কিংসের সঙ্গে সম্পর্কচ্ছেদের ঘোষণা দিলেন তারিক কাজী

নীরবতা ভেঙে অবশেষে মুখ খুললেন জাতীয় দলের নির্ভরযোগ্য ডিফেন্ডার তারিক কাজী। শুক্রবার নিজের ফেসবুক পোস্টে বসুন্ধরা কিংসের সঙ্গে সম্পর্কচ্ছেদের ঘোষণা দিয়ে তিনি। বকেয়া বেতনের কারণেই চুক্তি আইনগতভাবে বাতিল করেছেন বলে জানান এই ডিফেন্ডার।

শুক্রবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে এক পোস্টে ২৫ বছর বয়সী এই ফুটবলার লিখেছেন, 'আজ আমি বকেয়া বেতনের কারণে আইনগতভাবে বসুন্ধরা কিংসের সঙ্গে আমার চুক্তি বাতিল করেছি।'

২০১৯ সালে ফিনল্যান্ড থেকে বাংলাদেশের নাগরিকত্ব গ্রহণ করে বসুন্ধরা কিংসে যোগ দেন তারিক। এরপর থেকে তিনি ক্লাব ও জাতীয় দলের রক্ষণভাগের অন্যতম ভরসা হয়ে ওঠেন। কিংসের হয়ে চারটি লিগ শিরোপা জিতেছেন এই ফিনল্যান্ড-জন্ম নেওয়া ফুটবলার। জাতীয় দলের জার্সিতে ৩৩ ম্যাচে প্রতিনিধিত্ব করেছেন তিনি।

তবে সম্প্রতি আর্থিক অনিশ্চয়তা ও বেতন অনিয়মের সঙ্গে লড়াই করে যাচ্ছিলেন এই ডিফেন্ডার। ক্লাব কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও সাংবাদিকরা কোনো প্রতিক্রিয়া পাননি।

নিজের বিবৃতিতে তারিক জানান, দীর্ঘ এক বছরের অনিশ্চয়তা, বিলম্বিত বেতন আর মানসিক চাপ তাকে এই সিদ্ধান্তে পৌঁছে দিয়েছে।

তিনি লেখেন, 'একজন ফুটবলারের জীবনে এমন কিছু মুহূর্ত আসে, যখন নীরবতা বহন করা দুঃসহ হয়ে ওঠে। এক বছরেরও বেশি সময় আমি অনিয়মিত ও বিলম্বিত বেতন পেয়েছি, এই অনিশ্চয়তার সময়টা ছিল পেশাগত ও মানসিকভাবে কষ্টকর। এটি শুধু আর্থিক সমস্যা নয়, ছিল এক মানসিক ভার, যা পেশাদার খেলোয়াড়রা নীরবে সহ্য করে।'

তবে ক্লাব ছাড়ার সময়ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন এই ডিফেন্ডার। সতীর্থ, কোচ অস্কার ব্রুজন, ভ্যালেরিউ টিটা ও মারিও গোমেজসহ বসুন্ধরা কিংসের সমর্থকদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন তিনি। জাতীয় দলের প্রতিও রেখেছেন গভীর ভালোবাসা।

তারিক লিখেছেন, 'সবুজ-লাল জার্সি পরে মাঠে নামার প্রতিটি মুহূর্ত আমার কাছে পবিত্র মনে হয়েছে। সেসব সময়ে সব কষ্ট ভুলে যেতাম, কারণ বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করার অনুভূতি মনে করিয়ে দিত, ফুটবল এখনও তার বিশুদ্ধ রূপে বেঁচে আছে।'

বাংলাদেশি ফুটবলে স্বচ্ছতা ও ন্যায্যতার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি। উল্লেখ করেছেন, স্থানীয় অনেক খেলোয়াড় এখনও একই ধরনের আর্থিক অবহেলার শিকার।

শেষে তারিক কাজী লিখেছেন, 'এই বিদায় রাগ থেকে নয়, সত্য, মর্যাদা আর কৃতজ্ঞতা থেকে এসেছে। আমি বসুন্ধরা কিংস ছাড়ছি গর্ব নিয়ে, কষ্ট নিয়ে নয়। সব পরিস্থিতি সত্ত্বেও, আমার হৃদয় ভরপুর সেই বিশেষ মুহূর্তগুলোতে, যা সারাজীবন বয়ে বেড়াব। আমার গল্প এখানেই শেষ নয়, এটি চলবে।'

Comments

The Daily Star  | English

Hasina can’t evade responsibility for Khaleda Zia’s death: Nazrul

In 2018, Khaleda walked into jail, but came out seriously ill, he says

2h ago