যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন করে গাজায় ১৫৩ টন বোমা ফেলার কথা স্বীকার করলেন নেতানিয়াহু

অক্টোবরের প্রথম সপ্তাহে ফিলিস্তিনি সশস্ত্র সংগঠন হামাস ও ইসরায়েল যুদ্ধবিরতি চুক্তিতে সই করেছে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ২০ দফা ফর্মুলায় তৈরি ওই চুক্তি শুরুতে ইস্পাত-কঠিন মনে হলেও সাম্প্রতিক ঘটনায় মনে হচ্ছে আগের চুক্তিগুলোর মতো এটাও ঠুনকো বলে মনে করছেন অনেক বিশ্লেষক।
আন্তর্জাতিক মহলের ওই আশঙ্কায় ইন্ধন যুগিয়েছেন ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু স্বয়ং। ইসরায়েলি পার্লামেন্ট নেসেটে বড়াই করে বলেছেন, যুদ্ধবিরতির মাঝেও গাজায় ১৫৩ টন বোমাবর্ষণ করেছে ইসরায়েলি সেনা।
গতকাল মঙ্গলবার এই তথ্য জানিয়েছে তুরস্কের আনাদোলু এজেন্সি ও যুক্তরাজ্যভিত্তিক সংবাদমাধ্যম দ্য মিডল ইস্ট আই।
গত সোমবার নেসেটের শীতকালীন অধিবেশনের উদ্বোধনী বক্তব্য দেওয়ার সময় বোমা হামলার বিষয়টি স্বীকার করেন আন্তর্জাতিক আদালতে গণহত্যার দায়ে অভিযুক্ত নেতানিয়াহু।
নেতানিয়াহুর বক্তব্যের সময় বিরোধীদলের আইনপ্রণেতারা বারবার তাকে বাধা দেন। তারা নেতানিয়াহু সরকারের নীতির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানান ও জেনেবুঝে গাজার যুদ্ধ দীর্ঘায়ত করার জন্য প্রধানমন্ত্রীর কড়া সমালোচনা করেন।
প্রতিবেদন অনুসারে, তার এই বক্তব্য গাজার যুদ্ধবিরতি চুক্তির সুস্পষ্ট লঙ্ঘন স্বীকার করে নেওয়ার সামিল।
গর্বিত কণ্ঠে নেতানিয়াহু বলেন, 'যুদ্ধবিরতির মধ্যে দুই ইসরায়েলি সেনা মারা পড়ে… জবাবে আমরা ১৫৩ টন বোমা ফেলেছি এবং গাজা উপত্যকার বেশ কয়েকটি লক্ষ্যবস্তুতে হামলা চালিয়েছি।

গাজার হামাস-নিয়ন্ত্রিত গণমাধ্যম কার্যালয় জানিয়েছে, গত ১০ অক্টোবর থেকে যুদ্ধবিরতি চালুর পর এক সপ্তাহের ব্যবধানে অন্তত ৮০ বার যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন করেছে ইসরায়েল। এসব ঘটনায় ৯৭ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। শুধু রোববারেই (যেদিন ১৫৩ টন বোমা হামলা হয়) নিহত হন ৪৪ জন। এ ছাড়া, আরও ২৩০ জন আহত হয়েছেন।
তেল আবিবের অভিযোগ, হামাস রাফায় ইসরায়েলি বাহিনীর ওপর হামলা চালিয়েছে। ওই হামলায় দুই সেনা নিহতেরও কথা জানায় ইসরায়েল। তবে হামাস ওই হামলার সঙ্গে সংশ্লিষ্টতার দায় অস্বীকার করে বলেছে, তারা যুদ্ধবিরতি চুক্তির প্রতি শ্রদ্ধাশীল থাকবে।
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে হামাস হামলা চালায়। ওই হামলার প্রতিশোধ নিতে দুই বছর ধরে গাজায় গণহত্যা চালাচ্ছে ইসরায়েল। এতে অন্তত ৬৮ হাজার ২০০ ফিলিস্তিনি নিহত ও এক লাখ ৭০ হাজার ২০০ জন আহত হয়েছেন।
Comments