প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে শ্রেণিকক্ষ দখল করে বসবাসের অভিযোগ

এইচ কে বিপুল স্মৃতি উচ্চবিদ্যালয়,
এইচ কে বিপুল স্মৃতি উচ্চবিদ্যালয়। ছবি: সংগৃহীত

নরসিংদীর জেলার মনোহরদীর এইচ কে বিপুল স্মৃতি উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে শ্রেণিকক্ষ দখল করে পরিবার নিয়ে বসবাসের অভিযোগ উঠেছে। এতে স্কুলটির শিক্ষা কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে।

স্থানীয়রা জানান, প্রধান শিক্ষকের বাড়ি স্কুল থেকে মাত্র ১০ কিলোমিটার দূরে গাজীপুর জেলার কাপাসিয়া উপজেলায়। তবুও তিনি দীর্ঘদিন শ্রেণি কক্ষ দখল করে বসবাস করে আসছেন। স্কুলের ছুটি শেষে সব শিক্ষক বাড়ি ফিরলেও তিনি ফেরেন না। সেখানে রান্না-বান্না, গোসল করেন। আর কাপড় শুকাতে দেন স্কুলের বারান্দায়।

জানা গেছে, প্রায় সাড়ে সাড়ে ৩০০ শিক্ষার্থী আছে স্কুলটিতে। পুরো ভবনে ৯টি কক্ষ আছে, যার মধ্যে ১টি অফিস কক্ষ ও ১টি বিজ্ঞানাগার, ১টি নাইট গার্ডের থাকার কক্ষ। বাকিগুলো শ্রেণিকক্ষ হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে আসছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক সপ্তম শ্রেণির এক শিক্ষার্থী বলে, 'আমাদের প্রধান শিক্ষক স্কুলেই থাকেন। প্রায়ই বারান্দা ও ছাদে স্যারের স্ত্রী ও সন্তানকে দেখা যায়। ছাদে সব সময় কাপড়-চোপড় শুকানোর জন্য টানানো থাকে।'

অভিভাবকদের অভিযোগ, প্রধান শিক্ষক আক্তার হোসেন বাসা ভাড়া না নিয়ে স্কুলকে নিজের বসতবাড়ি বানিয়েছেন। তিনি আশপাশের এলাকায় ভাড়া নিয়ে থাকতে পারেন, কিন্তু তা না করে আমাদের বিব্রত করছেন।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে প্রধান শিক্ষক মো. আক্তার হোসেন বলেন, 'স্কুল কর্তৃপক্ষের অনুমতি নিয়ে আমি সেখানে বসবাস করি। আমার এখানে থাকার বৈধতা আছে। আর ২টি রুম মূলত প্রধান শিক্ষকের জন্য বানানো হয়েছে। একটি মহল এসব বিষয়ে প্রোপাগান্ডা ছড়িয়ে স্কুলের বদনাম করে ঘোলা পানিতে মাছ শিকারের চেষ্টা করছেন।'

স্কুল ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি কাউছার আহমেদ দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'শ্রেণিকক্ষ নয়, শিক্ষকের জন্য এলাকাবাসীর দানে স্কুলের দ্বিতীয় তলার ২টি রুম দেওয়া হয়েছে। প্রধান শিক্ষক এখানে থাকায় শিক্ষার্থীদের সমস্যা সমাধানে আগের চেয়ে বেশি মনযোগী হতে পারছেন। যা আমাদের জন্য খুবই ইতিবাচক দিক।'

তিনি আরও বলেন, 'এবার ৫৯ জন শিক্ষার্থী পরীক্ষা দিয়েছে এবং সবাই পাশ করেছে। তাই, উনি স্কুলে থাকায় অন্য বেসরকারি স্কুল থেকে আমাদের এখানে শিক্ষার্থীরা এসে ভিড় জমাচ্ছেন। এ কারণে ষড়যন্ত্র করে আমাদের স্কুলের সুনাম নষ্ট করতে চাইছে কেউ কেউ।'

যদিও স্কুল ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি কাউছার আহমেদ ও স্কুলের প্রধান শিক্ষক মো. আক্তার হোসেন দাবি করেছেন, 'ভবনটির দ্বিতীয় তলায় সম্প্রসারণ করা  টি কক্ষ প্রধান শিক্ষকের আবাসিক বাসার জন্য নির্মাণ করা হয়েছে।'

তবে, ভবনের গায়ে উদ্ধোধন করা সাইন বোর্ডে বলা হয়েছে বিজ্ঞান ভবনের সম্প্রসারণ অংশ। অর্থাৎ এটি বিজ্ঞান ভবনের ল্যাবের জন্য নির্মাণ করা হয়েছে। কিন্তু, নিয়ম লঙ্গন করে প্রধান শিক্ষক তার আবাসিক বাসা হিসেবে ব্যবহার করছেন।

মনোহরদী উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. শহীদুর রহমান বলেন, 'শ্রেণিকক্ষ দখল করে কোনো শিক্ষকের বসবাস করার সুযোগ নেই। খোঁজ নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।'

Comments

The Daily Star  | English

New public service ordinance: Govt mulls softening strict provisions

Say high-level meeting sources; Secretariat employees suspend protests for today

10h ago