নারায়ণগঞ্জ

প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে অসদাচরণের অভিযোগ, শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ

স্কুল_শিক্ষার্থী
প্রধান শিক্ষকের অপসারণ দাবিতে সফুরা খাতুন পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ। ছবি: স্টার

নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জে একটি বালিকা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে অসদাচরণের অভিযোগ এনে বিক্ষোভ করেছে শিক্ষার্থীরা। বিক্ষোভে প্রধান শিক্ষকের অপসারণের দাবি তুলেছে শিক্ষার্থীরা।

আজ সোমবার দুপুরে সফুরা খাতুন পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রায় অর্ধশতাধিক শিক্ষার্থী এ দাবিতে বিক্ষোভ করে। স্কুলের মাঠে প্ল্যাকার্ড হাতে তারা প্রধান শিক্ষক রফিকুল ইসলামের অপসারণের দাবি জানায়।

শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, প্রধান শিক্ষক রফিকুল ইসলাম প্রায়ই তাদের সঙ্গে অসদাচরণ করেন। বিষয়টি স্কুল ম্যানেজমেন্ট কমিটি ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিকে জানিয়েও কোনো সমাধান না পেয়ে তারা বিক্ষোভ করছে। প্রধান শিক্ষকের অপসারণের পাশাপাশি তারা সম্প্রতি স্বেচ্ছায় চাকরি ছেড়ে দেওয়া খণ্ডকালীন ২ শিক্ষককে বিদ্যালয়ে আনার দাবিও জানায়।

বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির এক শিক্ষার্থীর মা প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগ তুলে দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'রফিকুল ইসলামের কারণে অনেক ভালো শিক্ষক স্কুল ছেড়ে চলে যাচ্ছে। তার কাছে বেতন মওকুফের আবেদন নিয়ে গেলেও তিনি খারাপ ব্যবহার করেন।'

তবে অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষক রফিকুল ইসলামের দাবি, বিদ্যালয়ের কয়েকজন শিক্ষক ও ম্যানেজমেন্ট কমিটির সদস্যের উস্কানিতে তাকে সামাজিকভাবে হেয় করতে 'মিথ্যা' অভিযোগ করছে শিক্ষার্থীরা।

তিনি দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'বিল্লাল হোসেন ও আমানতউল্লাহ সোহেল নামে দুই শিক্ষক সম্প্রতি স্বেচ্ছায় পদত্যাগ করেছেন। তারা বিদ্যালয়ের নিয়ম মানেন না, বাইরে কোচিং করান এবং সময়মতো বিদ্যালয়ে আসেন না। এ কারণে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য কমিটির কাছে জানানো হয়েছিল। পরে স্বেচ্ছায় ওই দুই শিক্ষক পদত্যাগ করেন।'

শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভের পেছনে ওই দুই শিক্ষকের ইন্ধন আছে বলে অভিযোগ করেন তিনি।

তিনি বলেন, '২০১৯ সালে আমি এই স্কুলে যোগ দেই। এরপর থেকে খণ্ডকালীন ওই দুই শিক্ষকের কর্মকাণ্ডে অনিয়ম পাই। এ কারণে তাদের বেতনও বন্ধ করা হয়। তখন তারা আমাকে হুমকি দিয়েছিলেন। এছাড়া কমিটির একজন সদস্যও আমার উপর ক্ষিপ্ত ছিলেন।'

'তাদের বক্তব্য ছিল যে আমি স্বেচ্ছাচারিতা করেছি। সেই ক্ষোভ থেকেই শিক্ষার্থীদের ব্যবহার করেছে আমার বিরুদ্ধে। কারও চরিত্র নিয়ে অভিযোগ তোলার চেয়ে বড় অস্ত্র আর নেই। সেই অস্ত্রই তারা আমার বিরুদ্ধে ব্যবহার করেছে,' যোগ করেন তিনি।

এ বিষয়ে মন্তব্য জানতে ওই দুই খণ্ডকালীন শিক্ষকের সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।

জানতে চাইলে বিদ্যালয় পরিচালনা পরিষদের সভাপতি সফর আলী ভূঁইয়া ডেইলি স্টারকে বলেন, 'প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে কয়েকজন শিক্ষক ক্ষুব্ধ ছিলেন। তারাই শিক্ষার্থীদের ব্যবহার করে বিক্ষোভ করিয়েছেন। আমি এমনটা শুনেছি। তবে যেহেতু শিক্ষার্থীরা অভিযোগ তুলেছে, বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে।'

যোগাযোগ করা হলে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের ৪, ৫ ও ৬ নম্বর ওয়ার্ডের সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর মনোয়ারা বেগম ডেইলি স্টারকে বলেন, 'রোববার রাতে কয়েকজন শিক্ষার্থী আমার কাছে এসে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে অসদাচরণের অভিযোগ করে। বিষয়টি নিয়ে বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সঙ্গে আলোচনা করব বলে ছাত্রীদের আশ্বস্ত করি। কিন্তু তারা সোমবার দুপুরে বিক্ষোভ শুরু করে।'

'বিষয়টি নিয়ে উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা ও স্কুল কমিটির লোকজন বুধবার বৈঠকে বসবেন। তখন ছাত্রীদের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে আলোচনা সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে,' বলেন তিনি।

এ বিষয়ে সিদ্ধিরগঞ্জ উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আবু তালেব ডেইলি স্টারকে বলেন, 'প্রাথমিকভাবে বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের মধ্যে অভ্যন্তরীণ কোন্দল আছে বলে জেনেছি। দুই খণ্ডকালীন শিক্ষক চাকরি ছেড়েছেন। শিক্ষার্থীদের দাবি, ওই দুই শিক্ষককে বহাল করা ও প্রধান শিক্ষককে অপসারণ করা।'

'প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে ছাত্রীদের অভিযোগ খুবই সেন্সিটিভ। এ বিষয়ে বৈঠক ডেকেছে স্কুল কমিটি। সেখানে আমরাও উপস্থিত থাকব। উভয়পক্ষের বক্তব্য শোনার পর ব্যবস্থা নেওয়া হবে,' বলেন এই শিক্ষা কর্মকর্তা।

Comments

The Daily Star  | English

19 killed in Nepal in 'Gen Z' protest over social media ban

Police used live ammunition, tear gas, and water cannons against protesters demonstrating against social media restrictions and corruption

6h ago