ময়মনসিংহে খানকা শরিফ ভাঙচুরের ঘটনায় অজ্ঞাতনামাদের বিরুদ্ধে মামলা

ময়মনসিংহ নগরীর সুতিয়াখালী বাজারে খানকা শরিফে হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনায় মামলা করা হয়েছে। শুক্রবার রাতেই খানকার খাদেম কোতোয়ালি মডেল থানায় এই মামলা করেন। মামলায় অজ্ঞাতনামা ৫০ থেকে ৬০ জনকে আসামি করা হয়েছে।
'আতে রাসুল খাজা বাবার দায়রা শরিফ' নামের ওই খানকায় গতকাল শুক্রবার জুমার নামাজের সময় হামলার ঘটনা ঘটে। স্থানীয়ভাবে এটি 'গনি ফকিরের আস্তানা' নামে পরিচিত।
মামলার বাদী উসমান গনি ফকির অভিযোগ করে বলেন, 'জুমার নামাজের সময় একদল লোক দেশীয় অস্ত্র নিয়ে খানকায় হামলা চালায় এবং ভাঙচুর ও লুটপাট করে। এ সময় আমরা কেউ সেখানে ছিলাম না। হামলাকারীরা ঘরের দরজা কুপিয়ে তছনছ করেছে এবং একটি সাউন্ডবক্স নিয়ে গেছে।'
তিনি আরও বলেন, 'প্রায় ১৮ বছর ধরে এখানে আমাদের আস্তানা। এখানে খাজা বাবার দায়রা শরিফে মিলাদ ও গানবাজনা হতো। কোনো কিছু না বলেই হঠাৎ করে খানকাটি ভেঙে দেওয়া হলো।' এখানে কোনো ধরনের 'অসামাজিক কার্যকলাপ' কখনো হয়নি বলেও তিনি দাবি করেন।
সুতিয়াখালী বাজার কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক মো. আলিউল আজিম বলেন, 'আমরা কখনো এই খানকায় কোনো রকম অসামাজিক কার্যকলাপের কথা শুনিনি এবং এ ব্যাপারে কেউ কখনো অভিযোগও করেনি। প্রতি শুক্রবার রাতে এখানে ভক্তিমূলক গানের অনুষ্ঠান হতো।'
ঘটনার নিন্দা ও হামলাকারীদের বিচার দাবি করে ময়মনসিংহ বাউল সমিতির সাধারণ সম্পাদক রেজাউল করিম আসলাম বলেন, 'সুফি এবং বাউল দর্শন কখনোই সহিংসতা ও বিশৃঙ্খলা সমর্থন করে না।'
বাংলাদেশ সুফিবাদ ঐক্য পরিষদের সভাপতি খলিলুর রহমান পীরবাবা চিশতী নিজামী বলেন, 'আস্তানা ভাঙচুর করার খবর আমাকে জানানো হয়েছে। আমরা এ ঘটনার তীব্র নিন্দা জানাই এবং হামলাকারীদের বিচার দাবি করছি।'
কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শিবিরুল ইসলাম বলেন, 'খানকা শরিফে ভাঙচুরের খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। এ ঘটনায় মামলা হয়েছে। জড়িত ব্যক্তিদের শনাক্ত করতে পুলিশ কাজ করছে এবং দ্রুতই তাদের গ্রেপ্তার করা হবে।'
Comments