‘শিল্পীর সম্পদ তার কণ্ঠ’

সাবিনা ইয়াসমিন। ছবি: সংগৃহীত

বাংলা গানের জীবন্ত কিংবদন্তি সাবিনা ইয়াসমিন। গত পাঁচ দশকে ১৫ হাজারের বেশি গানে কণ্ঠ দিয়েছেন এই সংগীতশিল্পী এবং প্লেব্যাকের জন্য ১৫ বার পেয়েছেন জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার।

১৯৫৪ সালে আজকের এই দিনে জন্মগ্রহণ করেন সাবিনা ইয়াসমিন। জন্মদিনে দ্য ডেইলি স্টারের সঙ্গে আলাপচারিতায় তিনি কথা বলেছেন রাজনীতি, সিনেমায় প্লেব্যাক, নতুন প্রজন্মের শিল্পী, গানের রেওয়াজসহ নানা বিষয়ে।

সাবিনা ইয়াসমিন। ছবি: সংগৃহীত

একজন শিল্পীর রাজনীতির সঙ্গে জড়ানোর বিষয়টা কীভাবে দেখেন?

দেশের ও মানুষের সেবা করার জন্য রাজনীতির বাইরে আরও অনেক পথ খোলা আছে। রাজনীতি ছাড়া আর কোনোভাবে মানুষ ও দেশের সেবা করা যাবে না, এটি আমি মনে করি না।

কোনো শিল্পীর নির্দিষ্ট গোষ্ঠীর হওয়া উচিত না। অবশ্য, যারা রাজনীতি করছেন, সেটি তাদের ব্যক্তিগত ব্যাপার।

সিনেমার গানে প্লেব্যাক করতে কী কী গুণ থাকা প্রয়োজন?

সিনেমার গান নিজের মতো ভালো গেয়ে দিলেই হয় না। সাধারণ গান আর সিনেমার গানের প্লেব্যাকে কিছু পার্থক্য আছে।

সিনেমার গানের জন্য বিশেষ কিছু বিষয়ে একজন কণ্ঠশিল্পীকে মনোযোগী হতে হয়। গানটা পর্দায় যার ঠোঁটে থাকবে, তার একটা ছায়া তুলে ধরতে হয় কণ্ঠে। গানটার দৃশ্যধারণ কেমন হবে, গাওয়ার মধ্যে সেই আবহও তৈরি করতে হয়।

এখনকার অনেক গানেই এসবের অভাব আছে। অনেক সময় কণ্ঠশিল্পী জানেই না তার গানে কে অভিনয় করছে। আবার অনেক সিনেমায় রোমান্টিক গানে দেখা যায় ভয়েস আর লিপসিংয়ে কোনো মিল নেই।

একজন শিল্পীর জন্য রেওয়াজ কতটা গুরুত্বপূর্ণ?

একজন শিল্পীর জন্য রেওয়াজ অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ। রেওয়াজ করলে কণ্ঠ সুস্থ থাকে, সুন্দর থাকে। শিল্পীর সম্পদ হলো তার কণ্ঠ। যদি কেউ সেটির পরিচর্যা না করে, তাহলে ভালো গাওয়ার সুযোগ নেই। আমি এখনো প্রতিদিন রেওয়াজ করি।

নতুন প্রজন্মের গান শোনেন?

নতুন প্রজন্মের অনেকেই এখন ভালো কাজ করছে। অনেকে যেমন ভালো গায়, তেমনই অনেকে ভালো সুর-সংগীতও করছে। তবে তাদের সঠিক দিক-নির্দেশনা নেই। যার কারণে অনেকে আবার হারিয়ে যাচ্ছে। নতুন প্রজন্মের শিল্পীদের নিয়ে আমি অনেক আশাবাদী।

মন খারাপ হলে কাদের গান শোনেন?

আমি সাধারণত সাগর সেন, হেমন্ত মুখোপাধ্যায় ও মেহেদি হাসানের গান শুনি। কোনো কারণে মন খারাপ হলে রবীন্দ্র সংগীত শুনতে ভালো লাগে।

দেশের বাইরে অনেকের সঙ্গে গান করেছেন। বিশেষ কোনো স্মৃতি আছে?

১৯৮০ সালের দিকে মুম্বাইয়ে কিছু সিনেমার গান করেছি। সে সময় মুম্বাইয়ে থেকে যাওয়ার প্রস্তাব দিয়েছিলেন রাজ কাপুর। সেখানে লতা মঙ্গেশকরকে 'জন্ম আমার ধন্য হলো মাগো' গানটা শুনিয়েছিলাম। আমাকে আর লতাজিকে দুইপাশে নিয়ে ছবি তুলেছিলেন রাজ কাপুর। বলেছিলেন 'আওয়াজোকা দো দেবী'। এটা আমার জন্য অনেক বড় প্রাপ্তি। কিন্তু দেশের বাইরে থেকে যাওয়ার জন্য কখনও মন টানেনি।

জীবনের শেষ চাওয়া কী?

আমি যেন শান্তিতে মরতে পারি—এটাই জীবনের শেষ চাওয়া।

Comments

The Daily Star  | English
Dhaka city urban development problems

Dhaka on a perilous path: Lax rules, weak oversight fuel unplanned expansion

Near-unregulated vertical expansion put immense pressure on utilities and infrastructure, worsened traffic congestion, compromised fire safety

15h ago