দ্য ডেইলি স্টার কার্যালয়ে হামলা: গ্রেপ্তার আরও ১, মোট ২৯
রাজধানীর কারওয়ান বাজারে দ্য ডেইলি স্টার কার্যালয়ে হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে আজমির হোসেন আকাশ (২৭) নামে একজনকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)।
গতকাল মঙ্গলবার তেজগাঁও থানাধীন এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানায় র্যাব–৩।
গ্রেপ্তার আজমির হোসেন আকাশ তেজগাঁওয়ের তেজতুরি বাজার এলাকার বাসিন্দা, তার বাবার নাম আলমগীর হোসেন।
এ নিয়ে দ্য ডেইলি স্টার ও প্রথম আলো কার্যালয়ে হামলা ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় মোট ২৯ জনকে গ্রেপ্তার করা হলো।
র্যাব জানায়, গত ১৯ ডিসেম্বর রাতে দ্য ডেইলি স্টার কার্যালয়ে হামলার ঘটনায় করা মামলার তদন্তের অংশ হিসেবে সিসিটিভি ফুটেজ পর্যালোচনা ও তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় জড়িতদের শনাক্ত করা হয়। এরই ধারাবাহিকতায় অভিযান চালিয়ে আজমির হোসেন আকাশকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
গ্রেপ্তারের সময় আজমির হোসেন আকাশের কাছ থেকে দুটি মনিটর, একটি সিপিইউ, একটি হার্ডডিস্ক, তিনটি কেবল, একটি সুইচ অ্যাডাপ্টার ও একটি মাউস উদ্ধার করা হয়েছে।
এসব সরঞ্জাম হামলার সময় লুট করা হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে। গ্রেপ্তার ব্যক্তির বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে বলে জানায় র্যাব।
হামলার সঙ্গে জড়িত অন্যদের গ্রেপ্তারে র্যাবের অভিযান অব্যাহত রয়েছে বলেও জানিয়েছে বাহিনীটি।
এর আগে ২২ ডিসেম্বর দ্য ডেইলি স্টারের অপারেশন বিভাগের প্রধান মিজানুর রহমান তেজগাঁও থানায় ৩৫০–৪০০ জন অজ্ঞাত আসামির বিরুদ্ধে মামলা করেন।
মামলায় সন্ত্রাসবিরোধী আইনের ৬ (১), বিশেষ ক্ষমতা আইনের ১৫ (৩) ও সাইবার নিরাপত্তা অধ্যাদেশের ২৬ (১) ধারা যুক্ত করা হয়েছে।
মামলার বিবরণ অনুযায়ী, গত ১৯ ডিসেম্বর রাত ১২টা ৩৫ মিনিটের দিকে হামলাকারীরা দেশীয় অস্ত্র, লাঠি ও দাহ্য পদার্থ নিয়ে জোরপূর্বক গেট ও কাচের দরজা ভেঙে ভবনের ভেতরে ঢুকে পড়ে। তারা ভেতরে ঢুকে কর্মীদের মারধর, অফিসের জিনিসপত্র ভাঙচুর, মূল্যবান সামগ্রী লুট এবং আসবাবপত্র ও গুরুত্বপূর্ণ নথিতে আগুন দেয়।
হামলাকারীরা ভবনের প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় তলায় আগুন ধরিয়ে দেয়, এতে গুরুত্বপূর্ণ সম্পদ ও নথিপত্র মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। অন্য তলাগুলোতেও ব্যাপক ভাঙচুর ও লুটপাট হয়।
এই হামলায় ২০০টির বেশি কম্পিউটার, ল্যাপটপ, ক্যামেরা ও প্রিন্টারসহ বিভিন্ন ইলেকট্রনিক যন্ত্র নষ্ট হয়, যার আনুমানিক মূল্য প্রায় ৫ কোটি টাকা।
এ ছাড়া, বিভিন্ন লকারে রাখা প্রায় ৩৫ লাখ টাকা লুট করা হয়।
এই ঘটনায় মোট ক্ষতির পরিমাণ প্রায় ৪০ কোটি টাকা, যা পরবর্তী মূল্যায়নের পর আরও বাড়তে পারে।
এই হামলায় সাংবাদিক ও কর্মচারীদের জীবন মারাত্মক ঝুঁকির মুখে পড়ে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও ফায়ার সার্ভিসের যৌথ প্রচেষ্টায় ৩০ জন কর্মীকে উদ্ধার করা হয়।
হামলার কারণে ১৯ ডিসেম্বর দ্য ডেইলি স্টারের ছাপা সংস্করণ প্রকাশ বন্ধ রাখতে হয় এবং অনলাইন কার্যক্রমও ১৭ ঘণ্টা বন্ধ ছিল।

Comments