ক্রিকেটের উন্নয়নের প্রেমে পড়ে গিয়েছি, তাই লোভটা ছাড়তে পারিনি: বুলবুল

চার মাস আগে বিসিবি সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব নিয়েছিলেন অন্তর্বর্তী সময়ের জন্য। তখন স্পষ্ট করে বলেছিলেন নির্বাচনের ইচ্ছা নেই, এসেছেন 'কুইক টি-টোয়েন্টি' ইনিংস খেলতে। সাবেক অধিনায়ক আমিনুল ইসলাম বুলবুল এরপর বারবার নিজের অবস্থান বদলেছেন। বিতর্কিত ও প্রশ্নবিদ্ধ নির্বাচন জিতে চার বছরের জন্য বিসিবির সভাপতি হয়ে বললেন, তিনি ক্রিকেটের উন্নয়নের প্রেমে পড়ে গেছেন। সেই লোভটা ছাড়তে পারছেন না।
সোমবার ছিলো বিসিবির নির্বাচনের আনুষ্ঠানিক তারিখ। কিন্তু নির্বাচন মূলত হয়ে গিয়েছিল আগেভাগেই। কারা কারা পরিচালক হচ্ছেন সেটা জানতেন প্রায় সকলে। বুলবুল যে আবার সভাপতি হচ্ছেন তা নিয়েও কোন সংশয় ছিলো না।
ঢাকা জেলা ও বিভাগীয় কোটা থেকে কোন প্রতিদ্বন্দ্বিতা ছাড়া পরিচালক নির্বাচিত হওয়ার পর বিন প্রতিদ্বন্দ্বিতায় সভাপতি হন তিনি। পরে গণমাধ্যমের সামনে হাজির হয়ে জানান নিজের প্রতিক্রিয়া।
'কুইক টি-টোয়েন্টি ইনিংস' খেলতে এসে কেন তিনি টেস্ট খেলার পথে হাঁটলেন সেই ব্যাখ্যা করতে গিয়ে বলেন, 'এটাকে একটা জার্নির অংশ করে নিয়েছি। বাংলাদেশ ক্রিকেটের উন্নয়নের প্রেমে পড়ে গিয়েছি। হয়তো শর্ট টার্মের জন্য এসেছিলাম, স্বল্প মেয়াদে থাকাটাই সবসময় পরিকল্পনা ছিল। কিন্তু যখন ট্রিপল সেঞ্চুরি প্রোগ্রামের মাধ্যমে ছোট ছোট কাজ করা শুরু করলাম এবং সাফল্যগুলো দেখতে পেলাম, সেই লোভটা আমি ছাড়তে পারিনি। সেই লক্ষ্যেই রয়ে গেছি, টু সার্ভ মোর ফর মাই কান্ট্রি।'
বিসিবিতে আসার আগে আইসিসির উন্নয়ন কর্মকর্তা হিসেবে চাকরি করতেন বুলবুল। মোটা অঙ্কের বেতনের চাকরি ছেড়ে বিসিবিতে বিনা বেতনে তার অন্তর্বর্তী দায়িত্ব পালন নিয়ে প্রশ্ন ছিলো না। কিন্তু এখন তাকে চার বছর এই পদে থাকতে হবে। তিনি অন্য কোন চাকরি বা ব্যবসার সঙ্গেও যুক্ত নন। তার আয়ের উৎস কী হবে সেটা এক প্রশ্নের জবাবে অপরিষ্কার রেখে দিয়েছেন, 'ক্রিকেট বোর্ডের পদ অনারারি। প্রেসিডেন্টের পদ সবসময় অনারারি ছিল। সেটায় কোনো ব্যতিক্রম হয়নি। সেই ব্যাপারটায় এখনও চিন্তা করি নাই। এখন ভেবেছি, ক্রিকেটটা একটা আমানত হিসেবে আমরা পেয়েছি। চাকরিটা যেহেতু আমি ছেড়ে এসেছি, ওই চাকরির ব্যাপারে এখন আর চিন্তা করছি না। এখন একটাই ফোকাস, সেটা হচ্ছে বাংলাদেশ ক্রিকেট এবং বাংলাদেশ ক্রিকেটকে সার্ভিস দেওয়া।'
বুলবুল যে নির্বাচনে সভাপতি হলেন সেই নির্বাচন বর্জন করে দেশের বেশিরভাগ ক্রীড়া সংগঠক। নির্বাচনে সরকারি হস্তক্ষেপ ও ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগে মনোনয়ন প্রত্যাহার করে নেন তামিম ইকবাল ও তার প্যানেল।
তবে বুলবুল তাদের উদ্দেশ করেও একসঙ্গে কাজ করার আহবান জানিয়েছেন, 'আমি একটা স্টেটমেন্ট দিতে চাই যে, আমরা সকলে একসাথে কাজ করতে চাই বাংলাদেশ ক্রিকেটে। যারা কেউ ক্রিকেট বোর্ডে আছে, কেউ ক্রিকেট বোর্ডে নেই, যারা সমস্ত স্টেকহোল্ডার, সবাইকে আহ্বান জানাব বাংলাদেশ ক্রিকেটে কাজ করতে এবং আমাদেরকে সহায়তা করতে। কে বোর্ডে আছে, কে বোর্ডে নেই, আমরা সকলকে আহ্বান জানাব আমাদের সাথে কাজ করে বাংলাদেশ ক্রিকেটকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য। দরকার হলে আমরা তাদের কাছে যাব এবং যারা এই মুহূর্তে বোর্ডে নেই তাদেরও আমরা আহ্বান জানাব একসাথে এই পথ চলায় সহায়তা করে যেন।'
Comments