আব্দুল মালেক উকিল মেডিকেল কলেজের প্রশাসনিক ভবনে তালা

নোয়াখালী মেডিকেল
মেডিকেল কলেজের একাডেমিক ভবনের প্রধান ফটকে তালা ঝুলিয়ে দেন শিক্ষার্থীরা। ছবি: স্টার

২১ দফা দাবিতে অনির্দিষ্টকালের জন্য শ্রেণি কার্যক্রম বন্ধ করে ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছেন নোয়াখালী আব্দুল মালেক উকিল মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থীরা। 

সেসময় তারা কলেজের একাডেমিক ভবনের প্রধান ফটকে তালা ঝুলিয়ে দেন। একইসঙ্গে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে অশোভন আচরণকারী লাইব্রেরিয়ানসহ অভিযুক্ত চতুর্থ শ্রেণির একদল কর্মচারীকে একটি কক্ষে অবরুদ্ধ করে রাখেন।

আজ মঙ্গলবার সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৩টা পর্যন্ত এসব ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে বেগমগঞ্জ মডেল থানা পুলিশ ক্যাম্পাসে ছুটে যায়।

পরে বিকেল ৩টার দিকে কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ (উপাধ্যক্ষ) ২১ দফা দাবি মেনে নিলে সমাবেশ স্থগিত করেন শিক্ষার্থীরা। তবে সব দাবি বাস্তবায়ন না হওয়া পর্যন্ত তারা ক্লাসে ফিরে যাবে না বলে ঘোষণা দেন।

শিক্ষার্থীদের দাবির মধ্যে রয়েছে, নারী শিক্ষার্থীদের ক্যাম্পাসে নিরাপত্তা প্রদান, নিয়মিত ব্যবহারিক ক্লাস, ক্যাম্পাসে বহিরাগতদের আড্ডা বন্ধ, লাইব্রেরিতে পর্যাপ্ত পরিমাণে বই সরবরাহ-পড়াশোনার পরিবেশ সৃষ্টি ও শিক্ষার্থীদের আধুনিক সুযোগ-সুবিধা সম্বলিত আবাসন ব্যবস্থা এবং চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারীদের অশালীন আচরণ বন্ধ করা।

নোয়াখালী মেডিকেল
নারী শিক্ষার্থীদের ক্যাম্পাসে নিরাপত্তাসহ ২১ দফা দাবি উত্থাপন করেছেন শিক্ষার্থীরা। ছবি: স্টার

আন্দোলনরত শেষবর্ষের শিক্ষার্থী কাইফি আজমী জিদান দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'নারী ও পুরুষ শিক্ষার্থীদের জন্য দুটি আবাসন ব্যবস্থা রয়েছে। সেগুলোতে আমাদের গাদাগাদি করে থাকতে হয়। দুটি হলের ডাইনিং ব্যবস্থা অত্যন্ত নিম্নমানের। ছাত্রাবাস থেকে একাডেমিক ভবনে যেতে কাঁচা রাস্তায় পায়ে হেঁটে যেতে হয়। বৃষ্টি হলে পোশাক নষ্ট হয়ে যায়। রাস্তার দুপাশে জঙ্গল আছে। প্রায়ই রাস্তায় বিষাক্ত সাপ, পোকা দেখা যায়। এতে শিক্ষার্থীরা সবসময় আতঙ্কে থাকে।'

'এ ছাড়া, কলেজের নিজস্ব হাসপাতাল না থাকা, পানি না থাকা, ডেঙ্গু মশা নিবারণ না করা, হোস্টেলে ডাইনিং ও ক্রোকারিজ সামগ্রী সংকট, হোস্টেলের পানির ফিল্টার এবং ট্যাংক সমস্যা, প্রত্যেক ক্লাস-হোস্টেলের চারপাশ পরিষ্কারসহ আরও কয়েকটি দাবিতে আজ সকাল ৯টা থেকে ক্যাম্পাসে ক্লাস বর্জন করে আন্দোলন শুরু করে শিক্ষার্থীরা। একইসঙ্গে সকাল থেকে অভিযুক্ত চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারীদের একটি কক্ষে অবরুদ্ধ করে রাখা হয়', বলেন তিনি।

কাইফি আজমী জিদান আরও বলেন, 'অধ্যক্ষ মুখে মুখে দাবি মেনে নিলেও কোনো কাজ করেন না। আমরা এর আগেও অভিযোগ দিয়ে কোনো প্রতিকার পাইনি। তাই এবার দাবি মেনে নিয়ে কাজ শুরু না করলে কঠোর আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছে। তারা যতক্ষণ পর্যন্ত কাজ শুরু না করবে ততক্ষণ পর্যন্ত আমাদের আন্দোলন চলবে।'

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক শিক্ষার্থী ডেইলি স্টারকে জানান, কলেজ অধ্যক্ষ অধ্যাপক আবদুস সালামের কাছে এসব অভিযোগ করেও কোনো লাভ হয়নি। তিনি মাসে একবার এসে বেতন নিয়ে ঢাকায় চলে যান। কলেজ চালান উপাধ্যক্ষ ডা. মাহবুবুর রহমান। তিনিও ঢিলেঢালাভাবে প্রশাসনিক ও একাডেমিক কার্যক্রম পরিচালনা করছেন। যার ফলে শিক্ষার্থীরা চরম দুর্ভোগের শিকার ও প্রকৃত শিক্ষা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।  

নোয়াখালী আব্দুল মালেক উকিল মেডিকেল কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ (উপাধ্যক্ষ) ডা. মাহবুবুর রহমান ডেইলি স্টারকে বলেন, 'শিক্ষার্থীদের সকল দাবি যৌক্তিক। তাদের সব দাবি মেনে নেওয়া হয়েছে। তাদের প্রত্যেকটা দাবি বাস্তবায়নের জন্য কলেজ কর্তৃপক্ষ কাজ শুরু করবে।' 

ঢাকায় অবস্থানরত অধ্যক্ষ অধ্যাপক মো. আবদুস সালামের সঙ্গে কথা বলতে তার মোবাইলে ফোন করলে তা বন্ধ পাওয়া যায়। 

নোয়াখালীর জেলা প্রশাসক দেওয়ান মাহবুবুর রহমান ডেইলি স্টারকে জানান, আন্দোলনের বিষয়টি কলেজ কর্তৃপক্ষ তাকে অবহিত করেনি। তিনি এই বিষয়ে খোঁজ-খবর নেবেন।

Comments

The Daily Star  | English

FY26 Budget: Subsidy spending to hold steady

The budget for fiscal 2025-26 is likely to be smaller than the current year’s outlay, but subsidy spending is expected to remain almost unchanged at Tk 1,15,741 crore.

8h ago