হংকংয়ের বিপক্ষে গুরুত্বপূর্ণ জয়ের লক্ষ্য বাংলাদেশের

ছবি: ফিরোজ আহমেদ

স্বপ্ন বাঁচানোর লড়াইয়ে আজ মাঠে নামছে বাংলাদেশ ফুটবল দল। এশিয়ান কাপ বাছাইপর্বে টিকে থাকার লড়াইয়ে লাল-সবুজের সৈনিকদের প্রতিপক্ষ হংকং-চায়না। রাত ৮টায় বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে শুরু হবে এই মর্যাদার ম্যাচ, যেখানে তিন পয়েন্টই হতে পারে আশা ও হতাশার সীমারেখা।

হাভিয়ের ক্যাবরারার শিষ্যদের জন্য এ যেন এক 'করো বা মরো; পরীক্ষা। আগের ম্যাচে ঘরের মাঠে সিঙ্গাপুরের বিপক্ষে ২-১ গোলে হারের ক্ষত এখনও তাজা। অথচ তার আগে ভারতের মাটিতে অনুপ্রেরণাদায়ক গোলশূন্য ড্র করে তারা ফিরিয়েছিল আত্মবিশ্বাসের আলো। বিদেশে খেলা মানসম্পন্ন ফুটবলার হামজা চৌধুরী, শমিত সোম ও ফাহামেদুল ইসলামের যোগে দলটা হয়েছিল আরও ভারসাম্যপূর্ণ, কিন্তু কাঙ্ক্ষিত ফল আসেনি।

সেই ব্যর্থতার দায়ে সমালোচিত হন স্প্যানিশ কোচ কাবরেরা। একাদশ বাছাই ও কৌশলগত সিদ্ধান্তে তার পরিকল্পনা নিয়ে উঠেছিল প্রশ্ন। কিন্তু আজ রাতে তিনি ফিরতে চান নতুন রূপে, নতুন কৌশলে, সংশোধিত মানসিকতায়।

অন্যদিকে হংকং-চায়না তাদের শক্তি ঠিক সেখানেই যেখানে বাংলাদেশের দুর্বলতা। রক্ষণে শৃঙ্খলা, পাল্টা আক্রমণে গতি, আর শারীরিক লড়াইয়ে নির্ভীকতা। দলটিতে যুক্ত হয়েছে ব্রাজিল, স্পেন, ক্যামেরুন, নাইজেরিয়া, ফ্রান্স, জাপান ও স্কটল্যান্ডের স্বাভাবিকীকৃত খেলোয়াড়, যারা হংকংকে দিয়েছে এক আন্তর্জাতিক মিশ্রণ, এক নতুন মাত্রা।

প্রাক-ম্যাচ সংবাদ সম্মেলনে কাবরেরার কণ্ঠে ছিল আত্মসমালোচনার সুর, তবে সেখানেই লুকিয়ে ছিল অদম্য লড়াকু মনোভাবও, 'হ্যাঁ, সিঙ্গাপুরের বিপক্ষে কোনো পয়েন্ট না পাওয়া হতাশার। তবুও সেই ম্যাচে কিছু ভালো মুহূর্ত ছিল। ভুলগুলো থেকে শিক্ষা নিতে হবে। একই ভুল করলে জয়ের মুখ দেখা অসম্ভব হবে।'

হংকংয়ের স্বাভাবিকীকৃত খেলোয়াড়দের প্রভাব নিয়ে প্রশ্নের জবাবে কাবরেরা শান্তভাবে বলেন, 'গ্রুপ 'সি'-এর দলগুলো প্রায় একই মানের, শুধু খেলার ধরনে ভিন্নতা আছে। হংকং অনেকটা সিঙ্গাপুরের মতো দল। তাদের দলে বিদেশি বংশোদ্ভূত খেলোয়াড় থাকলেও মূল পার্থক্যটা হয় মনোযোগে, আমাদের সেটাই ধরে রাখতে হবে।'

গত ১০ ম্যাচে কাবরেরার অধীনে বাংলাদেশের পরিসংখ্যান খুব আশাব্যঞ্জক নয় -জয় তিনটি, ড্র দুটি, আর হার পাঁচটি। এবারও দল নির্বাচনে তাকে পড়তে হচ্ছে কঠিন সমীকরণে।

অভিজ্ঞ সেন্টার-ব্যাক তপু বর্মন ইনজুরিতে অনিশ্চিত। ফরোয়ার্ড আল আমিন পেশিতে টান নিয়ে ভুগছেন, তার জায়গায় দেখা যেতে পারে তরুণ আরমান ফয়সাল আকাশকে। কানাডা প্রবাসী শমিত দলের সঙ্গে অনুশীলন করেছেন মাত্র একদিন।

তবুও কাবরেরার চোখে জ্বলছে আশার শিখা, 'হামজা, শমিত, ফাহামেদুল আর জায়ান দলের গভীরতা বাড়িয়েছে। এখন সবকিছু নির্ভর করছে মাঠের লড়াইয়ের ওপর। এটি বাঁচা-মরার ম্যাচ, আমরা সর্বশক্তি দিয়েই খেলব।'

আজ রাতেই জানা যাবে, লাল-সবুজেরা নিজেদের সীমা ছুঁতে পারে কি না, নাকি ইতিহাসের পাতায় আরেকটি অপূর্ণতার গল্প যোগ হবে। একুশজন তরুণ যোদ্ধা প্রস্তুত, আর গোটা জাতি অপেক্ষায়, ঢাকার আলোয় জেগে উঠবে কি বাংলাদেশ ফুটবলের নতুন ভোর?

Comments

The Daily Star  | English

Farewell

Nation grieves as Khaleda Zia departs, leaving a legacy of unbreakable spirit

8h ago