বিপৎসীমার ওপরে তিস্তার পানি

চর গোকুন্ডা এলাকায় তিস্তার পানিতে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। ছবি: এস দিলীপ রায়

ভারী বর্ষণ ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে তিস্তা নদীর পানি বিপৎসীমা অতিক্রম করেছে।

আজ বুধবার সকাল ৯টায় লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা উপজেলার তিস্তা ব্যারাজ পয়েন্টে পানির স্তর রেকর্ড করা হয়েছে ৫২ দশমিক ২২ মিটার, যা বিপৎসীমার ৭ সেন্টিমিটার ওপরে।

পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় লালমনিরহাট, কুড়িগ্রাম, রংপুর, গাইবান্ধা ও নীলফামারী জেলার তিস্তাপাড়ের ১৩টি উপজেলার ৩৩টি ইউনিয়নের ১৪০টি চর ও নদীতীরবর্তী গ্রাম প্লাবিত হয়েছে।

অন্যদিকে ব্রহ্মপুত্র, দুধকুমার ও ধরলা নদীর পানিও দ্রুত বাড়ছে, তবে এখনো বিপৎসীমার নিচে আছে।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) তথ্য অনুযায়ী, বুধবার সকাল ৯টায় কুড়িগ্রামের চিলমারীতে ব্রহ্মপুত্র নদের পানি রেকর্ড করা হয়েছে ২২ দশমিক ১৭ মিটার যা বিপৎসীমার ১ দশমিক ০৮ মিটার নিচে, নাগেশ্বরীর পাটেশ্বরী পয়েন্টে দুধকুমার নদের পানি ২৯ দশমিক ০৮ মিটার, যা বিপৎসীমার ৫২ সেন্টিমিটার নিচে এবং সেতু পয়েন্টে ধরলা নদীর পানি ২৬ দশমিক ১৯ মিটার, যা বিপৎসীমার ৮৬ সেন্টিমিটার নিচে।

ভারী বর্ষণ ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে তিস্তা নদীর পানি বিপৎসীমা অতিক্রম করেছে। ছবি: এস দিলীপ রায়

ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী অমিতাভ চৌধুরী জানান, তিস্তার পানি বৃদ্ধির চাপ কমাতে বুধবার সকাল থেকে ব্যারাজের ৪৪টি গেট খুলে দেওয়া হয়েছে।

উজান থেকে ঢল নামা অব্যাহত থাকায় তিস্তায় আরও পানি বাড়ার আশঙ্কা প্রকাশ করেন তিনি।

লালমনিরহাট পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী শুনীল কুমার বলেন, 'তিস্তায় পানি বৃদ্ধিতে চর ও নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। পরিস্থিতি আপাতত নিয়ন্ত্রণে আছে। তবে ভারী বর্ষণ ও ঢল অব্যাহত থাকলে দুই থেকে তিন দিনের মধ্যে পরিস্থিতি ভয়াবহ হতে পারে।'

কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী রাকিবুল হাসান জানান, গত ১২ ঘণ্টায় ব্রহ্মপুত্র, দুধকুমার ও ধরলা নদীর পানি ৪০ থেকে ৪৫ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়েছে।

তিস্তায় পানি বৃদ্ধিতে চর ও নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। ছবি: এস দিলীপ রায়

লালমনিরহাট সদর উপজেলার চর গোকুন্ডা গ্রামের মজমুল হক বলেন, 'সকালে ঘরের মধ্যে পানি ঢুকে পড়েছে। অনেকে রাস্তার ওপর আশ্রয় নিয়েছে। পানিতে তলিয়ে গেছে আমন খেত।'

রংপুরের গঙ্গাচড়া উপজেলার মহিপুর গ্রামের কৃষক সিরাজুল ইসলাম জানান, আমন খেতের বড় ক্ষতি হবে না। কিন্তু সবজি খেত ডুবে যাওয়ায় ক্ষতি হবে।

কুড়িগ্রামের উলিপুর উপজেলার চর বজরা এলাকার কামাল হোসেন বলেন, 'ভোরে বেশিরভাগ বাড়িতে পানি ঢুকে পড়েছে। বৃষ্টিতে কষ্ট বেড়েছে। গবাদিপশু নিয়ে আমরা বিপাকে আছি।'

কুড়িগ্রাম জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা আব্দুল মতিন বলেন, 'বন্যা মোকাবিলায় আমাদের প্রস্তুতি আছে। তবে আমাদের পর্যাপ্ত ত্রাণ মজুত আছে।'

Comments

The Daily Star  | English
Local gold price hiked

Gold hits all-time high

From tomorrow, each bhori of 22-carat gold will cost Tk 181,487

1h ago