‘রাষ্ট্রবিরোধী কর্মকাণ্ডের’ অভিযোগের প্রমাণ মেলেনি, ঢাবি শিক্ষার্থীকে ছেড়ে দিলো পুলিশ

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের লোগো। প্রতীকী ছবি: স্টার
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের লোগো। প্রতীকী ছবি: স্টার

'রাষ্ট্রবিরোধী কর্মকাণ্ড এবং জঙ্গি সন্দেহে' ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থীকে গতকাল রাতে থানায় সোপর্দ করে হলের প্রাধ্যক্ষ বিল্লাল হোসেন। তবে পর্যাপ্ত তথ্য প্রমাণ না পাওয়ায় এক রাত থানায় রাখা পর আজ শুক্রবার দুপুরে ওই শিক্ষার্থীকে ছেড়ে দিয়েছে শাহবাগ থানা পুলিশ।

গতকাল বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১১টায় রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী মেফতাহুল হোসেন আল মারুফকে থানায় সোপর্দ করা হয়। 'শিবির ও জঙ্গী' আখ্যা দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের মুক্তিযোদ্ধা জিয়াউর রহমান হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ বিল্লাল হোসেন ওই শিক্ষার্থীকে প্রক্টরিয়াল টিমের মাধ্যমে থানায় পাঠান।

জানতে চাইলে শাহবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মওদূত হাওলাদার দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'আপাতত তার বিভাগের এক শিক্ষকের জিম্মায় দিয়ে তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। হলের প্রভোস্ট  যে অভিযোগে তাকে থানায় সোপর্দ করেছে সেটি আমরা যাচাই-বাছাই করেছি। এ মুহূর্তে ফৌজদারি মামলা নেওয়ার মতো পর্যাপ্ত কোনো কিছু না পাওয়ায় তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। পরে যদি প্রয়োজন হয়, আবার ডাকা হবে।'

 

অভিযোগের বিষয়ে ঢাবি শিক্ষার্থী মেফতাহুল হোসেন আল মারুফ দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'আমাদের বিভাগের নিজস্ব মেসেঞ্জার গ্রুপে একটা কথার পরিপ্রেক্ষিতে আমি লিখেছি যে, ২০০৫ সালে সারাদেশে সিরিজ বোমা হামলা চালিয়েছিল জামায়াতুল মুজাহিদিন নামের একটি সংগঠন বাংলা ভাইয়ের নেতৃত্বে৷ ওই হামলার জন্য যদি বিএনপি-জামায়াত দায়ী হয়, তাহলে ২০০৮ সাল থেকে এখন পর্যন্ত যতগুলো জঙ্গী হামলা হয়েছে, সবগুলোর জন্য আওয়ামী লীগ সরকার দায়ী হওয়ার কথা।'

'এটা একটি রাজনৈতিক আলাপ থেকে বলেছি, যা ছিল অভ্যন্তরীণ আলোচনা৷ পরে দেখি গ্রুপের একটি স্ক্রিনশর্ট আমাদের হলের ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক হাসিবুলের কাছে কেউ একজন পাঠিয়েছেন৷ এরপর হলের প্রাধ্যক্ষ আমাকে ডেকে নিয়ে বলছেন যে, আমি নাকি রাষ্ট্রবিরোধী ও জঙ্গী সংগঠনের সঙ্গে জড়িত৷ অথচ এগুলোর কোনোটিই সত্য নয়৷ আমার বিরুদ্ধে কেউ কোনো লিখিত অভিযোগও দেয়নি৷ আমার মেসেজটি দেখেই দোষী বানিয়ে দিলো৷ কোনো ধরনের তদন্ত না করেই এবং আমার কোনো কথাই না শুনেই আমাকে থানায় পাঠিয়ে দিলো।'

বিভাগের অভ্যন্তরীণ মেসেঞ্জার গ্রুপের ওই স্ক্রিনশর্টটি দ্য ডেইলি স্টারের হাতে এসেছে৷ তাতে মেফতাহুলের বক্তব্যের সত্যতা পাওয়া গেছে৷

 

প্রভোস্টের পদত্যাগ দাবি ও ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে হামলার অভিযোগ

জিয়া হলের আবাসিক শিক্ষার্থী মেফতাহুল হোসেন আল মারুফকে অন্যায়ভাবে হয়রানি এবং সম্মানহানি করার দায়ে হল প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ বিল্লাল হোসেনের পদত্যাগ দাবি করেছেন ছাত্র অধিকার পরিষদের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নেতাকর্মীরা। 

বৃহস্পতিবার দুপুরে এ ঘটনার প্রতিবাদে ক্যাম্পাসে মিছিল ও প্রতিবাদ সমাবেশ করেছে ছাত্র অধিকার পরিষদ।  রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে আয়োজিত ওই সমাবেশ থেকে সংগঠনটির নেতাকর্মীরা প্রভোস্টের পদত্যাগ দাবি করেন। 

পাশপাশি এ ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও ক্ষোভ জানিয়ে গণমাধ্যমে একটি বিবৃতি দিয়েছে সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট।

এদিকে এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে হামলার অভিযোগ করেছে ছাত্র অধিকার পরিষদ।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সহ-সভাপতি আসিফ মাহমুদ দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'দুপুরে আমাদের কয়েকজন নেতাকর্মী ওই শিক্ষার্থীকে ছাড়িয়ে আনতে থানায় গেলে সেখান থেকে ফেরার পথে ছাত্রলীগের কিছু নেতাকর্মী ছাত্র অধিকার পরিষদের নেতাদের ওপর অতর্কিত হামলা চালিয়েছে৷ দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের কবি নজরুল ইসলামের সমাধি সৌধের পাশে রাস্তায় এ ঘটনা ঘটে। এতে ৩ জন আহত হয়৷ তাদের চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে।'

Comments

The Daily Star  | English

Dozens of zombie firms still trading as if nothing is wrong

Nearly four dozen companies have been languishing in the junk category of the Dhaka Stock Exchange (DSE) for at least five years, yet their shares continue to trade on the country’s main market and sometimes even appear among the top gainers. 

19m ago