ভোট গণনা চলবে, যেকোনো সহযোগিতা করতে প্রস্তুত: জাবি উপাচার্য

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (জাকসু) নির্বাচনের ভোট গণনা চলবে এবং বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এ জন্য যেকোনো ধরনের সহযোগীতা করতে প্রস্তুত বলে জানিয়েছেন জাবি উপাচার্য অধ্যাপক কামরুল আহসান।
আজ শুক্রবার সন্ধ্যায় জাবি নির্বাচন কমিশন কার্যালয়ে গিয়ে ভোটগণনা কার্যক্রম পরিদর্শন শেষে এ কথা জানান তিনি।
জাকসু নির্বাচনের সঙ্গে সংশ্লিষ্টদের ধন্যবাদ জানিয়ে উপাচার্য বলেন, 'অমানবিক পরিশ্রম করে আমাদের এই কাজটি করতে হচ্ছে। একটি অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে মেশিনে গণনার প্রক্রিয়া নির্বাচন কমিশন স্থগিত করেছে। আমি অবগত হয়েছি।'
'জাকসু নির্বাচন জুলাই গণঅভ্যুত্থানের অঙ্গীকার' উল্লেখ করে তিনি বলেন, 'আমরা গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের সংগ্রামের জন্য সংগ্রাম করেছি। বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মাধ্যমে এটা শুরু হয়েছে, জাকসু হচ্ছে। আমি বিশ্বাস করি সেই চেতনার জায়গা থেকে সবার অতিরিক্ত পরিশ্রম হচ্ছে।'
'আমি ব্যক্তিগতভাবেই জাকসু সভাপতি হিসেবে এখানে অবস্থান করছি। শারীরিকভাবে কোনো কাজ করে দিতে পারছি না, কিন্তু হৃদয় দিয়ে আমি আপনাদের পাশে আছি,' বলেন অধ্যাপক কামরুল আহসান।
সেখানে উপস্থিত নির্বাচন কমিশনের সদস্য, প্রার্থী, সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, 'আমরা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে শুরু করে জাতীয় পর্যায় পর্যন্ত গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনতে চাই। আপনাদের সক্রিয় সহযোগিতা যেভাবে আগে পেয়েছি এই সহযোগিতা অব্যাহতা থাকবে সেটা আশা করি।'
'আপনাদের যেকোনো ধরনের প্রয়োজন নির্বাচন কমিশন পূরণ করার ক্ষেত্রে প্রশাসনের পক্ষ থেকে আমার যে সহযোগিতা করা প্রয়োজন আমি সার্বক্ষণিক উপস্থিত থেকে এবং অন্য লজিস্টিক সাপোর্ট দিয়ে থাকব, এ অঙ্গীকার ব্যক্ত করছি,' যোগ করেন তিনি।
তিনি জানান, নির্বাচন কমিশনের ঘোষণা অনুযায়ী ভোট গণনা চলবে।
এর আগে ইসলামী ছাত্রশিবির সমর্থিত সম্মিলিত শিক্ষার্থী জোট বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে আলটিমেটাম দেয়, আজকের মধ্যে জাকসু নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণা না হলে তারা কঠোর অবস্থানে যাবেন।
এদিন বিকেল ৫টার দিকে সিনেট ভবনের সামনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে জোটের সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী মো. মাজহারুল ইসলাম বলেন, 'আমরা স্পষ্ট করে জানিয়ে দিতে চাই, আজকের মধ্যে ভোট গণনা শেষ না হলে এবং ফলাফল ঘোষণা না করা হলে আমরা সর্বোচ্চ কঠোর অবস্থান নেব। এই নির্বাচন ভণ্ডুল করার কোনো অপচেষ্টা সফল হতে দেওয়া হবে না।'
তিনি অভিযোগ করেন, বিএনপি সমর্থিত শিক্ষক এবং ছাত্রদল নেতারা অযৌক্তিক অজুহাত দাঁড় করিয়ে, বিশেষ করে ওএমআর ব্যালট বাতিলের দাবি তুলে ভোট গণনা বন্ধের ষড়যন্ত্র করছেন।
উল্লেখ্য, বৃহস্পতিবার সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ২১ হলে অনুষ্ঠিত হয় জাকসু নির্বাচনের ভোটগ্রহণ।
প্রথমে ওএমআর মেশিনে ভোট গণনা হবে বলে জানালেও, পরে মেশিন সরবরাহ নিয়ে ছাত্রদল ও শিবিরের পারস্পরিক দোষারোপের পর হাতে ব্যালট গোনার সিদ্ধান্ত হয়।
গতকাল সন্ধ্যা ৭টার দিকে বিভিন্ন হল থেকে ব্যালট বাক্স সিনেট ভবনে নেওয়া হয় এবং সব প্রস্তুতি শেষে রাত ১০টার পর শুরু হয় গণনা।
প্রথমে হল সংসদের ভোট ও পরে কেন্দ্রীয় সংসদের ভোট গোনার সিদ্ধান্ত নেয় কমিশন। আজ শুক্রবার সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত ১৯ হলের ভোট গণনা শেষ হয়েছে বলে জানিয়েছে কমিশন।
নির্বাচনে মোট ১১ হাজার ৭৪৩ জন নিবন্ধিত ভোটার ছিলেন। তাদের মধ্যে প্রায় ৬৭–৬৮ শতাংশ ভোট দিয়েছেন বলে জানিয়েছে নির্বাচন কর্তৃপক্ষ।
Comments