গানের মানুষ গান করে যাচ্ছি, আর কিছু ভাবিনি: ফেরদৌসী রহমান

ফেরদৌসী রহমান। ছবি: সংগৃহীত

ফেরদৌসী রহমান একজন প্রখ্যাত সংগীতশিল্পী। সংগীত পরিবারে তার জন্ম। তার বাবা আব্বাসউদ্দীন আহমদ একজন কিংবদন্তি শিল্পী ছিলেন। সেই ছোটবেলা থেকে গানে হাতেখড়ি তার। পাঁচ দশকেরও বেশি সময় ধরে গান করছেন। একজীবনে পেয়েছেন বিপুল মানুষের ভালোবাসা, সম্মান।

সংগীতশিল্পী হিসেবে একুশে পদক, স্বাধীনতা পুরস্কার, জাতীয় চলচ্চিত্রে আজীবন সম্মাননাসহ অনেক পুরস্কার পেয়েছেন।

অসংখ্য গান করেছেন গুণী এই শিল্পী। তার গাওয়া বহু গান এখনো মানুষের মুখে মুখে ফেরে। টেলিভিশনে প্রথম গান করেন ১৯৬৪ সালে। 'এসো গান শিখি' অনুষ্ঠানের 'খালামনি' হয়ে হাজারো মানুষকে গান শিখিয়েছেন।

দ্য ডেইলি স্টার সম্প্রতি কথা বলেছে গুণী এই শিল্পীর সঙ্গে।

দ্য ডেইলি স্টার: ষাটের দশক থেকে গান করছেন। আপনি এদেশের একজন জীবন্ত কিংবদন্তি শিল্পী...

ফেরদৌসী রহমান: সত্যি কথা বলতে, কত বড় শিল্পী, কত বড় মানুষ, কত বড় অবস্থান—এসব ভাবি না, এগুলো আমাকে প্রভাবিত করে না। মানুষ বলে, শুনতে ভালো লাগে। সারাজীবন ভেবেছি, যা করতে চেয়েছি তা করতে পেরেছি কি না। আমার বাবা যেভাবে চেয়েছেন, সেভাবে পেরেছি কি না। মানুষের প্রত্যাশা অনুযায়ী কিছু করতে পেরেছি কি না। কিংবদন্তি বিষয়টি আমাকে তেমন প্রভাবিত করে না। আমি গানের মানুষ, গান করে যাচ্ছি।

ছবি: সংগৃহীত

ডেইলি স্টার: সংগীতে বহু বছরের পথচলা, বিশাল অবদান আপনার। এরপরও তি কোনো অপূর্ণতা কাজ করে?

ফেরদৌসী রহমান: সব শিল্পীরই অপূর্ণতা থাকে। আমারও আছে। আব্বাকে নিয়ে একটা সংগীত একাডেমি করতে চেয়েছিলাম। সেই স্বপ্নটা পূরণ হয়নি। শুরু করেছিলামও, আবার পিছিয়ে গেলাম। কারও কাছে কিছু চাইতে পারি না। এটার জন্য অনেকের সহযোগিতা দরকার। একার পক্ষে করা কঠিন। আব্বার তো ছাত্র-ছাত্রী দুনিয়াজুড়ে। এই অপূর্ণতাটা কাজ করে। যদি জমি পেতাম তাহলে কাজটি করতে সুবিধা হতো।

ডেইলি স্টার: আপনার বহু গান মানুষের মুখে মুখে ফেরে। কেমন লাগে?

ফেরদৌসী রহমান: ভীষণ ভালো লাগে। স্বাভাবিকভাবেই এটা ভালো লাগার ব্যাপার। ভবিষ্যতেও যদি নতুন নতুন শিল্পীরা আমার গানগুলো করেন, তাহলে বিষয়টি আনন্দের হবে। ধরুন লতা, সন্ধ্যা বা মান্না দে—তাদের গান তো কেউ না কেউ করছে এখনো। সেভাবে আমার গান যদি ভবিষ্যতে কোনো কোনা শিল্পী করেন, সেটি আমার জন্য সুখের। এটা ভেবে আমি আনন্দিত হই।

ডেইলি স্টার: সবার খালামনি আপনি, এটি তো বড় একটি অর্জন...

ফেরদৌসী রহমান: বাচ্চাদের কাছে আমি খালামনি। কখনো মায়ের মতো। সেই কবে থেকে বাচ্চাদের গান শেখাচ্ছি। তাদের জন্য কিছু করতে পেরেছি। বাচ্চারা খুব ভালোবাসে, সম্মানও করে। এসব যখন ভাবি ভালো লাগে।

ডেইলি স্টার: আপনার অবসর কাটে কীভাবে?

ফেরদৌসী রহমান: সময় কেটে যায়। বাসায় আত্মীয়রা আসেন। তাদের সঙ্গে গল্প করি। আমার ছাত্ররা আসে। সুন্দরভাবেই সময় কাটে।

ছবি: সংগৃহীত

ডেইলি স্টার: আত্মজীবনী লেখার ইচ্ছে আছে?

ফেরদৌসী রহমান: আত্মজীবনী লিখেছি। ওটা প্রকাশনীতে আছে। প্রকাশের কাজ চলছে। আমার জীবনের কথা বলতে চেষ্টা করেছি আত্মজীবনীতে। কতটুকু পেরেছি জানি না। আমার জীবন চলার পথে যা ঘটেছে, তা লিখেছি। জানি না কতটুকু পেরেছি। পাঠকরা কীভাবে নেবেন তাও জানি না। লেখার ইচ্ছে ছিল, তাই লিখেছি।

Comments