কৃষিজমিতে ইটভাটা, ক্ষুব্ধ কৃষক

কুড়িগ্রাম ইট ভাটা
কুড়িগ্রামের উলিপুরের তবকপুর ইউনিয়নের হামিরবাজার এলাকায় কৃষি জমিতে ইটভাটা। ছবি: এস দিলীপ রায়/স্টার

কুড়িগ্রামের উলিপুরের তবকপুর ইউনিয়নের হামিরবাজার এলাকায় অনুমতি না নিয়েই কৃষিজমিতে অবৈধভাবে নির্মিত হচ্ছে ইটভাটা। ৩ ফসলি জমিতে ইটভাটা নির্মাণ নিয়ে কৃষকেরা ক্ষুব্ধ।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে (ইউএনও) এ বিষয়ে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন তারা।

কৃষকেরা বলছেন, ইটভাটাটি হলে ফসল উৎপাদনে ব্যাপক ক্ষতি হবে।

অভিযোগের পর ইটভাটাটির নির্মাণকাজ বন্ধ করে দিয়েছে স্থানীয় প্রশাসন।

তবে কৃষকেরা বলছেন, স্থাপনাগুলো এখনও সরানো হয়নি। যেকোনো সময় আবার শুরু হতে পারে নির্মাণকাজ।

স্থানীয় কৃষক নুর মোহাম্মদ (৬৫) দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'তবকপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান মাহমুদার রহমান বকুল একমাস আগে কৃষিজমিতে ইটভাটা নির্মাণ শুরু করেন। তাকে কৃষিজমিতে ইটভাটা নির্মাণ না করতে অনুরোধ করা হলেও তিনি তা শোনেনি।'

'বর্তমানে আমরা এসব জমি থেকে বছরে ৩ বার ফসল পাই। এখানে ইটভাটা হলে কমপক্ষে ৫০০ বিঘা জমিতে ফসল উৎপাদন ব্যাহত হবে,' যোগ করেন তিনি।

একই গ্রামের কৃষক সেকেন্দার আলী (৬০) ডেইলি স্টারকে বলেন, 'গত সোমবার থেকে ইটভাটাটির নির্মাণকাজ বন্ধ রাখা হলেও স্থাপনাগুলো এখনো সরানো হয়নি। আশঙ্কা করছি, যে কোনো সময় এর নির্মাণকাজ চালু হতে পারে।'

'আমাদের দাবি কৃষিজমি থেকে ইটভাটাটির স্থাপনা সরিয়ে নিতে হবে,' তিনি বলেন।

উলিপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম ডেইলি স্টারকে বলেন, 'ইটভাটাটির নির্মাণকাজ শুরুর আগে কৃষিবিভাগ থেকে অনুমতি নেওয়া হয়নি।'

'কৃষি জমিতে ইটভাটা হলে কৃষি মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে। ওই স্থানে কৃষি জমিতে ইটভাটা নির্মাণের অনুমতি কৃষি বিভাগ থেকে দেওয়া হবে না,' বলেন তিনি।

কৃড়িগ্রাম পরিবেশ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক রেজাউল করিম ডেইলি স্টারকে বলেন, 'ওই স্থানে কৃষিজমিতে ইটভাটা নির্মাণে পরিবেশ অধিদপ্তর থেকেও অনুমিত নেওয়া হয়নি। এ ছাড়া, এ ব্যাপারে কেউ আবেদনও করেননি।'

'অবৈধ ইটভাটার বিরুদ্ধে অভিযান অব্যাহত রয়েছে,' যোগ করেন তিনি।

কৃষিজমিতে নির্মাণাধীন ইটভাটাটির মালিক তবকপুর ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মাহমুদার রহমান বকুল ডেইলি স্টারকে বলেন, 'ইটভাটাটি নির্মাণকাজ শুরুর আগে কোনো অনুমতি নেওয়া হয়নি। উপজেলা প্রশাসন থেকে নিষেধাজ্ঞা আসায় সোমবার থেকে এর নির্মাণকাজ বন্ধ আছে।'

তিনি জানান, ইটভাটা নির্মাণের জন্য সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলোতে আবেদন করা হয়েছে এবং অনুমতি পেলে আবার এর নির্মাণকাজ শুরু করবেন।

'আমাদের এলাকায় সবগুলো ইটভাটাই কৃষিজমিতে নির্মিত,' বলেন তিনি।

উলিপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শোভন রাংশা ডেইলি স্টারকে বলেন, 'কৃষকদের লিখিত অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে কৃষি জমিতে নির্মাণাধীন ইটভাটাটির নির্মাণকাজ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। এর মালিক নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে আবার নির্মাণকাজ শুরু করলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।'

Comments

The Daily Star  | English

Made with US cotton? Pay less at US customs

US customs will apply a tariff rate only to the non-American portion of a product's value

10h ago