চীনে নিউমোনিয়ার প্রকোপ, বিস্তারিত তথ্য চেয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা

বেইজিং এর এক শিশু হাসপাতালে রোগীদের ভীড়। ছবি: এএফপি (২৩ নভেম্বর, ২০২৩)
বেইজিং এর এক শিশু হাসপাতালে রোগীদের ভীড়। ছবি: এএফপি (২৩ নভেম্বর, ২০২৩)

উত্তর চীনে হঠাত করেই শ্বাস-প্রশ্বাসজনিত রোগ নিউমোনিয়ার প্রকোপ দেখা দিয়েছে। এতে মূলত শিশুরা আক্রান্ত হচ্ছে। এ বিষয়ে চীনের কাছে বিস্তারিত তথ্য চেয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা।

আজ বৃহস্পতিবার কাতারভিত্তিক গণমাধ্যম আল জাজিরা এই তথ্য জানিয়েছে।

বুধবার এক বিবৃতিতে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা জানায়, তারা  চীনের কাছে 'শ্বাস-প্রশ্বাসজনিত রোগ ও শিশুদের মাঝে নিউমোনিয়ার প্রকোপ বৃদ্ধির বিষয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে বিস্তারিত তথ্য চেয়েছে।'

চীনে গত তিন বছর ধরে নভেম্বরে জিরো-কোভিড কৌশল প্রযোজ্য ছিল। উল্লেখিত তিন বছরের তুলনায় এ বছর ইনফ্লুয়েঞ্জার মতো রোগে আক্রান্ত মানুষের সংখ্যা বাড়ছে।

২০২২ এর ডিসেম্বরে হঠাত করেই জিরো-কোভিড নীতি বাতিল করে চীন।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা উল্লেখ করে, চীনের জাতীয় স্বাস্থ্য কমিশন এ মাসের শুরুতে এক সংবাদ সম্মেলনে জানায়, দেশটিতে শ্বাস-প্রশ্বাসজনিত রোগের প্রাদুর্ভাব দেখা দিয়েছে। কারণ হিসেবে জিরো-কোভিড নীতি প্রত্যাহারের কথা জানায় তারা। এ ছাড়া, কোভিডের পাশাপাশি ইনফ্লুয়েঞ্জা, মাইকোপ্লাজমা নিউমোনিয়া (এক ধরনের ব্যাকটেরিয়াজনিত সংক্রমণ যা মূলত ছোট শিশুদের মাঝে দেখা দেয়) ও রেসপিরেটরি সিনসিটিয়াল ভাইরাস (আরএসভি) আক্রান্তের সংখ্যাও বাড়ছে।

বেইজিং এর এক শিশু হাসপাতালে রোগীদের ভীড়। ছবি: এএফপি (২৩ নভেম্বর, ২০২৩)
বেইজিং এর এক শিশু হাসপাতালে রোগীদের ভীড়। ছবি: এএফপি (২৩ নভেম্বর, ২০২৩)

২০১৯ সালের শেষের দিকে উহানে অজ্ঞাত রোগ ছড়িয়ে পড়ার বিষয়ে প্রশ্ন তুলেছিল প্রোমেড নামের একটি অনলাইন মেডিকেল কমিউনিটি। পরবর্তীতে এই রোগ করোনাভাইরাস হিসেবে চিহ্নিত হয়। একই সংস্থা আবারও উদ্বেগ প্রকাশ করে জানিয়েছে, গণমাধ্যমে বারবার উত্তর চীনের শিশুদের মাঝে এক নতুন ধরনের নিউমোনিয়া ছড়িয়ে পড়ার সংবাদ আসছে।

তাইওয়ানের সংবাদমাধ্যম এফটিভি নিউজ জানায়, বেইজিং, লিয়াওনিং ও উত্তর চীনের অন্যান্য অঞ্চলের শিশু হাসপাতালগুলো 'অসুস্থ রোগীদের চাপে' হিমশিম খাচ্ছে। কর্তৃপক্ষ কী 'আরেকটি মহামারি ধামাচাপা' দেওয়ার চেষ্টা চালাচ্ছে কী না, সে বিষয়ে অভিভাবকরা প্রশ্ন তুলছেন।

প্রোমেড জানিয়েছে, এই 'উদ্বেগজনক অসুস্থতা' নিয়ে আরও সুনির্দিষ্ট তথ্য প্রয়োজন।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার বিবৃতিতে আরও বলা হয়, 'বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা সম্ভাব্য মহামারির বিষয়ে বাড়তি তথ্য চাওয়ার পাশাপাশি যেসব জায়গায় শিশুরা বেশি আক্রান্ত হচ্ছে, সেখান থেকে গবেষণাগারের পরীক্ষার ফল চেয়েছে। আন্তর্জাতিক স্বাস্থ্য নীতিমালার আওতায় এই অনুরোধ জানানো হয়েছে।'

'এ ছাড়া আমরা ইনফ্লুয়েঞ্জা, করোনাভাইরাস, আরএসভি ও মাইকোপ্লাজমা নিউমোনিয়ার সাম্প্রতিক ধারা সম্পর্কে তথ্য, দেশটির স্বাস্থ্য সেবা খাতের বর্তমান পরিস্থিতি সম্পর্কে জানতে চেয়েছি। আমরা দেশটির সঙ্গে কারিগরি অংশীদারিত্ব ও আগে প্রতিষ্ঠিত নেটওয়ার্কের আওতায় চিকিৎসাকর্মী ও বিজ্ঞানীদের সঙ্গে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছি', যোগ করে সংস্থাটি।  

বেইজিং এর এক শিশু হাসপাতালে জায়গার অভাবে সিঁড়িতেই শিশুদের চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। ছবি: এএফপি (২৩ নভেম্বর, ২০২৩)
বেইজিং এর এক শিশু হাসপাতালে জায়গার অভাবে সিঁড়িতেই শিশুদের চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। ছবি: এএফপি (২৩ নভেম্বর, ২০২৩)

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার কর্মকর্তা ড. ক্রুতিকা কুপ্পাল্লি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে জানান, এটা 'যেকোনো ধরনের' অসুস্থতা হতে পারে এবং অনেক দেশেই করোনাভাইরাসের বিধিনিষেধ প্রত্যাহারের পর শ্বাসপ্রশ্বাসজনিত রোগে আক্রান্তের সংখ্যা বেড়েছে।

'এই রোগের উপসর্গ, ধরন ও আক্রান্তদের কী কী পরীক্ষা করা হয়েছে, সে বিষয়ে আমাদের আরও তথ্য প্রয়োজন', যোগ করেন তিনি।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা চীনের মানুষকে এ ধরনের রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি কমাতে টিকার সর্বশেষ ডোজগুলো নেওয়া, সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা, প্রয়োজন অনুযায়ী মাস্ক পরা এবং অসুস্থ হলে বাসায় থাকার উপদেশ দিয়েছে।

অসুস্থ বোধ করলে পরীক্ষা করাও গুরুত্বপূর্ণ, মত দেয় বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা।

 

Comments

The Daily Star  | English

From 2019 to 2025: How Ducsu election shows change

With this Ducsu poll being the first since the July uprising, I decided to witness history with my own eyes -- this time as a journalist and alumnus

11m ago