ছন্দার চোখে ৪ নায়ক
গোলাম ফরিদা ছন্দার অভিনয় ক্যারিয়ারের ২০ বছর পার হয়ে গেছে। অনেক আলোচিত ও প্রশংসিত নাটক তার ক্যারিয়ারে জমা হয়েছে। মুস্তাফা মনোয়ার পরিচালিত 'স্ত্রীর পত্র' নাটকে অভিনয় করে ব্যাপক সাড়া পান তিনি। এখনো নাটক ও ওটিটিতে সরব। অনেক নায়কের বিপরীতে অভিনয় করেছেন তিনি।
অভিনয়জীবনের চারজন নায়ককে নিয়ে গোলাম ফরিদা ছন্দা কথা বলেছেন দ্য ডেইলি স্টারের সঙ্গে।
মোশাররফ করিম
দর্শকনন্দিত অভিনেতা মোশাররফ করিমের সঙ্গে প্রচুর নাটক করেছি। তবে, দুজনে প্রথম কাজ করি মুস্তাফা মনোয়ার পরিচালিত 'স্ত্রীর পত্র' নাটকে। সেটি অবশ্য অনেক বছর আগে। লাকসামে শুটিং হয়েছিল। সেই যে পরিচয় হলো, তারপর ধারাবাহিক করেছি, এক ঘণ্টার নাটক করেছি। সালাহউদ্দিন লাভলু পরিচালিত 'সাকিন সারিশুরি' ধারাবাহিকে দীর্ঘদিন একসঙ্গে কাজ করেছি। এই নাটকটি অসম্ভব জনপ্রিয়তা পেয়েছিল। প্রতিদিন দেখা হতো আমাদের, প্রতিদিন শুটিং করার পাশাপাশি আড্ডার স্মৃতি আছে। এই নাটকে আরও অনেকেই ছিলেন। তাদের সঙ্গে অনেক স্মৃতি আছে। মোশাররফ করিম খুব শক্তিমান অভিনেতা। আমরা খুব ভালো বন্ধু। দুজন দুজনকে বন্ধু বলে ডাকি। লন্ডনেও আমরা একটি নাটকের শুটিং করেছি। অভিনেতা হিসেবে নয় কেবল, মানুষ হিসেবেও ভালো মোশাররফ করিম।
জাহিদ হাসান
জাহিদ হাসান ভাই এদেশের অন্যতম জনপ্রিয় ও মেধাবী অভিনেতা। তার সঙ্গে অনেক নাটক করেছি। তাকে সহশিল্পী হিসেবে পেয়ে ভালো লেগেছে। তবে, জীবনে প্রথম তার বিপরীতে নাটক করতে গিয়ে খুব টেনশনে ছিলাম, ভয়ে ছিলাম। এই বিষয়টি জাহিদ হাসান ভাই বুঝতে পেরেছিলেন। তারপর তিনি সহজ করে দেন। আপন করে নেন। সেই সময় তার সহযোগিতার কথা ভুলিনি। তিনি তখন বলেছিলেন, তুমি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পড়াশোনা করা মেয়ে, অনেক ভালো করবে। তার দেওয়া এইটুকু সহযোগিতা আমার জন্য অনেক কিছু ছিল। জাহিদ হাসান ভাই একজন মজার মানুষ এবং ভালো মানুষ। সেটে খুব মজা করেন। তার সিরাজগঞ্জের বাড়িতে গিয়েছি। সিরাজগঞ্জ শহরে তার পরিচালনায় শুটিং করেছি। অনেক স্মৃতি আছে তার সঙ্গে।
আজিজুল হাকিম
আমি যখন ঢাকার একটি কলেজে পড়ি, সেই সময় একদিন কলেজে যাওয়ার সময় দেখতে পাই আজিজুল হাকিম ভাই মোটরসাইকেল চালিয়ে যাচ্ছেন। সেদিন তাকে ওইভাবে দেখে কী যে খুশি হয়েছিলাম! সিট থেকে দাঁড়িয়ে শুধু তাকিয়েছিলাম। কেননা, তিনি আমার এতটাই পছন্দের নায়ক। তার কত নাটক যে দেখেছি! যাই হোক, একসময় তার সঙ্গেও অভিনয় করেছি। বিটিভিতে আজিজুল হাকিম ভাই ও আমার অনেক নাটক প্রচার হয়েছে। অসম্ভব ভালো মানুষ তিনি। বিনয় যাকে বলে তার শতভাগ আছে এই মানুষটির মধ্যে। আজিজুল হাকিম ভাইয়ের সঙ্গে কাজ করে অনেক কিছু শিখেছি। সত্যিকারের একজন শিল্পী তিনি।
টনি ডায়েস
একসময় টনি ডায়েস এবং আমি অনেক নাটকে অভিনয় করেছি। তার সঙ্গে আমার বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক। অনেক পরিচালকই তখন টনি ডায়েসকে নেওয়ার পর আমার কথা বলতেন। কখনো কখনো টনি ডায়েসও বলতেন। দর্শকরা সেসব নাটক বেশ ভালোভাবে গ্রহণ করেছিলেন। কাজ করতে করতে আমাদের দুজনের বোঝাপড়াটা বেশ ভালো ছিল। দুজনে সংলাপ ডেলিভারি কীভাবে দেবো, এসব আলোচনা করে নিতাম। রিহার্সাল করে নিতাম যেন কাজটি ভালো হয়। মাঝে মাঝে শুটিং করতে গিয়ে এরকম হতো—দুজনের পোশাকের রং মিলে যেত। এটা অবশ্য কাকতালীয়ভাবে হতো। সবশেষে বলতে চাই, টনি ডায়েস একজন ভালো মানুষ। তার কণ্ঠ সুন্দর। তিনি খুব ভালো একজন আবৃত্তিকারও।


Comments