নীলক্ষেতে ব্যালট ছাপানো হলেও সুরক্ষায় ব্যত্যয় ঘটেনি: ঢাবি উপাচার্য

ছবি: স্টার

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (ডাকসু) নির্বাচনের ব্যালট পেপার নীলক্ষেতে ছাপানোর বিষয়টি স্বীকার করেছেন উপাচার্য নিয়াজ আহমদ খান। তার দাবি, সহযোগী ভেন্ডর প্রতিষ্ঠান বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে না জানিয়েই এ কাজ করেছে। তবে এতে নির্বাচনপ্রক্রিয়ার সুরক্ষায় কোনো ব্যত্যয় ঘটেনি।

এ নিয়ে ওঠা বিতর্কের মুখে আজ রোববার বিশ্ববিদ্যালয়ে এক জরুরি সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। তিনি বলেন, এরকম প্রশ্নের সম্মুখীন হওয়ার বিষয়টি আমাদেরকে বিব্রত করেছে।

গত ৯ সেপ্টেম্বর ডাকসু ও হল সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। নির্বাচনে ইসলামী ছাত্রশিবির-সমর্থিত প্যানেল সংখ্যাগরিষ্ঠতা পায়। তবে নির্বাচনের পর থেকেই ছাত্রদল, বামপন্থি সংগঠনগুলোর জোট, বাগছাস এবং স্বতন্ত্র প্রার্থীরা কারচুপির অভিযোগ তুলে আসছেন।

তাদের অন্যতম অভিযোগ ছিল, ব্যালট পেপার নীলক্ষেতের একটি দোকানে অরক্ষিত অবস্থায় ছাপানো হয়েছে। নির্বাচনে কারচুপি ও পক্ষপাতিত্বের অভিযোগেও সরব হয় ছাত্র সংগঠনগুলো।

অভিযোগের বিষয়ে ব্যাখ্যা দিয়ে উপাচার্য নিয়াজ আহমদ খান বলেন, 'ব্যালট ছাপানো ও কাটিং হলো ব্যালট প্রস্তুতপ্রক্রিয়ার প্রাথমিক ধাপ। এরপর কমপক্ষে পাঁচ থেকে ছয় স্তরের নিরাপত্তা ধাপ পার হওয়ার পরই একটি ব্যালট ভোটের জন্য চূড়ান্তভাবে প্রস্তুত হয়।'

তিনি বলেন, ছাপানোর পর নির্দিষ্ট মাপে কাটা, সুরক্ষা কোড বসিয়ে ওএমআর মেশিনে প্রি-স্ক্যান করা এবং সবশেষে চিফ রিটার্নিং কর্মকর্তা ও কেন্দ্রের প্রিসাইডিং কর্মকর্তার সিলসহ স্বাক্ষর যুক্ত হওয়ার পরই তা ভোট গ্রহণের উপযুক্ত হয়। পকেট থেকে ব্যালট বের করে ব্যবহার করার কোনো সুযোগই নেই। এই নিরাপত্তা ধাপগুলো নীলক্ষেতের কোনো দোকানে সম্পন্ন করা সম্ভব নয়।

উপাচার্য জানান, রেকর্ডসংখ্যক ভোটার ও প্রার্থীর জন্য দ্রুততম সময়ে ব্যালট ছাপাতে দরপত্রের মাধ্যমে নির্বাচিত মূল প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে আলোচনা করে একটি সহযোগী প্রতিষ্ঠানকে যুক্ত করার অনুমতি দেওয়া হয়েছিল। মূল প্রতিষ্ঠানের যন্ত্র দিয়ে ব্যালট প্রস্তুতের কাজ ধীরগতির হতে পারত, তাই সহযোগী প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে অতিরিক্ত যন্ত্র যুক্ত করে কাজের গতি বাড়ানো হয়।

তবে, ব্যালট ছাপানোর স্থান হিসেবে নীলক্ষেতকে ব্যবহারের বিষয়টি সহযোগী ভেন্ডরটি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে অবহিত করেনি বলেও জানান উপাচার্য।

সহযোগী প্রতিষ্ঠানটির বরাত দিয়ে তিনি জানান, তারা নীলক্ষেতে ৮৮ হাজার ব্যালট ছাপিয়ে ও কেটে পরবর্তী কার্যক্রমের জন্য তাদের মূল কার্যালয়ে নিয়ে যায়। সেখানে প্রি-স্ক্যান শেষে নির্দিষ্ট পরিমাণে প্যাকেটে ভরে সিলগালা করে বিশ্ববিদ্যালয়ে সরবরাহ করা হয়। অতিরিক্ত ব্যালট নিয়ম অনুযায়ী নষ্ট করে ফেলা হয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, কার্যাদেশ অনুযায়ী মোট ২ লাখ ৩৯ হাজার ২৪৪টি ব্যালট ছাপানো হয়েছিল। মোট ৩৯ হাজার ৮৭৪ জন ভোটারের মধ্যে ভোট দিয়েছেন ২৯ হাজার ৮২১ জন।

সিসিটিভি ফুটেজ ও ভোটারদের স্বাক্ষরসংবলিত তালিকা দেখার বিষয়ে উপাচার্য বলেন, কোনো প্রার্থী সুনির্দিষ্ট কোনো ঘটনা পর্যালোচনার জন্য আবেদন করলে যথাযথ প্রক্রিয়ায় কর্তৃপক্ষের মনোনীত বিশেষজ্ঞদের উপস্থিতিতে ফুটেজ দেখতে পারবেন। একইভাবে নির্দিষ্ট ও যৌক্তিক কারণে কোনো ভোটারের স্বাক্ষর যাচাই করতে চাইলেও তা দেখানো যেতে পারে।

Comments

The Daily Star  | English
Dhaka air turns unhealthy even before dry season

Dhaka air turns unhealthy even before dry season

With the dry season approaching, Dhaka city’s air quality has once again slipped to an unhealthy level, underscoring the inadequacy of the limited measures taken by the authorities to curb air pollution.

11h ago