কুয়েট

শিক্ষার্থীদের বিজয় মিছিল-উল্লাস, লাঞ্ছনার বিচার না হলে ক্লাসে না ফেরার ঘোষণা শিক্ষকদের

কুয়েট ক্যাম্পাসে শিক্ষার্থীদের বিজয় মিছিল। ছবি: স্টার

উপাচার্য ও উপ-উপাচার্যকে অপসারণের ঘোষণায় খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) শিক্ষার্থীদের দাবি আদায় হলেও, শিক্ষকরা মনে করছেন ন্যায়বিচার হয়নি।

ছাত্ররাজনীতি বন্ধের দাবিকে কেন্দ্র করে গত ১৮ ফেব্রুয়ারি কুয়েট শিক্ষার্থীদের মধ্যে সংঘর্ষের জেরে অচলাবস্থা তৈরি হয় পুরো ক্যাম্পাসে।

এরপর, ১৪ এপ্রিল প্রশাসনের ৩৭ শিক্ষার্থী বহিষ্কার ও হল বন্ধের ঘোষণার পর উপাচার্য অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ মাছুদের পদত্যাগের দাবিতে উত্তাল হয়ে ওঠে কুয়েট।

আন্দোলনের একপর্যায়ে ২১ এপ্রিল শিক্ষার্থীরা অনশনে বসেন এবং গতকাল বুধবার রাতে জানানো হয়, উপাচার্য ও উপ-উপাচার্যকে অপসারণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার।    

দুই মাসের অচলাবস্থা শেষে কুয়েট ক্যাম্পাসে এখন শান্তিপূর্ণ অবস্থা বিরাজ করছে। রাতেই শিক্ষার্থীরা অনশন ভাঙেন এবং ক্যাম্পাসে আনন্দ মিছিল বের করেন।

অপরদিকে শিক্ষকরা বলছেন, সংঘর্ষ ও শিক্ষক লাঞ্ছনার ঘটনায় দোষীদের বিচার না পর্যন্ত তারা ক্লাসে ফিরবেন না।

কুয়েট শিক্ষক সমিতি বলছে, সুষ্ঠু তদন্ত ছাড়া চাপের মুখে উপাচার্য ও উপ-উপাচার্যের অব্যাহতির সিদ্ধান্তে ন্যায়বিচারের পরাজয় হয়েছে।

শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক ড. মো. ফারুক হোসেন দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'সংঘর্ষের ঘটনার সঙ্গে ভিসিকে অপসারণ করার কোনো সম্পর্ক নেই। অপরাধ যেটা সেটা অপরাধই। আমাদের পরিষ্কার অবস্থান, এই বিচার নিশ্চিত করেই ক্লাসে ফিরতে হবে।'

তবে শিক্ষকদের এমন বক্তব্যের সঙ্গে ভিন্নমত পোষণ করেছেন আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা।

তারা বলছেন, যদি কোনো শিক্ষার্থী শিক্ষকদের লাঞ্ছনা করে থাকেন, তারাও এর শাস্তি চান। তবে সেটা একটা সুষ্ঠু তদন্ত কমিটির মাধ্যমে হতে হবে।

তারা আরও বলছেন, ইউজিসির তদন্ত দল গতকাল সকাল থেকে দীর্ঘ তদন্ত শেষে গভীর রাতে উপাচার্যকে অপসারণের কথা জানিয়েছেন।

বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) সদস্য এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. তানজীমউদ্দিন খান গতকাল বুধবার দিবাগত রাত ১টার পর শিক্ষার্থীদের অনশন ভাঙান। এরপর শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসে আনন্দ মিছিল বের করেন।

বিকেলে সরেজমিনে দেখা গেছে, প্রধান ফটকের সামনে ৪-৫ জন পুলিশ সদস্য হাঁটাহাঁটি করছেন। স্টুডেন্টস ওয়েলফেয়ার সেন্টারের সামনে শিক্ষার্থীদের অনশনের জায়গায় কয়েকটি জাজিম পড়ে আছে।

আজ বিকেলেও শিক্ষার্থীরা স্টুডেন্ট ওয়েলফেয়ার সেন্টারের সামনে নেচে গেয়ে উল্লাস প্রকাশ করেন এবং ক্যাম্পাসে বিজয় মিছিল বের করেন।

কয়েকশ শিক্ষার্থী এই মিছিলে অংশ নেন। নারী শিক্ষার্থীরা মিছিলের সামনে থেকে নেতৃত্ব দেন।

এর আগে, কয়েকজন শিক্ষার্থী মাইকসহ ইজিবাইক নিয়ে বিভিন্ন হলের সামনে গিয়ে শিক্ষার্থীদের বের হয়ে মিছিলে অংশ নেওয়ার আহ্বান জানান।

মিছিলটি কুয়েটের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে আবার স্টুডেন্ট ওয়েলফেয়ার সেন্টারের সামনে এসে শেষ হয়।

বর্তমানে ক্যাম্পাসে শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বজায় আছে বলে জানিয়েছেন ছাত্রকল্যাণ পরিচালক অধ্যাপক ড. মো. আব্দুল্লাহ ইলিয়াস আক্তার। তিনি ডেইলি স্টারকে বলেন, 'ক্যাম্পাসের পরিবেশ এখন শান্ত। গেটে পুলিশ মোতায়েন করা আছে। শিক্ষার্থীরাও আন্দোলন করছে না। আর নিরাপত্তা নিয়েও কোনো হুমকি নেই।'

 

Comments

The Daily Star  | English

Record toll collection on Padma and Jamuna bridges

Padma Bridge generated a record toll revenue of Tk 54.32 crore, while Jamuna Tk 41.81 crore

3h ago