অপেক্ষমাণ তালিকা থেকে নিয়োগে প্রার্থীকে সময় দিতে হবে ১০ দিন

জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়
জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়

সরকারি চাকরিতে উত্তীর্ণ প্রার্থীদের মধ্যে কেউ যদি যোগদান না করেন, তবে মেধা অনুযায়ী অপেক্ষমাণ তালিকায় থাকা প্রার্থীদের যোগদানের জন্য ১০ কার্যদিবস সময় দিয়ে নিয়োগপত্র দিতে হবে - এমন বিধান যুক্ত করে নতুন একটি পরিপত্র জারি করেছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়।

বিদ্যমান নিয়ম অনুযায়ী, সরকারি চাকরিতে উত্তীর্ণ প্রার্থীদের সুপারিশের পাশাপাশি প্রতিটি পদের বিপরীতে ১:২ অনুপাতে অপেক্ষমাণ প্রার্থী রাখতে হয়। অপেক্ষমাণ তালিকায় সংশ্লিষ্ট কোটার যোগ্য প্রার্থী না পাওয়া গেলে মেধার ভিত্তিতে অপেক্ষমাণ তালিকা তৈরি করতে হয়।

তবে, বিসিএস ক্যাডার ও নন-ক্যাডার নিয়োগের ক্ষেত্রে এই পরিপত্র প্রযোজ্য নয়।

জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, অপেক্ষমাণ তালিকা থেকে নিয়োগের ক্ষেত্রে কত দিন সময় দিয়ে প্রার্থীকে জানাতে হবে, তা পুরনো পরিপত্রে সুনির্দিষ্টভাবে উল্লেখ ছিল না। নতুন পরিপত্রে ১০ দিন সময় হাতে রেখে রেজিস্ট্রি ডাকযোগে পত্র পাঠানোসহ ফোন, এসএমএস এবং ই-মেইলের মাধ্যমেও অবহিত করার নিয়ম অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। এর ফলে অপেক্ষমাণ তালিকার প্রার্থী নিশ্চিতভাবেই তাঁর চাকরির সুযোগ আসার খবর জানতে পারবেন।

পরিপত্রে বলা হয়েছে, 'প্রার্থীকে মোবাইল ফোন কল, এসএমএস, ই-মেইল (প্রযোজ্য ক্ষেত্রে)-এর মাধ্যমে তাৎক্ষণিক অবহিত করার পাশাপাশি তার স্থায়ী ঠিকানায় রেজিস্ট্রি পত্রযোগে কমপক্ষে ১০ (দশ) কার্যদিবসের সময় দিয়ে নিয়োগপত্র দিতে হবে।'

গতকাল সোমবার জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের বিধি অনুবিভাগ থেকে নতুন পরিপত্র জারি করে সব মন্ত্রণালয় ও বিভাগের সচিবের কাছে পাঠানো হয়েছে। এর মাধ্যমে ২০২৩ সালের ১৭ এপ্রিল জারি করা এ সংক্রান্ত পরিপত্রটি বাতিল করা হয়েছে।

নতুন বিধান যুক্ত করার কারণ জানতে চাইলে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের বিধি অনুবিভাগের একজন কর্মকর্তা আজ মঙ্গলবার ডেইলি স্টারকে বলেন, 'অতীতে অপেক্ষমাণ প্রার্থীদের নিয়োগপত্র নিয়ে বহু অভিযোগ পাওয়া গেছে। ভবিষ্যতে যাতে এমন অভিযোগ না ওঠে, তা নিশ্চিত করার জন্য পরিপত্রে এ বিষয়টি পরিষ্কার করা হয়েছে।'

ওই কর্মকর্তা আরও বলেন, 'অপেক্ষমাণ তালিকায় প্রথম প্রার্থী নিয়োগপত্র পেয়েছেন কয়েক মাস পর, অন্যদিকে তার পরের ক্রমিক নম্বরে থাকা ব্যক্তি চাকরিতে যোগ দিয়ে ফেলেছেন—এমন অভিযোগও পাওয়া গেছে।'

পরিপত্রটি সরকারি সব দপ্তর, পরিদপ্তর, অধিদপ্তর, স্বায়ত্তশাসিত সংস্থা, সংবিধিবদ্ধ সংস্থা এবং করপোরেশনের জন্য প্রযোজ্য বলে উল্লেখ করা হয়েছে। নতুন নিয়মের বিষয়ে পরিপত্রে বলা হয়েছে, 'সরকারি চাকরিতে কোটা পদ্ধতি পরিবর্তন হওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে পরিপত্র সংশোধন করে নতুন সিদ্ধান্ত দিয়েছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়।'

পরিপত্র অনুযায়ী, 'অপেক্ষমাণ তালিকা সংরক্ষণের মেয়াদ হবে প্রকাশিত বিজ্ঞপ্তির প্রথম নিয়োগের তারিখ থেকে এক বছর, অথবা শূন্য পদ পূরণের জন্য পরবর্তী নিয়োগ বিজ্ঞপ্তির মধ্যে যেটি আগে ঘটবে।'

পরিপত্রে আরও বলা হয়েছে, অপেক্ষমাণ তালিকা থেকে সুপারিশপ্রাপ্ত প্রার্থীদের জ্যেষ্ঠতা প্রথম নিয়োগপ্রাপ্ত প্রার্থীদের পরে, অর্থাৎ তাদের নিয়োগের তারিখ থেকে নির্ধারিত হবে।

মন্তব্য জানতে চাইলে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব ড. মোখলেস উর রহমান বলেন, 'চাকরিপ্রার্থীরা অনেক কষ্ট করে উত্তীর্ণ হন। সরকারি দপ্তরের ভুলের কারণে যাতে কেউ তার অধিকার থেকে বঞ্চিত না হন, তা নিশ্চিত করতে পরিপত্রটি জারি করা হয়েছে। আশা করি, বেকারদের জন্য এটি একটি ভালো পদক্ষেপ হয়েছে।'

Comments

The Daily Star  | English

Farewell

Nation grieves as Khaleda Zia departs, leaving a legacy of unbreakable spirit

8h ago