যারা সংস্কারের আলাপ করছে তাদেরও শিক্ষার অভাব আছে : সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম

'দেশে শিক্ষার কোনো গুরুত্ব দেখছি না। দেখলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের বেতন বাড়ছে, তাদের দাবী মানা হচ্ছে। উপেক্ষিত থাকছে স্কুলের শিক্ষক, প্রাথমিক শিক্ষকদের প্রতি আমাদের নজর দেওয়া উচিৎ। এটা হচ্ছে না- এতে বুঝা যাচ্ছে মৌলিক সংস্কারের চিন্তা নেই। যারা সংস্কারের আলাপ করছে তাদেরও শিক্ষার অভাব আছে।'
শনিবার বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের ইসফেনদিয়ার জাহেদ হাসান মিলনায়তনে আবু খালেদ পাঠান সাহিত্য পুরস্কার অনুষ্ঠানে কথাগুলো বলছেন বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ, কথাসাহিত্যিক ও অধ্যাপক সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম। ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে দ্বিতীয়বারের মতো আবু খালেদ পাঠান সাহিত্য পুরস্কার ২০২৫ প্রদান করা হয়েছে। এবার পুরস্কার পেলেন কথাসাহিত্যিক সৈয়দ কামরুল হাসান এবং প্রাবন্ধিক ও নাট্যকার গোলাম শফিক।
সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম বলেন, আশাবাদ একটি মোমবাতির মতো। একটা মোমবাতি থাকলেই হয়। একটি মোমবাতি দিয়ে অনেকগুলো মোমবাতিতে আলোকপ্রজ্জ্বলন করা যায়। যার হাতে আশাবাদের মোমবাতি আছে তার পক্ষে পুরো দেশকে জাগিয়ে তোলা সম্ভব।
শিক্ষা প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে বলেন, সংস্কৃতির শিক্ষা আছে, শিক্ষার সংস্কৃতি আছে- এই দুটো সমভাবে এগিয়ে গেলেই দেশ এগিয়ে যাবে। তিনি আরও বলেন আমাদের সমাজে নিজের সঙ্গে বিতর্ক প্রয়োজন। আমাদের সেই বিতর্ক নেই, তর্ক আছে। ফলে আগাচ্ছি না, সেই শিক্ষার সংস্কৃতি হারিয়ে যাচ্ছে। এর অন্ধকার সময়ে একটা ভালো কাজ করে যাচ্ছে আবু খালেদ পাঠান ফাউন্ডেশন।
অনুষ্ঠানে লেখক ও সম্পাদক ফয়সাল আহমেদ এর সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কথাসাহিত্যিক আহমদ বশীর, লেখক ও গবেষক আলতাফ পারভেজ, কবি উপল হাসান এবং ফাউন্ডেশনের সভাপতি নায়লা ইয়াসমিন।
আলতাফ পারভেজ বলেন, ইট, বালু, সিমেন্ট আর টাকা এখন মানুষ এই চারটি বিষয়কে ভালোবাসে। এই সময়ে আমাদের নতুন করে ভাবতে হবে। লক্ষ্যটাকে বড় করতে হবে। দুঃসাহসি কাজ করতে হবে। আমাদের সাহিত্যধর্মী কাজ দরকার, সংস্কৃতিধর্মী কাজ দরকার। না হয় বাংলাদেশ পিছিয়ে পড়বে।
অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, কবি সদরুল উলা, সাংবাদিক সাইফুল হক মোল্লা দুলু, লেখক গবেষক মু আ লতিফ, শিশুসাহিত্যিক মাহফুজুর রহমান, এয়ার ভাইস মার্শাল আব. এম সানাউল হক। লেখক গবেষক মার্জিয়া লিপির সঞ্চলনায় অনুষ্ঠানে পুরস্কার প্রদান শেষে গান পরিবেশন করেন শিল্পী ও কবি কফিল আহমেদ।

অনুষ্ঠানে পুরস্কারপ্রাপ্ত দুইজন লেখককে পুরস্কারের নগদ অর্থমূল্য ২৫ হাজার টাকা, ক্রেস্ট, উত্তরীয় ও শংসাবচন তুলে দেয়া হয়। অনুষ্ঠানের শুরুতেই গত বছরের পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠানের উপর একটি ভিডিওচিত্র প্রদর্শন করা হয়
বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ ও প্রগতিশীল সাংস্কৃতিক আন্দোলনের পুরোধা ব্যাক্তিত্ব আবু খালেদ পাঠান এর নামে এই পুরস্কার প্রবর্তন করা হয়। উল্লেখ্য, গতবছর এই পুরস্কার পেয়েছেন বিশিষ্ট কবি ও সংগীতশিল্পী কফিল আহমেদ এবং কবি ও প্রাবন্ধিক আফরোজা সোমা।
Comments