রাশিয়ার ২ তেল কোম্পানির ওপর যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা

শান্তিচুক্তির আলোচনায় বসতে মস্কোকে চাপ দেওয়ার প্রচেষ্টার অংশ হিসেবে যুক্তরাষ্ট্র রাশিয়ার দুই বৃহত্তম তেল কোম্পানি—রসনেফট ও লুকঅয়েলের ওপর নতুন নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। বিবিসি এক প্রতিবেদনে এমনটি জানায়।
ন্যাটো মহাসচিব মার্ক রুত্তের সঙ্গে শান্তি আলোচনা নিয়ে বৈঠকের পর মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেন, প্রতিবার আমি ভ্লাদিমিরের (পুতিনের) সঙ্গে কথা বলি, আলোচনা ভালোই হয়, কিন্তু তারপর কিছুই এগোয় না—একেবারেই না।
একদিন আগেই ট্রাম্প জানান রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে বুদাপেস্টে নির্ধারিত বৈঠকটি অনির্দিষ্টকালের জন্য স্থগিত করা হচ্ছে। এরপরই নিষেধাজ্ঞার এই ঘোষণা এলো।
বুধবার ইউক্রেনজুড়ে তীব্র গোলাবর্ষণ চালায় রাশিয়া। এতে অন্তত সাতজন নিহত হন, তাদের মধ্যে শিশুরাও রয়েছে।
মার্কিন অর্থমন্ত্রী স্কট বেসেন্ট বলেন, 'পুতিনের এই অর্থহীন যুদ্ধ বন্ধে অস্বীকৃতির কারণেই নতুন নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা প্রয়োজন।' তিনি আরও বলেন, এই তেল কোম্পানিগুলো ক্রেমলিনের 'যুদ্ধযন্ত্রে অর্থ জোগায়।'
বেসেন্ট এক বিবৃতিতে বলেন, 'হত্যাযজ্ঞ থামানোর এবং অবিলম্বে যুদ্ধবিরতি ঘোষণার এখনই সময়।'
বুধবার হোয়াইট হাউসের ওভাল অফিসে রুত্তের পাশে বসে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প বলেন, পুতিন শান্তি প্রতিষ্ঠার বিষয়ে আন্তরিক নন, এবং তিনি আশা করেন এই নতুন নিষেধাজ্ঞা মস্কোকে আলোচনায় অগ্রগতি আনতে বাধ্য করবে।
'আমার মনে হলো, সময় হয়ে গেছে। আমরা অনেক দিন অপেক্ষা করেছি,' বলেন ট্রাম্প।
তিনি নিষেধাজ্ঞার এ পদক্ষেপকে 'অসাধারণ' বলে উল্লেখ করে বলেন, রাশিয়া যদি যুদ্ধ বন্ধে রাজি হয়, তবে এই নিষেধাজ্ঞাগুলো দ্রুতই তুলে নেওয়া যেতে পারে।
রুত্তে এই পদক্ষেপের প্রশংসা করে বলেন, 'এটি পুতিনের ওপর আরও চাপ সৃষ্টি করছে। চাপ দিতে হয়, আর আজ প্রেসিডেন্ট সেটাই করেছেন।'
আগস্টে আলাস্কায় ইউক্রেন যুদ্ধের অবসান নিয়ে ট্রাম্প ও পুতিন বৈঠক করেছিলেন, তবে দ্বিতীয় বৈঠকটি এখন স্থগিত করা হয়েছে।
ট্রাম্প জানান, প্রধান বাধা হলো মস্কোর ফ্রন্টলাইনে যুদ্ধ বন্ধে অস্বীকৃতি।
গত সপ্তাহে যুক্তরাজ্যও রসনেফট ও লুকঅয়েলের ওপর একই ধরনের নিষেধাজ্ঞা দেয়। অর্থমন্ত্রী র্যাচেল রিভস বলেন, 'রুশ তেলের জন্য বৈশ্বিক বাজারে কোনো স্থান নেই।'
জবাবে লন্ডনে রুশ দূতাবাস জানায়, এসব নিষেধাজ্ঞা বৈশ্বিক জ্বালানি সরবরাহ ব্যাহত করবে, দাম বাড়াবে এবং উন্নয়নশীল দেশগুলোর জ্বালানি নিরাপত্তায় 'ক্ষতিকর প্রভাব' ফেলবে।
রসনেফট ও লুকঅয়েল প্রতিদিন প্রায় ৩ দশমিক ১ মিলিয়ন ব্যারেল তেল রপ্তানি করে। রসনেফট একাই রাশিয়ার মোট তেল উৎপাদনের প্রায় অর্ধেকের যোগানদাতা, যা বৈশ্বিক উৎপাদনের ৬ শতাংশ।
তেল ও গ্যাস রাশিয়ার প্রধান রপ্তানি খাত, এর বড় ক্রেতা চীন, ভারত ও তুরস্ক। ট্রাম্প এই দেশগুলোকে রুশ তেল কেনা বন্ধ করার আহ্বান জানিয়েছেন।
যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইভেট কুপার বলেন, 'মার্কিন নিষেধাজ্ঞা অত্যন্ত প্রশংসনীয় ও সময়োপযোগী।'
Comments