ফিজিওথেরাপি

চিকুনগুনিয়া তো সারল, ব্যথা সামলাবেন কীভাবে?

শরীরের বিভিন্ন জয়েন্টে ব্যথার কারণে হাঁটাচলা এবং অন্যান্য দৈনন্দিন কাজকর্মে বেশ অসুবিধায় পড়ে মি. রহমান হাসপাতালে যান। 

তিনি চিকিৎসককে জানান, দুই থেকে তিন দিন ধরে তিনি জ্বরে আক্রান্ত। পরীক্ষার পর তার চিকুনগুনিয়া ধরা পড়ে। 

চিকুনগুনিয়া জ্বরের পর রহমানের মতো অনেকেই শরীরের বিভিন্ন জয়েন্ট ও পেশিতে তীব্র ব্যথায় ভোগেন। প্রতিদিন অনেকে এই অস্বস্তি এবং ব্যথা থেকে মুক্তি পাওয়ার উপায় খোঁজেন।

কীভাবে বুঝবেন?

চিকুনগুনিয়ার পর জয়েন্টের ব্যথা সাধারণ বিষয়। তবে এটি দীর্ঘস্থায়ী হতে পারে। কখনো কখনো ব্যথা কয়েক মাস বা বছর ধরে থাকতে পারে।

প্রদাহজনিত ব্যথা (স্পর্শ করলে কোমল, ফোলা, এবং উষ্ণ অনুভূত হয়) যা হাত, কব্জি, গোড়ালি এবং পায়ের জয়েন্টকে প্রভাবিত করতে পারে।

জয়েন্ট ফুলে যেতে পারে, শক্ত হয়ে হতে পারে। কখনো কখনো চলাফেরা কষ্টকর হয়ে উঠতে পারে।

মাঝেমধ্যে ক্লান্তি, মাথাব্যথা, বমি বমি ভাব, পেশিতে ব্যথা এবং ফুসকুড়ির মতো লক্ষণ দেখা দিতে পারে।

ব্যথা সামলাতে করণীয়

একজন ফিজিওথেরাপিস্ট চিকিৎসা নির্দেশিকা অনুযায়ী রোগীর মূল্যায়ন করবেন। তিনি পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দেখবেন রোগীর শারীরিক কোনো সমস্যা আছে কি না।  

আইস প্যাক: জয়েন্টের যেখানে ব্যথা বা ফোলা থাকবে, সেখানে কাপড়ে মোড়ানো আইসপ্যাক ব্যবহার করতে পারেন। এটি ব্যথা ও ফোলা কমাতে সাহায্য করে।

গরম পানিতে গোসল: কখনও কখনও (বিশেষত ফোলা না থাকলে) গরম পানিতে গোসল করলে ব্যথা থাকা জয়েন্টে আরাম পাওয়া যায়।

পর্যাপ্ত পানি পান: যথেষ্ট পানি পান করুন। কারণ শরীর পানিশূন্য হলে জয়েন্টের ব্যথা বাড়তে পারে।

থেরাপিউটিক ব্যায়াম: ফিজিওথেরাপিস্ট রোগীর সমস্যা অনুযায়ী বিভিন্ন ধরনের ব্যায়াম করতে বলতে পারেন। এর মধ্যে থাকতে পারে হালকা ব্যায়াম, জয়েন্ট নড়াচড়া করা, মাংসপেশি টানা ও শক্ত করা। এগুলো ব্যথা ও ফোলা কমায় এবং চলাফেরা ও দৈনন্দিন কাজ সহজ করে।

সংক্রমণ থেকে কীভাবে নিজেকে রক্ষা করবেন?

সংক্রমিত স্ত্রী মশার মাধ্যমে চিকুনগুনিয়া ভাইরাস ছড়ায়। বিশেষ করে দিনের বেলা এটি ঘটে।

ঘরবাড়ি এবং আশেপাশে জমে পানি মশার প্রজনন বাড়ায়।

চিকুনগুনিয়ায় আক্রান্ত হয়েছেন, মনে হলে প্রথম কয়েক দিন মশার কামড় থেকে দূরে থাকতে চেষ্টা করুন।

চিকুনগুনিয়ার প্রাদুর্ভাব নিয়ে সচেতনতা এবং সঠিক ব্যবস্থাপনা করা জরুরি। রোগের শুরু থেকেই বিশেষজ্ঞদের সাহায্য নেওয়া উচিত। ব্যায়াম ও ফিজিওথেরাপি ব্যথা ও জয়েন্টের সমস্যা কমাতে সাহায্য করে।

লেখক: ডা. মো. ফারুকুল ইসলাম
ভাইস প্রিন্সিপাল, ঢাকা কলেজ অব ফিজিওথেরাপি (ডিসিপিটি) 
ইমেইল: [email protected]

Comments