ওয়েস্ট ইন্ডিজকে গুঁড়িয়েই সিরিজ জিতল বাংলাদেশ 

Bangladesh cricket team
ছবি: ফিরোজ আহমেদ

আগের ম্যাচে সুপার ওভার রোমাঞ্চে হতাশায় পুড়তে হয়েছিলো বাংলাদেশকে। সিরিজ নির্ধারণী ম্যাচে আর সফরকারী দলকে লড়াই জমাতে দেননি মেহেদী হাসান মিরাজরা। দুই ওপেনার সৌম্য সরকার ও সাইফ হাসানের ঝলকে পাওয়া বিশাল পুঁজি নিয়ে স্পিনাররা কাজ সেরেছেন অনায়াসে। খেলা শেষ হয়ে যায় প্রায় ২০ ওভার আগেই। 

বৃহস্পতিবার মিরপুর শেরে বাংলা ক্রিকেট স্টেডিয়ামে তৃতীয় ওয়ানডেতে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে বাংলাদেশ জিতেছে ১৭৯ রানের বিশাল ব্যবধানে। রানের দিক থেকে এটা বাংলাদেশের দ্বিতীয় বড় জয়। আগে ব্যাট করে সৌম্যের ৮৬ বলে ৯১ ও সাইফের ৭২ বলে ৮০ রানে ভর করে ২৯৬ রান তুলে বাংলাদেশ। জবাবে নাসুম আহমেদ, তানভির ইসলামদের স্পিনে হাবুডুবু খেয়ে ক্যারিবিয়ানরা গুটিয়ে যায় স্রেফ ১১৭  রানে। চারজন স্পিনার এত ভালো বল করেছেন যে একমাত্র পেসার হিসেবে খেলা মোস্তাফিজুর রহমানকে এক ওভারও বল করতে হয়নি। কোন আন্তর্জাতিক ম্যাচে এমন অভিজ্ঞতা তার প্রথম।

সিরিজ জিতলেও ওয়ানডে র‍্যাঙ্কিংয়ে দশেই থাকছে বাংলাদেশ। ওয়েস্ট ইন্ডিজকে হোয়াইটওয়াশ করতে পারলে নয়ে উঠতে পারতেন মেহেদী হাসান মিরাজরা। 

মন্থর ও টার্নিং উইকেটে ২৯৭ রানের বড় লক্ষ্য তাড়ায় পঞ্চম ওভারে নাসুমের স্পিনে আঘাত পায় সফরকারীরা। ওপেনার আলিক আথানেজকে এলবিডব্লিউতে ফেরান নাসুম। সুইপ করতে গিয়ে লাইন মিস করে কাটা বাঁহাতি ব্যাটার। তিনে নামা আকিম আগুস্তকে ৩ বলের বেশি টিকতে দেননি নাসুম, তিনিও হয়েছেন এলবিডব্লিউ। 

আরেক ওপেনার ব্র্যান্ডন কিং ১৭ বলে ১৮ করে নাসুমের বলে বোল্ড হয়ে ফিরলে তলানির দিকে হাঁটতে থাকে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। অধিনায়ক শেই হোপ দলটিকে বাঁচাতে পারতেন। তানভিরের বলে তিনি অনেকটা উইকেট ছুঁড়ে দিয়ে বিদায় নিলে ৪৬ রানে ৪ উইকেট হারিয়ে ফেলে ক্যারিবিয়ানরা। 

সেই চাপ ঝেড়ে আর দাঁড়াতে পারেনি তারা। বিস্ফোরক ব্যাটার শেরফাইন রাদারফোর্ড পুরো সিরিজের পর এদিনও হন ব্যর্থ, রোস্টন চেজ রানের খাতাই খুলতে পারেননি। দুজনকেই ছাঁটেন রিশাদ হোসেন।

শেষ দিকে আকিল হোসেন ১৫ বলে ২৭ করে কেবল হারের ব্যবধান কমিয়েছেন। ১১ রানে ৩ উইকেট নিয়ে বাংলাদেশের সফল বোলার নাসুম। রিশাদ ৩ উইকেট পান ৫৪ রান দিয়ে। 

দুপুরে টানা তৃতীয় টস জিতে ব্যাটিং বেছে নেওয়া বাংলাদেশের ইনিংসের গল্পটা সৌম্য-সাইফকে ঘিরে। আগের দুই ম্যাচের ঠিক বিপরীতে গিয়ে দারুণ শুরু আনেন তারা। উইকেটে টার্ন-বাউন্স থাকলেও দুজনে থিতু হয়ে যান দ্রুত। পরে চার-ছক্কায় রান বাড়াতে থাকেন অনায়াসে। মাঝের ওভারে স্ট্রাইক রোটেশনও ছিলো দেখার মতন। 

রানে-বলে ফিফটি স্পর্শ করে সৌম্য আরও হাত খুলেন, সাইফ তার ছক্কা মারার দক্ষতার ছাপ দেখাতে থাকেন। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ওয়ানডেতে সর্বোচ্চ ওপেনিং জুটির রেকর্ড হয়ে যায়। ২৫.২ ওভারের ১৭৬ রানের জুটিতে রেকর্ড হয়েছে আরও। মিরপুরের মাঠ দেখেছে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ওপেনিং জুটি, একদিনের ক্রিকেটে বাংলাদেশের হয়েও এটি দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ওপেনিং জুটি। তবে ওপেনারদের ঠিক বিপরীত খেলেছেন বাকিরা। পরের ২৫ ওভারে বাংলাদেশ যোগ করে ১২০ রান, হারায় ৭ উইকেট। বল নরম হয়ে এলে মিরপুরের এই পিচে রান করা যে কত কঠিন দেখা যায় প্রত্যেকের খেলায়। 

ইনিংস বিরতিতেই ম্যাচের গতিপথ আসলে নির্ধারিত হয়ে গিয়েছিলো। ওয়েস্ট ইন্ডিজ যদি ভালো শুরু পেত তাহলে হয়ত লড়াই জমতে পারত। কিন্তু শুরুর দশ ওভারেই দলটি ম্যাচ থেকে ছিটকে পরে। বাকিটা সময় তাদের হারের ব্যবধান কত হবে তা নিয়েই ছিলো মূল আলোচনা। 

 
 

Comments

The Daily Star  | English

Hasina can’t evade responsibility for Khaleda Zia’s death: Nazrul

In 2018, Khaleda walked into jail, but came out seriously ill, he says

3h ago