প্রাথমিকে ধর্ম শিক্ষক নিয়োগ না দিলে ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের হুঁশিয়ারি

জাতীয় ওলামা মাশায়েখ আইম্মা পরিষদ আয়োজিত সেমিনার। ছবি: স্টার

প্রাথমিকে ধর্ম শিক্ষক নিয়োগের বদলে সংগীত ও নৃত্যের শিক্ষক নিয়োগের সরকারি সিদ্ধান্তকে 'আরোপিত ও অপ্রাসঙ্গিক' বলে উল্লেখ করা হয়েছে একটি সেমিনারে।

আজ মঙ্গলবার রাজধানীর ইনস্টিটিউশন অব ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স ভবনে এ সেমিনার আয়োজন করে জাতীয় ওলামা মাশায়েখ আইম্মা পরিষদ। 

এতে জামায়াতে ইসলামী, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, খেলাফত মজলিশ, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিশ ও বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলনের মতো ধর্মভিত্তিক রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতিনিধিরা অংশ নেন।

তারা বলেছেন, সরকারের এ সিদ্ধান্ত পরোক্ষভাবে নাস্তিক্যবাদী দর্শনের সঙ্গে জড়িত। ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে ঈমানহারা করার ষড়যন্ত্র। স্কুল শিক্ষার্থীদের ধ্বংস করার পরিকল্পনা।

বক্তারা 'নাচ-গানের অপসংস্কৃতির মূলোৎপাটন' করে ধর্ম শিক্ষক নিয়োগের দাবিতে প্রয়োজনে 'ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন' গড়ে তোলার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন।

সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমির (চরমোনাই পীর) মুফতি সৈয়দ মুহাম্মাদ রেজাউল করীম সরকারকে উদ্দেশ্য করে বলেন, 'আমি অন্তর্বর্তী সরকারকে পরিষ্কারভাবে বলছি, ধর্মীয় শিক্ষা ছোটবেলায় আমরা যখন পড়ছিলাম তখন হিন্দুদের শিক্ষক ছিল, আবার মুসলমানদের বাচ্চাদের শিক্ষা দেওয়ার জন্য শিক্ষক ছিল, আমরা পড়েছি, আমরা দেখেছি। কিন্তু আপনি গানের শিক্ষক নিয়োগ দিবেন? কী শিখান? কী করতে চান? এ টাকা তো আমরা কামাই করে ওখানে পাঠাই। আর সেই টাকা নিয়ে আমাদের বাচ্চাদেরকে বেয়াদব বানাবেন, উশৃঙ্খল বানাবেন, চরিত্রহীন বানাবেন, এটা কখনোই আমরা সহ্য করব না।'

ধর্ম শিক্ষক নিয়োগে সরকার ব্যর্থ হলে বাংলাদেশের 'ইসলামপ্রেমী, ধর্মপ্রেমী জনগণ' সবাই রাস্তায় দাঁড়াতে বাধ্য হবে বলেও মন্তব্য করেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমির।

বক্তব্যে জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশের কর্মপরিষদ সদস্য খলিলুর রহমান মাদানী বলেন, 'আমরা জাতীয় শিক্ষানীতি বাতিল বলব না। (কিন্তু) অবশ্যই কোরআনবিরোধী ধারাগুলোকে সংশোধন করতে হবে। নাহলে এই সংশোধন কেমনে করতে হয়—আলেম, ওলামারা তা আদায় করেই ছাড়বে।' 

খেলাফত মজলিশের মহাসচিব আহমদ আবদুল কাদের গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী নতুন রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে পুরো শিক্ষা ব্যবস্থাই পাল্টানোর তাগিদ দিয়ে বলেন, 'ধর্ম শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রে অর্থের অজুহাত দেওয়ার কোনো অর্থ নাই।' 

সেমিনারে সভাপতির বক্তব্যে ওলামা মাশায়েখ আইম্মা পরিষদের সভাপতি মাওলানা নুরুল হুদা ফয়েজি বলেন, 'কোরান শিক্ষা, দ্বীনি শিক্ষার কোনো বিকল্প নাই। নাচ-গানের অপসংস্কৃতির মূলোৎপাটনে আমরা বদ্ধপরিকর।'

সরকারকে উদ্দেশ্য করে নুরুল হুদা বলেন, 'আপনারা গদিতে থাকা অবস্থায় যদি এটার সমাধান না হয়, তাহলে কিন্তু হিতে বিপরীত হবে।'

Comments