লড়াই জমাতে পারল না বাংলাদেশ, সিরিজে এগিয়ে গেল আফগানিস্তান

তাওহিদ হৃদয় ও অধিনায়ক মেহেদী হাসান মিরাজের ফিফটি ছাড়া বাকিরা হতাশ করায় পুঁজি হলো সাদামাটা। তা নিয়ে বোলিংয়ে নেমে সেই অর্থে লড়াই জমাতে পারল না তিন পেসার ও দুই স্পিনার নিয়ে নামা বাংলাদেশ। আফগানিস্তানের কাছে হেরে তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজে পিছিয়ে পড়ল তারা।
বুধবার আবুধাবির শেখ জায়েদ স্টেডিয়ামে প্রথম ওয়ানডেতে ৫ উইকেটে হেরেছে বাংলাদেশ। টস জিতে আগে ব্যাটিংয়ে নেমে ৪৮.৫ ওভারে ২২১ রানে অলআউট হয় তারা। জবাবে ১৭ বল হাতে রেখে ৫ উইকেটে ২২৬ রান তুলে জয় নিশ্চিত করে আফগানরা।
উইকেটে স্পিনারদের জন্য ছিল বেশ সহায়তা। বাংলাদেশের ব্যাটিংয়ের সময়ই তার প্রমাণ মেলে। আফগানিস্তানের রশিদ খান, আল্লাহ মোহাম্মদ গজনফর ও নাঙ্গেয়ালিয়া খারোতে মিলে শিকার করেন ৬ উইকেট। তাদের একাদশে আরও ছিলেন মোহাম্মদ নবী।
বাংলাদেশের একাদশে বিশেষজ্ঞ স্পিনার ছিলেন দুজন, অফ স্পিনার মিরাজ ও বাঁহাতি স্পিনার তানভীর ইসলাম। তারা দুজন রানের চাকা আটকে রাখলেও নিতে পারেন শুধু ২ উইকেট। এছাড়া, অনিয়মিত স্পিনার সাইফ হাসান ও নাজমুল হোসেন শান্ত কয়েকটি ওভার করলেও লাভ হয়নি। বাংলাদেশের পক্ষে বল হাতে সবচেয়ে সফল ছিলেন পেসার তানজিম হাসান সাকিব। তিনি ৩১ রানে নেন ৩ উইকেট। বাকি দুই পেসার তাসকিন আহমেদ ও হাসান মাহমুদ থাকেন উইকেটশূন্য। খরুচে তাসকিন ৮ ওভারে দেন ৫০ রান।
রান তাড়ায় বড় কোনো চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েনি আফগানরা। রহমানউল্লাহ গুরবাজ একটি করে চার ও ছক্কায় করেন ৭৬ বলে ৫০ রান। ওপেনিংয়ে নেমে একপ্রান্ত আগলে ৩২তম ওভার পর্যন্ত টিকেছিলেন তিনি। রহমত শাহ দুটি চারের সাহায্যে খেলেন ৭০ বলে ৫০ রানের ইনিংস। আজমতউল্লাহ ওমরজাইয়ের ব্যাট থেকে আসে ছয়টি চার ও একটি ছক্কায় ৪৪ বলে ৪০ রান। অধিনায়ক হাশমতউল্লাহ শহিদি দায়িত্বশীল ব্যাটিংয়ে অপরাজিত থাকেন ৩৩ রানে। তার ৪৬ বলের ইনিংসে চার দুটি।
তাসকিন ও হাসানকে অনায়াসে খেলে জমে যায় আফগানিস্তানের উদ্বোধনী জুটি। দশম ওভারে ইব্রাহিম জাদরানকে ফিরিয়ে ৫৭ বলে ৫২ রানের জুটি ভাঙেন তানভীর। ক্রিজ ছেড়ে বেরিয়ে খেলার চেষ্টায় বলের লাইন মিস করে স্টাম্পড হন ইব্রাহিম। দ্বিতীয় সাফল্য পেতে বেশিক্ষণ অপেক্ষা করতে হয়নি বাংলাদেশকে। স্লিপে তানজিদ হাসানের দুর্দান্ত ক্যাচে তানজিমের শিকার হন ধুঁকতে থাকা সেদিকউল্লাহ আতাল।
৬ রানের মধ্যে ২ উইকেট হারানোর ধাক্কা সামলে দলকে টানতে থাকেন গুরবাজ ও রহমত। দ্রুত রান আনার চাপ না থাকায় সিঙ্গেল-ডাবল নিয়ে খেলেন তারা। শুরুতে খোলসবন্দি থাকা রহমত আগে ফিফটিতে পৌঁছান ৬৮ বলে। গুরবাজ হাফসেঞ্চুরি পূর্ণ করেন ৭৪ বলে। পরের বলেই সাজঘরে ফেরেন রহমত। আক্রমণে ফেরা তানজিমের বল ঠিকঠাক পুল করতে না পেরে ধরা পড়েন শর্ট মিড উইকেটে। থামে ১১১ বলে ৭৮ রানের জুটি।
পরের ওভারে মিরাজের অসাধারণ ডেলিভারিতে বোকা হয়ে গুরবাজ হন বোল্ড। ৫ বলের মধ্যে দুই থিতু ব্যাটারকে আউট করায় আশা জাগে বাংলাদেশের। কিন্তু তা ভেস্তে দেয় শহিদি ও ওমরজাইয়ের ৭০ বলে ৫৯ রানের জুটি। মুখোমুখি হওয়া দ্বিতীয় বলে রিভিউ নিয়ে কট বিহাইন্ড থেকে বেঁচে যাওয়া ওমরজাই ছিলেন মারমুখী মেজাজে। অন্যপ্রান্তে শহিদি ছিলেন শান্ত। তারা ধীরে ধীরে ম্যাচ থেকে ছিটকে দেন বাংলাদেশকে।
তানজিমের স্লোয়ারে ওমরজাই যখন ক্যাচ দেন, তখন আফগানিস্তান জয় থেকে ছিল মাত্র ২৭ রান দূরে। এরপর শহিদি ও নবী আর কোনো সুযোগ দেননি। সাইফকে লং অফ দিয়ে ছক্কা মেরে খেলা শেষ করেন নবী। ম্যাচসেরার পুরস্কার যায় অলরাউন্ড পারফরম্যান্স দেখানো ওমরজাইয়ের ঝুলিতে। দারুণ ব্যাটিংয়ের আগে বল হাতে ৪০ রানে ৩ উইকেট পান তিনি।
বাংলাদেশের ইনিংসের প্রতিবেদন পড়ুন এখানে:
Comments