাসান তামিম-সৌম্য সরকার মিলে সাবলীল খেলছিলেন, দুজনেই একাধিক বাউন্ডারি পেয়ে উইকেটের পরিস্থিতির বার্তা দিতে পারছিলেন ড্রেসিংরুমে।  সৌম্য ১৮ বলে ১৯ করার পর লিটন দাস ৭ বলে ২ করে ফিরলে সামান্য একটা ধাক্কা। তবে আরেক পাশে তানজিদ চালিয়ে খেলায় সেটা অতটা প্রবল হচ্ছিলো না। 

মিরাজ ক্রিজে এগিয়ে একাধিক জীবন পেলেন, ধুঁকলেন। পরে সময় নিয়ে থিতু হতে গেলেন। তানজিদ ৬০ বলে ৬০ করে ফেরার পর মিরাজ যেন আরেকটু সতর্ক। ফিফটি করতে লাগল ৭১ বল, এরপর আরও ধীরলয়। 

হয়ত কোচদের মেরে খেলার বার্তার পর সম্বিৎ ফিরে তুলে মারতে গিয়ে আউট হন। কিন্তু দুই অঙ্কে যাওয়া বাকি সব ব্যাটার যখন খেলেছেন একশোর বেশি স্ট্রাইকরেটে, মিরাজের স্ট্রাইকরেট সেখানে কেবল ৭৩.২৬! মাঝের ওভারের পুরো রানের গতি তিনি মন্থর করে দেন। ৬ষ্ঠ উইকেটে মাহমুদউল্লাহ (৪৪ বলে ৫০)-জাকের আলি অনিক (৪০ বলে ৪৮) মিলে ৭৪ বলে ৯৬ রান যোগ করার পরও তিনশো স্পর্শ করতে পারেনি বাংলাদেশ। 

নিজেদের ঘাটতির জায়গা বুঝতে পারলে পরে শোধরে নেওয়া যায়। ভারপ্রাপ্ত অধিনায়ক মিরাজ ম্যাচ শেষে উল্টো জানিয়েছেন নিজেদের পুঁজি নিয়ে তারা ছিলেন সন্তুষ্ট, তিনি দায় দিয়েছেন বোলিংকে, 'আমরা পুঁজি নিয়ে সন্তুষ্ট ছিলাম। ২৯৪ রান খুব ভালো পুঁজি এই ধরণের পিচে। তাদেরকে কৃতিত্ব দিতে হয়, বিশেষ করে হোপ ও রাদারফোর্ড। তারা এই উইকেটে জুটি পেয়েছে। বোলারদের জন্য কঠিন দিন। আমরা ভালো শুরু করেছিলাম, নাহিদ, তাসকিন ও তানজিম ভালো শুরু করেছিল প্রথমে। এরপর মাঝের ওভারে আমরা ভালো বল করিনি। উইকেট ফেলতে পারিনি। এটা হতে পারে। আমরা ভুল থেকে শিখব।'

ভুল থেকে মিরাজরা শিখবেন, কিন্তু আসল ভুল ধরতে না পারলে সংকটটা রয়েই যাবে। 

 

Comments

The Daily Star  | English
FY2026 Budget,

How the FY2026 budget can make a difference amid challenges

The FY2026 budget must be more than a mere fiscal statement.

21h ago